বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ: এক ম্যাচে ৬ রেকর্ড ঢাকার ১১ স্থানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেফতার ১৩১ ৯ বলের সুপার ওভার, পাঁচ বলে ৫ রান করতে পারেনি বাংলাদেশ চিকিৎসক হয়েও সুরের ভুবনে ঝংকার তুলছেন রানা প্রশাসনে রদবদল নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি তাঁবেদার থেকে দেশ রক্ষার সুযোগ তৈরি হয়েছে: রেজাউল করিম দৌলতপুরে ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে দেহ ব্যবসা : আটক-২ অবিশ্বাস্য থ্রোতে ভাঙল ৪৪ রানের জুটি, বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরালেন মিরাজ ফুলের মতো পবিত্র মানুষগুলোই আপনাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে”–কুড়িগ্রামে পথসভায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ কিম বাহিনীর সঙ্গে উত্তেজনা, প্রতিরক্ষা জোরদারের ঘোষণা দক্ষিণ কোরিয়ার

অন্তর্বর্তী সরকারও কি ১/১১ সরকারের পথে হাঁটছেন?

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : বিগত ২০০৭ সালে এক অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সেনাসমর্থিত এক-এগারো সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। ওই সরকারের প্রধান কাজ ছিল দ্রুততম সময়ের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর এক-এগারো সরকার সুশীল এজেন্ডা বাস্তবায়নে মনোযোগী হয়। মাইনাস টু ফর্মুলার মাধ্যমে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া শুরু করে। ব্যবসায়ী, শিল্পপতিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অধিকারহরণের উন্মত্ততায় মেতে ওঠে। ‘কিংস পার্টি’ গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করে; যার ফলে সাধারণ মানুষ সে সময় এক-এগারো সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। সে সময় জণগণ ‘মাইনাস ফর্মুলা’ শেষ পর্যন্ত জনগণ প্রত্যাখ্যান করে।

সম্প্রতি অন্তর্বতীকালীন সরকারের উপরও দিন দিন চাপ বাড়ছে নির্বাচন আয়োজনের। দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ইতিমধ্যেই নির্বাচনের দাবিতে তাদের চাপ বৃদ্ধি করছে সরকারের উপর। এমন পরিস্থিতিতে ধীরে ধীরে দেশের অন্যন্যা রাজনৈতিক দলগুলোও এই দাবির পক্ষে সুর দিতে শুরু করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে ১/১১ সরকারের মতো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও কি সংস্কার ছাড়াই বিদায় নিতে হবে?

দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের প্রধান লক্ষ্য ছিল বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা। জনগণের নির্বাচিত সরকারে ক্ষমতা হস্তান্তর। গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করেছিল। ২০১৪ সালে বিনা ভোটে নির্বাচন, ২০১৮ সালে ‘রাতের ভোট’, আর ২০২৪ সালে ‘ডামি নির্বাচনের’ মাধ্যমে নির্বাচনব্যবস্থা তামাশায় পরিণত করা হয়েছিল। যে তরুণ প্রজন্ম জুলাই বিপ্লবে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল, তারা বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনই দেখেনি, ভোট দিতে পারেনি। সেই ভোট দেওয়ার অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই ছিল জুলাই বিপ্লবের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই যেন এই সরকার লক্ষ্যচ্যুত হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আর এক্ষেত্রে নির্বাচন যত পেছাবে গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ততই দুরূহ হয়ে যাবে বলেও জানান তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকার ঘনিষ্ঠ এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা জানান, এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, বর্তমান সরকার গঠিত হয়েছে সব রাজনৈতিক দলের বিপুল সমর্থনে। রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতার চাবি তুলে দিয়েছে এ প্রত্যাশা থেকে যে, তারা নির্মোহভাবে, পক্ষপাতহীন প্রক্রিয়ায় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রায় অবজ্ঞা করছে। অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে পাশ কাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যেমন ধরা যাক অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে উপদেষ্টাম লীর সদস্যদের নিয়োগ করছে, সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ন্যূনতম পরামর্শ করা হয়নি। উপদেষ্টামন্ডলীতে বিতর্কিত সদস্যদের নেওয়া হয়েছে। জন আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধ ব্যক্তিদের উপদেষ্টাম লীতে অন্তর্ভুক্ত করে গণঅভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।

এছাড়া তিনি আরও দাবি করেন, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করতে তো পারছেই না, বরং জীবনযাত্রা ক্রমে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এক-এগারোর সময় সুশীলদের ইচ্ছাপূরণের বলি হয়েছিল জনগণ। জিনিসপত্র চলে গিয়েছিল মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছিল। এখন সে রকমই অস্থির পরিস্থিতির মুখোমুখি দেশ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইত্যাদি নিয়ে মানুষ ক্রমে সরকারের ওপর আস্থা হারাচ্ছে। ২০০৭ সালের এক-এগারোর সরকারের একটা বড় বৈশিষ্ট্য ছিল উন্নয়নবিরোধী তৎপরতা। তথাকথিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে অর্থনীতি ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছিল সুশীল সরকার। বেসরকারি খাতের মেরুদ ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে হয়রানি করা শুরু হয়েছিল সে সময়। শিল্পোদ্যোক্তাদের গ্রেপ্তার, হয়রানির মাধ্যমে গলা টিপে ধরা হয়েছিল দেশের অর্থনীতির। এখন সেই পুরনো খেলাই যেন নতুন করে শুরু হয়েছে। আবারও দেখা যাচ্ছে সেই অর্থনীতিবিনাশী তৎপরতা।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতি দমনের নামে বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে রীতিমতো অভিযানে নেমেছে। বিভিন্ন শিল্প পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়িক গ্রুপের বিরুদ্ধে তদন্তের নামে হয়রানি শুরু হয়েছে। এটা কোনোভাবেই অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হতে পারে না। এ ধরনের উন্নয়নবিরোধী তৎপরতার ফলে ব্যবসাবাণিজ্যে নেমে এসেছে ভয়াবহ স্থবিরতা। এ স্থবিরতা যদি অবিলম্বে দূর না করা যায় তাহলে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। ইতোমধ্যে অর্থনীতিতে ছন্দপতন ঘটেছে। এটাও ২০০৭ সালের এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি। ওই সময় সুশীলদের পরামর্শে ব্যবসায়ীদের ওপর এভাবেই চাপ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তার ফল শুভ হয়নি।

এমতাবস্থায় এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে মূলত জনগণের নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারই একমাত্র ভরসা বলে মনে করছেন তিনি বলেও জানান।

কিউএনবি/অনিমা/২২ ডিসেম্বর ২০২৪,/রাত ৯:৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit