ডেস্ক নিউজ : বিবি সাফুরা। হজরত শুয়াইব (আ.)-এর বড় মেয়ে। হজরত মুসা (আ.)-এর স্ত্রী। শুয়াইব (আ.)-এর বসবাস ছিল সৌদি আরবের মাদায়িনে। আর হজরত মুসা (আ.)-এর জন্ম বেড়ে ওঠা এবং বসবাস ছিল মিসরে।
একবার মুসা (আ.) ফেরাউনের সম্প্রদায়ের এক লোককে শাসনসুলভ থাপ্পড় মেরে বসে; সে থাপ্পড়ে লোকটি মারা যায়। আর এ খবর ফেরাউনের কাছে পৌঁছলে সে মুসা (আ.) কে হত্যা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ফলে মুসা (আ.) মিশর থেকে আত্মগোপন করে সৌদি আরবের মাদায়িনে চলে আসেন।
বকরি চরানোহজরত মুসা (আ.) যখন মাদায়িনের উপকণ্ঠে এসে পৌঁছেন। সেখানে দেখেন অনেক রাখাল কূপ থেকে পানি তুলে তাদের বকরির পালকে পানি খাওয়াচ্ছে। আর কূপ থেকে একটু দূরে কতগুলো বকরি-ছাগলের পাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দুজন মেয়ে। তিনি মেয়ে দুটির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা মেয়ে মানুষ হওয়া সত্ত্বেও কেন বকরি চরাতে এসেছো আর দূরেই বা দাঁড়িয়ে আছো কেন?
উত্তর দিলো, আমাদের বাড়িতে কাজ করার মতো কোনো পুরুষ মানুষ নেই। তাই বকির চরাতে আমাদেরকেই আসতে হয়। আর পুরুষ রাখালরা বকরিকে পানি পান করিয়ে চলে গেলে আমরা আমাদের ছাগল-বকরিগুলোকে পানি পান করিয়ে বাড়ি যাব।
তাদের কথা শুনে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের হৃদয়ে সহানুভূতি জাগল। তিনি ভিড় ঠেলে কূপের কাছে গিয়ে পানি উঠিয়ে তাদের ছাগল-বকরিগুলোকে পানি পান করালেন। অতঃপর মেয়ে দুটি বাড়িয়ে তাদের শ্রদ্ধেয় পিতা, বিশিষ্ট নবি হজরত শুআইব আলাইহিস সালামের কাছে পুরো ঘটনাটি বর্ণনা করলেন।
মুসা (আ.) কে ডেকে পাঠান
হজরত শুআইব (আ.) মেয়েদের কাছে ঘটনা শুনে তাদের উভয়কে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের কাছে পাঠালেন। তারা মুসা আলাইহিস সালামের কাছে এসে সলজ্জকণ্ঠে জানালেন, আমাদের পিতা হজরত শুআইব আলাইহিস সালাম আপনাকে আমাদের বাড়ি যেতে বলেছেন।
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম সঙ্গে সঙ্গে রওয়ানা হলেন এবং হজরত শুআইব আলাইহিস সালামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। মুসা আলাইহিস সালাম তাঁর ঘটনা তাঁকে শুনালেন। হজরত শুআইন আলাইহিস সালাম তাকে সান্ত্বনা দিলেন।
বিয়ের প্রস্তাবহজতর শুয়াইব (আ.) বললেন, ‘আমার ইচ্ছা আমার একটি মেয়ে তোমার কাছে বিবাহ দেব। তবে শর্ত হলো ৮ বছর মতান্তরে ১০ বছর আমার ছাগল-বকরি চড়াতে হবে। হজরত মুসা আলাইহিস সালাম এ শর্তে রাজি হয়ে গেলেন।
৮ বছর মতান্তরে ১০ বছর অতিক্রম হওয়ার পর বড় মেয়ের সঙ্গে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের বিয়ে হয়ে গেল। এ বড় মেয়ের নামই হলো হজরত সাফুরা। যিনি মুসা আলাইহিস সালামের আগমনের আগে পিতার সংসারে ছোট বোনকে নিয়ে জীবিকার তাগিদে নিজেরাই নিজেদের বকরিগুলো লালন-পালনের মতো কষ্টকর কাজগুলো করেছিলেন।
বিয়ের পরও হজরত মুসা আলাইহিস সালাম কিছু দিন সেখানে ছিলেন। কিছুদিন পর মুসা আলাইহিস সালাম স্ত্রী বিবি সাফুরাকে নিয়ে আবার মিশর রওয়ানা হলেন। মিসরে রহওয়ার হওয়ার পথেই আল্লাহ তাআলা তাঁকে নবুয়ত ও রেসালাত দান করেন।
কিউএনবি/আয়শা/১২ ডিসেম্বর ২০২৪,/রাত ১০:২৫