বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর প্রকাশ খালেদা জিয়া : একজন মহীয়সীর মহাপ্রয়াণ সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বামীর ‘বীর প্রতীক’ খেতাব বাতিল নওগাঁ ছয়টি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ মোট ৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল  নিস্তব্ধ এভারকেয়ার, অশ্রুসিক্ত চোখে ‘আপসহীন’ নেত্রীর জন্য প্রার্থনা আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল ইয়েমেনের রাঙামাটিতে ৬৫০ লিটার চোলাই মদভর্তি গাড়িসহ আটক-১ ঋণের আশ্বাসে ধর্ষণ,ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল! রাঙামাটিতে ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা নেত্রকোণায় নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ সভা অনুষ্ঠিত চৌগাছায় রাগীব আহসান নিহাল আইডিয়াল স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ

তিনি ছিলেন মানবজাতির আলোকবর্তিকা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৬১ Time View

ডেস্ক নিউজ : মানবজাতির আলোকবর্তিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন রসুল (সা.)। ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার পর মক্কার পৌত্তলিক কুরাইশদের দ্বারা নিগৃহীত হন তিনি। মুসলমানদের ওপর তাদের অব্যাহত নির্যাতন-নিপীড়নের পরিণতিতে তিনি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে বাধ্য হন। হিজরির দ্বিতীয় বর্ষে বদর যুদ্ধে মুসলমানরা জয়ী হয়। ছয় বছর পর অষ্টম হিজরিতে মুসলমানরা মক্কা জয় করে। অষ্টম হিজরির ২০ রমজান রসুল (সা.) তাঁর বাহিনী নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করেন। মক্কার মুশরিকরা পরাজয় মেনে নেয়।

কুরাইশরা আশঙ্কায় ছিল রসুল (সা.) মুসলমানদের ওপর মুশরিকদের নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন। কিন্তু তিনি পরাজিতদের সঙ্গে যে উদার আচরণ করেন তা ইতিহাসে বিরল। তিনি উপস্থিত সবার উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘হে কুরাইশ! তোমাদের কি ধারণা আমি তোমাদের সঙ্গে কীরূপ আচরণ করব?’ সবাই বলে ওঠে, ‘উত্তম, আপনি স্বয়ং করিম, দয়ালু করিমের বংশধর। তাই আপনার কাছে আমরা উত্তমই প্রত্যাশা করি।’ হুজুর (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের কাছে সে কথাই বলতে চাই, যা হজরত ইউসুফ (আ.) তাঁর ভাইদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘লা তাসরিবা আলাইকুমুল ইয়াওমা’ অর্থাৎ আজ তোমাদের প্রতি কোনোই অভিযোগ নেই, যাও তোমরা মুক্ত।’

একবার জায়েদ নামের এক ইহুদি যাজক রসুল (সা.)-এর সঙ্গে একটি অগ্রিম কেনাবেচা করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দুই-তিন দিন আগে এসে তিনি পণ্য পরিশোধের দাবি করে বসেন। এমনকি চরম বেয়াদবি করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওমর (রা.)। নবী (সা.)-এর সঙ্গে লোকটির এই অশিষ্ট আচরণ দেখে তিনি ক্রোধান্বিত হয়ে তাকে ধমক দেন। কিন্তু রসুল (সা.)-এর মুখে ছিল হাসি। তিনি ওমর (রা.)-কে বলেন, ‘ওমর! আমি এবং এই ব্যক্তি তোমার থেকে ভিন্ন আচরণের হকদার ছিলাম। দরকার তো ছিল তুমি আমাকে সত্বর তার প্রাপ্য আদায় করার পরামর্শ আর তাকে কথায় ও আচরণে নম্রতা অবলম্বনের তাগিদ দেবে।’ এরপর তিনি ওমর (রা.)-কে প্রাপ্য পরিশোধের নির্দেশ দেন এবং তাকে আরও বেশি অর্থ দিতে বলেন, যা ছিল ওমর (রা.) কর্তৃক লোকটিকে ধমক দেওয়ার বদলা। মহানবী (সা.)-এর এ মহানুভবতা লোকটির ইসলাম গ্রহণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাওয়ার পথে তিনি ওমর (রা.)-কে বলেন, ‘হে ওমর! আমি হচ্ছি ইহুদি-পণ্ডিত জায়েদ ইবনে সানা। আসলে লেনদেন আমার উদ্দেশ্য ছিল না, বরং মহানবীর ক্ষমা ও সহিষ্ণুতা পরীক্ষা করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। কারণ শেষ নবীর অন্যতম গুণ হবে এই যে তাঁর ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা ক্রোধের ওপর প্রবল থাকবে, যতই রূঢ় আচরণ করা হবে তাঁর ক্ষমা ততই বৃদ্ধি পাবে। অতএব ওমর! আমি যা চেয়েছি তা পেয়ে গেছি।’ এরপর তিনি রসুল (সা.)-এর হাতে হাত রেখে ইমান আনেন এবং তার অঢেল সম্পদের অর্ধেক উম্মতের জন্য দান করে দেন। মুসনাদে আহমদ।

ষষ্ঠ হিজরিতে সিনাইয়ের সেন্ট ক্যাথরিন মনাস্ট্রি থেকে একটি প্রতিনিধিদল রসুল (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যেকোনো ধরনের আক্রমণ থেকে তাঁর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। তিনি তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাদের অধিকার সংরক্ষণে একটি অঙ্গীকারনামা প্রদান করেন। এ অঙ্গীকারপত্রটি বর্তমানে সিনাই পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন খ্রিস্টান মঠ সেন্ট ক্যাথরিন মনাস্ট্রিতে সংরক্ষিত আছে।

মুহাম্মদ (সা.)-এর আদেশে হজরত আলী (রা.) কর্তৃক লিপিবদ্ধ এবং মহানবী (সা.)-এর হাতের ছাপ দ্বারা সিলমোহরকৃত এ অঙ্গীকারনামা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের যার যার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা, কর্মের স্বাধীনতা এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মূল্যবান দলিল। অঙ্গীকারনামায় বলা হয়-

‘সেন্ট ক্যাথরিনের প্রতি প্রতিশ্রুতি : এটি মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহর কাছ থেকে একটি বার্তা।…

খ্রিস্টানদের প্রতি কোনো ধরনের জোরজবরদস্তি করা যাবে না। তাদের কোনো বিচারককে চাকরি থেকে অপসারণ করা যাবে না, কোনো সন্ন্যাসীকে তার মঠ থেকে সরানো যাবে না। শুধু তাদের ধর্মের কারণে ঘরবাড়ি ধ্বংস কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না অথবা সেখান থেকে কোনো জিনিস কোনো মুসলমানের ঘরে নেওয়া যাবে না। যদি কেউ কোনো কিছু নেয় সে যেন আল্লাহর চুক্তির বরখেলাপ করল এবং তার রসুলকে অমান্য করল। নিশ্চয়ই তারা আমার মিত্র এবং তারা যা ঘৃণা করে তার বিরুদ্ধে আমার নিশ্চিত চুক্তি রইল। কেউ তাদের কোথাও যেতে বা যুদ্ধে যোগদান করতে বাধ্য করবে না। মুসলমানরা তাদের জন্য লড়াই করবে। কোনো খ্রিস্টান নারীর সম্মতি ছাড়া কোনো মুসলমান পুরুষ তাকে বিয়ে করতে পারবে না। প্রার্থনার জন্য গির্জায় যাওয়া থেকে তাকে বাধা দেওয়া যাবে না। তাদের গির্জার সম্মান রক্ষা করতে হবে। এটি মেরামত করতে কিংবা চুক্তির পবিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখা থেকে তাদের বাধা দেওয়া যাবে না। এ জাতির (মুসলিম) কেউ কেয়ামত পর্যন্ত এ চুক্তির অবাধ্য হবে না।’

লেখক : ইসলামিক গবেষক  

কিউএনবি /অনিমা/ ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫,/দুপুর ১:২৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit