মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০১ অপরাহ্ন

হামাস ইসরাইল দ্বন্দ্ব নিরসনে কাতার কি ব্যর্থ?

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৫০ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাতার সরকার ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতা করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করলেও তারা সেই প্রচেষ্টা স্থগিত করেছে, কারণ কোনোপক্ষই আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি। কাতারে হামাসের কার্যালয় বন্ধ করার জন্য দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখেও আছে বলে জানা গেছে। 

ছোট এবং ধনী রাষ্ট্রটি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিপ্রণেতা হিসেবে নিজেদের একটি পরিচয় তৈরি করলেও বর্তমানে ইসরাইল-হামাস সংঘাতের মধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মধ্যস্থতা করা তাদের জন্যই কঠিন হয়ে পড়েছে। খবর বিবিসির

কাতার দীর্ঘ সময় ধরে আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষকের ভূমিকা পালন করে আসছে। গত দুই দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং আফ্রিকায় যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতা করেছে দেশটি।

২০২৩ সালের নভেম্বরে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে আলোচনার আয়োজন করেছিল কাতার, যার মাধ্যমে ইসরাইলে বন্দি ২৪০ জন ফিলিস্তিনিকে এবং ফিলিস্তিনে বন্দি ১০৫ জন ইসরাইলি জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

এ ছাড়াও ২০২০ সালে আফগানিস্তানে দুই দশকের দীর্ঘ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে তালেবান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তির মধ্যস্থতা করেছিল কাতার। যার প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা আফগানিস্তান থেকে নিজ নিজ বাহিনী প্রত্যাহার করে নেয় এবং তালেবান পুনরায় দেশটির কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তিতেও কাতার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছিল।

একই বছর, চলমান সংঘাতের মধ্যে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া ইউক্রেনীয় শিশুদের ফিরিয়ে আনার জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছিল।

২০২০ সালে মধ্য আফ্রিকার দেশ শাদ-এ সরকার এবং ৪০টি বিরোধী দলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছিল কাতার এবং ২০১০ সালে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ দারফুরে সুদানের সরকার এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যেও তারা একটি শান্তি চুক্তির তত্ত্বাবধান করেছিল।

কাতার শান্তিরক্ষকের ভূমিকা পালন করবে এই বিষয়টি দেশটির সরকার তাদের সংবিধানে পর্যন্ত লিখে রেখেছে। দেশটির সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, দেশের পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তি হলো আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা জোরদার করা।

কাতার যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র তা নয়, দেশটি তালেবান এবং হামাসকেও গোষ্ঠীগুলোকেও তাদের দেশে কার্যালয় স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে।

যেখানে কি না আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার সামরিক সদস্যকে আতিথ্য করছে তারা।

যার কারণে দুটি রাজনৈতিক পক্ষ- যারা একে অপরের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চায় না তাদের মধ্যে একটি সেতু হিসেবে কাজ করতে সক্ষম হয়েছে দেশটি।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক, রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের সদস্য এইচ.এ হেলিয়ার তাই মনে করেন। 

তিনি বলেন, তালেবান এবং হামাসের মতো গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে কাতার বেশ ভালো অবস্থানে আছে, কারণ তারা কখনও তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়নি।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিষয়ক থিংক ট্যাঙ্ক, চ্যাথাম হাউসের ড. সানাম ভাকিল বলেছেন, কাতার এমন একটি ভাবমূর্তি তৈরি করেছে যে তাদেরকে সবাই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দেখে যারা সমস্যার সমাধান করে থাকে।

কাতারের কূটনীতিকদের একটি দল রয়েছে যারা শান্তি আলোচনা তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে উচ্চ প্রশিক্ষিত, তবে তারা যে সবসময় যুদ্ধরত পক্ষের মধ্যে শান্তি চুক্তি করতে বা স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে, সেটা বলা যাবে না।

ড. ভাকিল বলেন, যখন কোনো সংঘাতের সমাপ্তি ঘনিয়ে আসে সহিংসতার চক্র ভাঙতে থাকে এবং দুই পক্ষ শান্তি প্রত্যাশা করে ওই পরিস্থিতি কাতারিরা খুব ভালোভাবে তত্ত্বাবধান করতে পারে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে তারা ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে শান্তি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করার প্রচেষ্টা স্থগিত করছে। তবে, তারা দোহায় হামাসের কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার খবরকে উড়িয়ে দিয়েছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৫ নভেম্বর ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:২৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit