বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন

গত অর্থবছরে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছিল ৮.৮ শতাংশ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : নানা কারণে দেশে কমেছে বিদেশি বিনিয়োগ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় পরের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে এই বিষয়টি উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১.৬১ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নেট এফডিআই প্রবাহ ১.৪৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে এফডিআই প্রবাহ ১৪২ মিলিয়ন ডলার কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি এসেছে বস্ত্র খাতে। পরের অবস্থানে ছিল ব্যাংকিং, ওষুধ ও জ্বালানি খাত।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরেই অর্থনীতিতে নানা রকমের সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তাতে অনেকগুলো কারণেই কমেছে বিদেশি বিনিয়োগ।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী নাসের এজাজ বিজয় এফডিআই কমার জন্য তিনটি প্রধান কারণকে দায়ী করেছেন।

এজাজ বলেন, প্রথমত, নির্বাচনী বছরের প্রভাব। নির্বাচনী বছরগুলোতে সাধারণত এফডিআই প্রবাহে ধীরগতি দেখা দেয়। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে এ প্রবণতা বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা। ডলার সংকট কিছুটা কমলেও মুদ্রার অবমূল্যায়নসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা ‘অপেক্ষা করে দেখি’ কৌশল অনুসরণ করছেন।”

তিনি আরও বলেন, “সর্বশেষ, দেশের ক্রেডিট রেটিং কমে আসা। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ক্রেডিট রেটিংয়ে অবনতি বাংলাদেশের বিনিয়োগ আকাঙ্ক্ষাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। কারণ এর ফলে বিনিয়োগের ঝুঁকি আছে, এমন মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে গেছে।”

অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, সাম্প্রতিক ক্রেডিট রেটিং কমে আসার ফলে বাংলাদেশের এফডিআই আরও কমতে পারে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের রেটিং স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক পর্যায়ে নামিয়ে আনে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের দুর্বল তারল্য এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংশ্লিষ্ট নীতিগত ঝুঁকি।

চলতি বছর বাংলাদেশের ঋণমান সূচক কমিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা ফিচ। রেটিং নেতিবাচক করার কারণ হিসেবে বলা হয়, রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং ডলারের সরবরাহ সংকট বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ পরিশোধের মত বাহ্যিক বিষয়গুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক রেটিং এজেন্সি মুডিস, এসঅ্যান্ডপি (স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস) ঋণমানের অবনমন করেছে।

চলতি বছর জুলাইতে বাংলাদেশের সার্বভৌম ক্রেডিট রেটিং বা ঋণমান সূচক অবনমন করে ‘বি প্লাস’ করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল।

সংস্থাটি ঋণমান কমার প্রধান কারণ হিসেবে বলছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক অর্থায়নের চাহিদার চাইতে জোগান কম। বৈদেশিক লেনদেন স্থিতিশীল নয়। অর্থাৎ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার জোগানের যা চাহিদা তা রেমিটেন্স ও রপ্তানির মাধ্যমে যা আয় হয় তার চাইতে অনেক বেশি। এতে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। এটি চাপ তৈরি করেছে অর্থনীতিতে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি সামির সাত্তার মনে করেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী যেমন কম বিনিয়োগ করছেন ঠিক সেইভাবে দেশের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরাও সতর্কতা অবলম্বন করছেন।

“সব কিছুরই খরচ বেড়েছে। আবার এই বিনিয়োগ পরিশোধ করতে হয় ডলারে। ডলার দর বাড়লে সেটা ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েন।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ডলারের দাম ছিল ১০৮ টাকা ৪০ পয়সা, বর্তমান দর ১২১ টাকা। এক বছরে দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।

কিউএনবি/অনিমা/৩০ অক্টোবর ২০২৪,/রাত ১০:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit