এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার পুড়াপাড়া বাজার। এ বাজারটি যশোরের চৌগাছা ও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত মহনায় অবস্থিত। এ বাজারটি দুটি জেলার ব্যাপক গুরুত্বপূর্ন এলাকায় অবস্থিত।এই বাজার থেকে প্রতি বছর সরকার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকেন। অথচ এই বাজারের রাস্তা গুলো খানাখন্দে ভরে গেছে, অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলোতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। রাস্তায় জমা হয় হাঁটু পানি। পিচের রাস্তার উপরে ব্যাপক কাঁদা হয়।সড়কে বৃষ্টির পানি জমায় দেখলে মনে হয় বাজারের বুক চিরে একে বেঁকে নদী বয়ে চলেছে।এ বাজারে ব্যবসা করেন কয়েক হাজার ব্যবসায়ী। পুড়াপাড়া বাজারসহ এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় রয়েছে প্রায় ৭৪-৭৫ টি চাতাল ও রাইচমিল, ২টি অটো রাইচ মিল, বিদ্যুতের সাব-পাওয়ার স্টেশন। এ বাজারটি চৌগাছা উপজেলা সদর থেকে ৯ কি.মি. এবং মহেশপুর উপজেলা সদর থেকে ১৩ কি.মি. দূরে অবস্থিত ।
এখানে দৈনিক প্রায় লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। বাজারে পাশে রয়েছে ডাঃ সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি (কাটগড়া) কলেজ, কাটগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শ্যামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাটগড়া সরকারি কুঠি প্রাথমিক বিদ্যালয়,মান্দারবাড়িয়া দাখিল মাদরাসা, শ্যামনগর কওমি মাদরাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায়ী প্রধান বাজার হওয়ায় এ বাজারে সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখা, গ্রামীন ব্যাংকসহ মোট ৮ টি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। মৎস প্রকল্পের কাটগড়া সরকারিবাওড় অফিস, বেশ কয়েকটি এনজিও এবং বেসরকারী সংস্থার অফিস। বাজারটির চারপাশে রয়েছে ৪ টি বিজিবি ক্যা¤প। এ বিজিবি ক্যা¤প গুলোতে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। দেখেলে মনে হয় বাজারটি অভিভাবকহীন। চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া, নারায়নপুর ও স্বরুপদাহ ইউনিয়ন এবং মহেশপুর উপজেলা মান্দারবাড়িয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন বাজারটিতে কেনাবেচা করে থাকেন। এ বাজার থেকে ইজারা বাবদ সরকার প্রতি বছর কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকেন। কিন্তু এখানে উন্নয়নে কোনো কাজ করছে না সরকার। সামান্য বৃষ্টিতেই বাজাটির মেইন সড়কসহ বিভিন্ন অংশে হাঁটু পানি জমে থাকে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সরেজমিনে গেলে কথা হয়, পথচারী ভ্যান চালক আলমগীর হোসেন বলেন, বাজারের গ্রামীন টাওয়ারের পাশে ঘর নির্মান করে বকচর উচু করেছে, ফলে রাস্তায় পানি জমে থাকে। চৌগাছার সাথে য়োগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। ওপর দিকে মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর যাবার রোডে মংস্য অফিসের সামনে পানি জমে এই রোডটি ও বন্ধের পথে। এখানে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন বাজারে চলাচলকারী স্কুল-কলেজে, মাদরাসাগামী শিক্ষার্থী ও ক্রেতা বিক্রেতাদের ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়। বাজারে আসলেই জামা-কাপড়ে কাঁদা-পানি মেখে বাড়ীতে ফিরতে হয়। পুড়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়িরা জানান, বাজারটির পাশঘেষেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহি সরকারি কাটগড়া বাওড়। বাজার থেকে একটি র্ড্রেন বাওড়ে নামিয়ে দিলেই বাজারে জলাবদ্ধতা সমস্যার প্রাই সমাধান হয়। তারা বলেন, বাজারটি চৌগাছা ও মহেশপুর উপজেলার মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে।
ডাঃ সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি (কাটগড়া) কলেজের অধ্যক্ষ বলাই চন্দ্র পাল বলেন, এইবাজারের রাস্তা গুলো খানাখন্দে ভরে গেছে, বৃষ্টি হলেই রাস্তাগুলোতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। রাস্তায় জমে হাঁটু পানি। রাস্তার উপরে ব্যাপক কাঁদা হয়। সড়কে বৃষ্টির পানি জমায় দেখলে মনে হয় বাজারের বুক চিরে একে বেঁকে নদী বয়ে চলেছে।কাটগড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তবিবর রহমান বলেন, এ বাজারে চলাচলকারী স্কুল-কলেজে, মাদরাসাগামী শিক্ষার্থী ও ক্রেতা বিক্রেতাদের ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়। বাজারে আসলেই জামা-কাপড়ে কাঁদা-পানি মেখে বাড়ীতে ফিরতে হয়।মান্দারবাড়িয়া ইউপি সদস্য মাওলানা আব্দুল কাদের জানান, বাজারটির সিংহভাগ অংশ মান্দরবাড়ীয়া ইউনিয়নের মধ্যে।
ইতিমধ্যে আমরা এই অংশের সড়কগুলোর মধ্যে আল্লারদান সাইকেল ষ্টোর থেকে মাছের হাট পর্যন্ত পিচ করেছি। বাকী রাস্তা গুলো ভেঙ্গে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যায়। তখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এজন্য সড়ক গুলো সংস্কার খুব জরুরী। পুড়াপাড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও মান্দারবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান, আমরা বাজারের সড়ক উন্নয়নে বেশ কিছু কাজ করেছি আরও কাজ করা হবে।
কিউএনবি/অনিমা/২৫ অক্টোবর ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:০৩