ডেস্ক নিউজ : পরনে সাদা কাপড়। ঘরে বসে কাঁদছেন এক নারী। ঘরের দরজায় বসে তিন সন্তান। বাড়িতে সবাই আছেন শুধু নেই কামাল। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার জোলাই কুড়িয়াপাড়া গ্রামের ইদু মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন। গত সোমবার (৭ অক্টোবর) ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন তিনি। এরপর লাশ নিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। একমাত্র আয়ের উৎস কামালের মৃত্যু ভেঙে দিয়েছে একটি পরিবারের সব স্বপ্ন।
গুলিতে নিহত কামালের মরদের ২৭ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার রাতে ফেরত দেয় বিএসএফ।
অপরাধ করলে আইন আছে, গুলি করে মারা হবে কেন? প্রশ্ন তুলে কামালের স্ত্রী জোহরা বেগম বলেন, আমার স্বামী ঘরেই ছিলেন। তাকে লাদেন কামাল নামের একজন ডেকে নিয়ে যান। কিন্তু আমার স্বামী বলেছিল, ‘আমি অসুস্থ যেতে পারবো না।’ এখন আমার সন্তানরা এতিম হলো। আমি বিধবা হলাম। যদি আমার স্বামী অপরাধী হয় তাহলে আইন আছে। গুলি করে মারতে হবে কেন? তাকে গ্রেফতার করতো। বা পুলিশের হাতে তুলে দিতো। এক যুগ পরে হলেও সন্তানরা তার বাবাকে পেত। আমি স্বামী হারা হতাম না। কিন্তু তারা আমার স্বামীকে মেরেই ফেললো। আমি এর বিচার চাই।
কামালের মেয়ে কামরুন নাহার জাহান শান্তা বলেন, বাবা বিভিন্ন স্থানে পিঁপড়ার বাসা ভেঙে ডিম বিক্রি করতেন। আমার বাবাকে জোর করে সীমান্তে নেয়া হয়েছে। বাকি দুজন ফিরলেও আমার বাবা কেন ফিরলো না। আমাদের বাড়ি থেকে সীমান্ত আড়াই কিলোমিটার দূরে। কিন্তু পাহাড়পুর সীমান্ত ৫ কিলোমিটার। আমার বাবার যদি ইচ্ছাই থাকতো তাহলে তিনি আমাদের বাড়ির পাশে দিয়ে যেতেন। এতদূরে কেন গেলেন। আমার বাবা অন্যায় করলে দেশে আইন আছে। কোন কিছু না মেনে গুলি করে দিবে? মেরে ফেলবে একটা মানুষকে? এটা কেমন বিচার? আমরা এর বিচার চাই।
১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ইফতেখার হোসেন বলেন, লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
কিউএনবি/অনিমা/১০ অক্টোবর ২০২৪,/সকাল ১১:৩৪