বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন

ভারতে দালাই লামার পথেই শেখ হাসিনা

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। নিয়ম  অনুযায়ী শেখ হাসিনা ভারতে বৈধভাবে ৪৫ দিন আশ্রয়ে থাকতে পারবেন। তবে সেই ৪৫ দিন শেষ হচ্ছে আজ শুক্রবার। এরপর তিনি সেখানে কী হিসেবে অবস্থান করবেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কূটনৈতিক পাসপোর্টের আওতায় ভারতে ৪৫ দিন অবস্থান করতে পারবেন। অবশ্য তার সেই পাসপোর্ট ইতোমধ্যেই বাতিলও করা হয়েছে। এখন শেখ হাসিনার সামনে তিনটি পথ খোলা রয়েছে।  

প্রথমত-তিনি ভারতে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় পেতে পারেন।
দ্বিতীয়ত-বিশেষ রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে পারেন।
তৃতীয়ত-তিনি তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয় পেতে পারেন।

সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুসম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যেই ভারতের সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।  সে কারণে ভারত শেখ হাসিনাকে বিশেষ বিবেচনায় রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে পারে। আর সেটা হবে তিব্বতের ধর্মগুরু দালাই লামার মতোই।

তিব্বতে বৌদ্ধদের আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু ১৯৫৯ সাল থেকে ভারতে আশ্রয়ে রয়েছেন। ভারতের ইতিহাসে কোনো বিদেশি ধর্মীয় নেতাকে বিশেষ রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার ঘটনা ছিল সেটিই প্রথম। তারপর থেকে ৬৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতেই আশ্রয়ে রয়েছেন দালাই লামা। এবার প্রতিবেশী দেশ হিসেবে শেখ হাসিনাও ভারতে দালাই লামার মতোই আশ্রয় পেতে যাচ্ছেন।

ভারতের প্রতিবেশী দেশের রাজনীতিবিদদের আশ্রয় দেওয়ার অতীত ইতিহাসও রয়েছে। শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালের পর ভারতেই আশ্রয়ে ছিলেন। সে সময় দীর্ঘ ছয় বছর তিনি সেখানে থেকেছেন। ১৯৯২ সালে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাজিবুল্লাহর পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। তবে সে সময় নাজিবুল্লাহ দিল্লিতে আসতে ব্যর্থ হন। পরে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। ২০১৩ সালে মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় ভারত।  

এছাড়াও ১৯৫০ সালে নেপালের মহারাজা ত্রিভুবন বীর বিক্রম শাহকেও আশ্রয় দিয়েছিল দেশটি। ভারতে শেখ হাসিনা কী স্ট্যাটাসে অবস্থান করছেন, সেটা এখনো অজানা। এ বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। অবশ্য এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে কিনা সে বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগও রয়েছে। আমরা কূটনৈতিক চ্যানেলেই  সম্পর্কটা  রাখতে চাই।  

শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের ৪৫ দিন পূর্ণ হতে চলেছে। তাকে ফেরত আনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, সব কিছুই আইন দিয়ে চলে না। ভারত সরকার তাকে আশ্রয় দিয়েছে, তিনি সেখানেই  আছেন। আমাদের সেভাবেই দেখতে হবে।  ভারতে শেখ হাসিনার স্ট্যাটাসও জানা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত আনার বিষয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে।

এটি অনুযায়ী ভারতে যদি আমাদের কোনো দোষী মানুষ থাকেন, উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোন আর যাই হোন না কেন ওনার  প্রত্যর্পণ আমরা চাইতে পারি। শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে তাকে ফেরত চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তারপর থেকে তিনি  দিল্লিতেই অবস্থান করছেন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/দুপুর ১:২৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit