বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ‘লঙ্কাকান্ড’ ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর থানার পাশের পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে মারা গেছে এক মাদকাসক্ত যুবক। শুক্রবার সকাল আটটার দিকে হাদিসুর রহমান নামে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।মৃত হাদিসুর রহমান জেলার সদর উপজেলার নাটাই এলাকার শামসুল হকের ছেলে। হাদিসুর রহমান পৌর এলাকার পীরবাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। জানা যায়, মাদকাসক্ত হাদিসুর রহমান গত কিছু দিন যাবত পাগলের মত আচরণ করতো। মাদক সেবন করে দা দিয়ে মানুষজনকে কুপাতে যেতো। বৃহস্পতিবার রাতেও পাগলামি শুরু করে। উলঙ্গ হয়ে বাড়ির পাশে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে।
শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে দা হাতে উলঙ্গ হয়ে আবার ঘুরাঘুরি শুরু করে হাদিসুর। যে বাড়িতে ভাড়া থাকতো সে বাড়ির সকল জানালার থাই গ্লাস ভেঙে ফেলে। পরে সে দৌড়ে বাড়ির চার তলার ছাদে উঠে পড়ে। তার মা ও স্ত্রী তাকে বুজিয়ে শান্ত করে বাড়ির ছাদ থেকে নামায়। আবার কোন এক ফাঁকে সে দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে আসে এবং দৌড়তে দৌড়াতে মেড্ডা সিও অফিসের পাশে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে। পুকুরে পড়া অবস্থায় দা দিয়ে সে তার নিজের শরীরে আঘাত করে। পরে আবার সেখান থেকে তার স্ত্রী ও মা বুঝিয়ে পুকুর থেকে তোলে আনেন। সে পুকুর থেকে উঠে উলঙ্গ অবস্থায় রিকসায় উঠে পৌর এলাকার দিকে চলে আসে। মঠের গোড়ায এলাকায় এক ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় একজন বুঝিয়ে তাকে কাপড় পড়িযে দেয়। পরে সে দৌড়ে থানার সামনে চলে আসে। এক পর্যায়ে পুকুরে ঝাঁপ দেয় হাদিসুর। পুলিশ তাকে পুকুর থেকে বুঝিয়ে উপরে উঠাতে না পেরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাদিসুরের স্ত্রী শেফালি বেগম জানান, সে মাদকাসক্ত ছিলো। বৃহস্পতিবার রাতে সে ঘরের মধ্যে ইয়াবা সেবন করে সকালে উলঙ্গ হয়ে হাতে দা নিয়ে অসংলগ্ন আচরণ করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সে বাড়ির আশপাশের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে কুপাতে থাকে। পরে শহরের মেড্ডা সিও অফিস এলাকার একটি পুকুরে ঝাঁপ দেয়। সেখান থেকে দৌড়ে এসে সদর থানার গেইট ডিঙ্গিয়ে ভিতরে ঢুকে পুকুরে ঝাঁপ দেয়। পরে সে উঠে না আসায় ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা পুকুর থেকে হাদিসুরের লাশ উদ্ধার করে।তবে হাদিসুরের মা আলেয়া বেগম অভিযোগ করেন, শেফালি হাদিসুরের দ্বিতীয় স্ত্রী। শেফালি তার আগের স্বামীর সাথে যোগযোগ রাখতো। এ নিয়ে হাদিসুরের সাথে তার প্রায়ই ঝগড়া হতো। এতে হাদিসুর মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। তারা হাদিসুরের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত দাবি করেন।এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার সারারাত ঘরের দরজা বন্ধ করে ইয়াবা সেবন করে হাবিবুর। এরপরই বিভিন্ন কাণ্ড ঘটায়। ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
কিউএনবি/অনিমা/৩০ অগাস্ট ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:৩১