বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ০৯:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ইরান থেকে ৭০ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি সচিবালয়ে আবারও কর্মচারীদের বিক্ষোভ, কঠোর কর্মসূচির হুমকি ফেসবুকে থাকছে না ভিডিও, আসছে নতুন নিয়ম ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সদর দফতরে বিমান হামলার দাবি ইসরায়েলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ারে খালেদা জিয়া ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে এক সিনেমায় কাজের প্রস্তাবে যা বলেন জায়েদ খান বিড়ি শ্রমিক নেতা শামীম হোসেনের স্ত্রী উষা খাতুনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ মাটিরাঙ্গায় বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণ ও সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন।  ‘বর্তমান অসাধারণ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময়’–আর্জেন্টাইন বিস্ময়বালকের প্রশংসায় শাবি দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা চট্টগ্রাম নিয়ে যে কোনো ষড়যন্ত্র সবাইকে রুখে দাঁড়াবে হবে

রাঙামাটির সাজেকে সিজনাল রোগে আক্রান্ত অর্ধশতাধিক শিশু-বয়স্ক

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪
  • ১০৮ Time View
আলমগীর মানিক,রাঙামাটি : প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাঙামাটির সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন সাজেকের দূর্গম বেশ কয়েকটি গ্রামে সিজনাল রোগে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত অর্ধ শতাধিক গ্রামবাসি। আক্রান্তদের মাঝে শিশুর সংখ্যাই বেশি বলে স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে। গত মাস খানেক সময় ধরেই সাজেক ইউনিয়ন সদর থেকে কয়েকশো কিলোমিটার অদূরে গভীর অরন্যেঘেরা দুর্গম বেটলিং মৌজার নিউ থানাং পাড়া, তারুম পাড়া, শিয়ালদাই পাড়া, অরুন পাড়া ও জাম পাড়া এলাকায় সর্দি-কাশি, মাথা ব্যথা, পাতলা পায়খানাসহ, পেট ব্যথা রোগে অন্তত অর্ধশত গ্রামবাসি আক্রান্ত হয়েছে মুমুর্ষ অবস্থায় রয়েছে। একের পর এক শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিষয়টি সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়ে।
এমতাবস্থায় পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৫ সদস্যের টিম ঘটনাস্থলে সোমবার থেকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাঘাইছড়ি উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তাপস কান্তি মজুমদার। তিনি জানান, অত্যন্ত দূর্গম এসকল এলাকায় পায়ে হেটে যেতে হয় এবং কমপক্ষে দুইদিন সময় লাগে। তারপরও আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথেই চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।ডাক্তার বিশ^জিৎ দাশকে টীম লিডার করে এসএসিএমও মলয় চাকমা, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক কিরণ শান্তি চাকমা, হরিণ জয় ত্রিপুরা, সত্য বিকাশ চাকমা ও নলিনী ত্রিপুরাকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করে এই কমিটিকে ২৪শে জুন থেকে উক্ত আক্রান্ত গ্রামগুলোতে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে ফিরে এসে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য অফিস আদেশের মাধ্যমে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, প্রতিবছরের এই সময়কালে সাজেকের বিভিন্ন দূর্গম গ্রামগুলোতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় গ্রামবাসিরা। বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর থেকে অন্তত দুইদিন সময় লাগে পৌছাতে এসকল গ্রামে আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা তাৎক্ষনিকভাবে নিশ্চিত করতে হয়ে উক্ত এলাকায় হেলিকপ্টারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিভাগের টিম পাঠিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদানের কোনো বিকল্প নেই।স্থানীয় সূত্র জানায়,গত এক সপ্তাহ ধরে এসব এলাকার মানুষ জ্বর কাশি রক্ত বমি ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।  আশপাশে কোথাও কমিউনিটি ক্লিনিক বা চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র নাই। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় এসব গ্রামে দ্রুত পৌঁছানো যাচ্ছে না মেডিকেল টিম ও  চিকিৎসা সরঞ্জাম।বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুসারে, নিউ থানাং পাড়ায় ১৬, পুরাতন থানাং পাড়ায় ১০, তারুম পাড়ায় ১৫ জন, শিয়ালদাই পাড়ায় ৫, অরুন পাড়ায় ও জাম পাড়ায় প্রায় অর্ধশতাধিকের মতো গ্রামবাসি  জ্বর সর্দি-কাশি, মাথা ব্যাথায় আক্রায় হয়েছে বলে জানাগেছে।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা: নুয়েন খিসা ইতোমধ্যে বিষয়টি জেনেছেন উল্লেখ করে বলেন, সেখানে ডায়রিয়া প্রধান কারণ নয়? জ্বরের কারণে হয়তো কিছুটা দুর্বল হয়ে গেছে। সেখানে উপজেলা  স্বাস্থ্যকর্মী ও ব্রাকের একটি টীম কাজ শুরু করেছে। প্রয়োজনে আরো মেডিকেল টিম পাঠানো হবে।এদিকে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, এলাকাটি খুবই দূর্গম, সেখানে কোন স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ পানির উৎস নেই! তাই বর্ষা মৌসুমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ দেখা যায়। সেখানে যাওয়ার জন্য কোন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও নেই। দ্রুত মেডিকেল টিম পাঠাতে হলে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের সাহায্য প্রয়োজন; বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ২০১৬, ২০২০ ও ২০২৩ সালে সাজেকের এসব গ্রামে ডায়রিয়া ও হামে আক্রান্ত হয়ে ১০ শিশু সহ অন্তত ২০ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। এমতাবস্থায় এই ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উক্ত গ্রামগুলোর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে হরিন জয় ত্রিপুরা ও তার স্ত্রী বিনি ত্রিপুরাকে সেখানে ২৪ ঘন্টা উপস্থিতি নিশ্চিতের শর্ত সাপেক্ষে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিয়োগের পর হতেই উক্ত দম্পতি ঘনটনাস্থলে না থেকে পানছড়ির শ^শুর বাড়িতে বসবাস করে আসছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। রোববারও হরিন জয় ত্রিপুরা তার কর্মস্থলে উপস্থিত ছিলেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে তাৎক্ষনিকভাবে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে না পারলে বিগত বছরগুলোর ন্যায় ব্যাপক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কিউএনবি/অনিমা/২৪ জুন ২০২৪,/দুপুর ১:০২

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit