এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছা উপজেলায় শুরু হয়েছে তীব্র লোডশেডিং। ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা দারুণ ভাবে ব্যাহত হচ্ছে, ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেবামূলক কর্মকান্ড চিকিৎসা এবং কলকারখানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।সরকারের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশজুড়ে কোথায় কতক্ষণ কীভাবে লোডশেডিং দেয়া যাবে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় রুটিন প্রস্তুত করে তা জনগণকে জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে যশোর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এ জোনাল অফিস চৌগাছায় বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ ও বিভিন্ন উপকেন্দ্রগুলো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করছেন।
তারা ইচ্ছামাফিক লোডশেডিং দিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছেন। উপজেলা থেকে কর্তৃপক্ষকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লোডশেডিং দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও তারা তা মানতে রাজি নন। সারাদিন ১২-১৩ বার লোডশেডিং তো আছেই; তার ওপর বিরক্তিকর ভেলকিবাজি। সবচেয়ে বিরক্তিকর গভীর রাতে এলাকাবাসী যখন ঘুমাতে যান ঠিক সে সময়ে শুরু হয় লোডশেডিং।
অধিকাংশ সময়ে দেখা যায় গভীর রাতে লোডশেডিং শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত বিদ্যুৎ নেই। একদিকে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের সুযোগ নিয়ে বেড়েছে চুরি। প্রতিদিন ছোট-বড় কোন না কোন চুরির ঘটনা ঘটছে। সারারাত ঘুমাতে না পেরে এলাকাবাসী সড়কের উপর আর ব্রিজ কালভার্টেও ওপর বসে গল্প গুজব করেই রাত কাটাচ্ছেন। দিন-রাত তীব্র লোডশেডিং দেয়ার কারণে সাধারণ মানুষ সকালে নির্ঘুম রজনীর হতাশা প্রকাশ করে। তাছাড়া এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।
উপজেলার পৌরসদরসহ গ্রাম এলাকায় রাত-দিন সমান তালের লোডশেডিং পরিবর্তন চায় এলাকাবাসী। সারাদিন ক্রমাগত বিদ্যুতের ভেলকিবাজির কারণে শিক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লি ও ব্যবসায়ীদেরকে যথেষ্ট নিদারুন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে গণমাধ্যমে যারা সংবাদ প্রেরণের কাজ করেন তাদের অবস্থা হয় আরও শোচনীয়।চৌগাছা পৌর শহরের চা দোকানী আব্দুল মুন্নাফ কালু মিয়া, দর্জি দোকানী আব্দুল মান্নান, বই ব্যাবসায়ী দেওয়ান শফিকুল ইসলাম ও মুদী ব্যবসায়ী নুর ইসলামসহ একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন উপজেলার বিদ্যুৎ অফিসগুলোতে ঘাপটি মেরে যেসব কর্মকর্তাগণ বসে আছে তারা ইচ্ছামাফিক লোডশেডিং দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তিক্ষুণ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
যেমন নামাজের সময়, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করার সময় এবং সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে যখন মানুষ ঘুমাতে যায় তখন লোডশেডিং দিয়ে থাকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার অবৈধ সংযোগগুলো চিহ্নিত করে লাইন বিচ্ছিন্ন করলে অত্র এলাকার বিদ্যুৎ ঘাটতি অনেকটা হ্রাস পাবে। অনেকে আবার এ সমস্যার জন্য বেটারী চালিত অটো রিকশা ও ভ্যানকেও দায়ী করছেন।
এ বিষয়ে যশোর পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি-১ চৌগাছা জোনাল অফিসের প্রকৌশলী ছাইজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। রুটিং লোডসেডিংয়ের পাশা-পাশি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছের ডাল পড়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় হঠাৎ করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। সেই সমস্যা খুঁজে পেতে আমাদের সময় লাগে। ফলে গ্রাহক মনে করেন এটাও লোডসেডিংয়ের অংশ।
কিউএনবি/অনিমা/২৪ জুন ২০২৪,/দুপুর ১:০৬