শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন

কপাল পুড়ল ইমরানের সঙ্গে বেইমানি করা প্রার্থীদের

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৮৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কারাবন্দি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের প্রতি অনুগত থাকা রাজনীতিকরা দেশটির সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে সব প্রতিকূলতাকে তুচ্ছ করেছেন। ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে ইমরান-অনুগত রাজনীতিবিদরা রাজনৈতিকভাবে প্রতাপশালী প্রার্থীদের হারিয়ে জয়ী হয়েছেন। ইমরানের এই অনুগত রাজনীতিবিদদের মধ্যে কিছু ব্যক্তিও আছেন, যারা রাজনৈতিকভাবে নবিশ।

ইমরানের অনুগত রাজনীতিবিদরা যেখানে বিজয়ী হয়েছেন, সেখানে তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা রাজনীতিকরা দেশটির শক্তিশালী চক্রের সমর্থন নিয়েও অপমানজনক পরাজয়ের শিকার হয়েছেন। গত বছরের ৯ মে দুর্নীতির এক মামলায় ইমরানকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনার জেরে সেদিন দেশব্যাপী জাতীয় নিরাপত্তা স্থাপনাগুলোয় হামলা হয়। এই হামলার কারণে পিটিআই রাষ্ট্রীয় রোষানলে পড়ে।

ইমরানের দলকে আক্ষরিক অর্থেই পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে মুছে ফেলতে সব চেষ্টা করা হয়। দলটির শীর্ষ নেতাসহ অনেক কর্মীকে কারাগারে পোরা হয়। আনুগত্য পরিবর্তন বা রাজনীতি ছেড়ে দিতে তাদের ওপর চাপ দেওয়া হয়। গণমাধ্যমের খবর থেকে তাদের উধাও করে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় ইমরানের প্রতি অনুগত থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।

কঠিন সময়ে ইমরানকে ত্যাগ করা খ্যাতনামা রাজনীতিকদের মধ্যে পারভেজ খট্টক অন্যতম। তিনি খাইবার পাখতুনখাওয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। চিনি ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক জাহাঙ্গীর তারিন একসময় ইমরানের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। তিনিও পিটিআই ছাড়েন। গঠন করেন ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি)। স্পষ্টতই ক্ষমতাশালী চক্রের ইশারায় পিটিআই ত্যাগীদের দলে ভেড়াতে তিনি এই কাজ করেন।

তবে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআই-পি ও আইপিপি উভয় দল অপমানজনকভাবে পরাজিত হয়েছে। নির্বাচনি প্রচারের সময় খট্টক জোরগলায় দাবি করেছিলেন যে তিনি খাইবার পাখতুনখাওয়ার (কে-পি) পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আর পিটিআইসমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও জয়ের পর তার সঙ্গে জোট করবেন।

অন্যদিকে তারিনের অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। তার আইপিপি নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সঙ্গে আসনসামঞ্জস্য চুক্তি পর্যন্ত করে। তারিন দাবি করেন, তারা একত্রে কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে সরকার গঠন করবেন। তবে উভয়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনি জয়কে চ্যালেঞ্জ করছেন। পরিহাসের বিষয় হলো— খট্টক ও তারিন উভয়ে তাদের নিজ নিজ আসনে হেরে গেছেন।

নির্বাচনে পিটিআই-পি আক্ষরিক অর্থেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। খট্টকের দুই ছেলে ও এক জামাতা খাইবারপাখতুনখাওয়ার নওশেরার সাতটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু তারা কোনো আসনে জিততে পারেননি। পিটিআইসমর্থিত একজন তরুণ নবিশ রাজনীতিক তাদের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন ওঠে, কেন পাকিস্তানি ভোটাররা খট্টক ও তারিনের মতো রাজনৈতিক ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থীদের প্রত্যাখ্যান করলেন?

পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আলি আকবর জানিয়েছেন, নির্বাচনি প্রচারের সময় খট্টকের নিজের ওপর এতটাই আস্থা ছিল যে তিনি নিজেকে ভবিষ্যতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রতিনিয়ত উপস্থাপন করছিলেন। নির্বাচনে গোহারা হারের পর তাকে জনগণের শক্তি ছাড়া অন্য কারও ওপর নির্ভর না করার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করতে হবে। খট্টকের দলের আরেক বড় মুখ সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মাহমুদ খান। তিনি দুটি নির্বাচনি এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। দুটিতেই হেরেছেন তিনি।

সাংবাদিক আলি আকবরের মতে, এই নির্বাচনে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে জনগণ স্বাধীনভাবে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেছে। ফলে প্রমাণিত হয়, এই প্রার্থীরা ২০১৩ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইমরানের জন্যই জয় পেয়েছিলেন, ব্যক্তিগত কৃতিত্বের কারণে নয়।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৪:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit