ডেস্ক নিউজ : পটুয়াখালীর কুয়াকাটার উৎপাদিত শুঁটকি থেকে বৈদেশিক রপ্তানি আয় বাড়ানো এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকলেও নানা সংকটে তা সম্ভব হচ্ছে না। সামুদ্রিক তাজা মাছের শুঁটকি করার কোনো স্থায়ী পল্লী না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীসহ শ্রমিকদের। তাই স্থায়ী পল্লী নির্মাণ এবং শুঁটকি ব্যবসার জন্য জায়গার পরিধি বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সহজলভ্য টাকায় সামুদ্রিক মাছ ক্রয় করতে পারায় এবং অতিরিক্ত লাভের আশায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কুয়াকাটার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী শুঁটকি পল্লী। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম। এ কাজে অংশ নিতে দেখা যায় নারী, পুরুষ ও শিশুসহ এ পেশায় জড়িত শত শত শ্রমিকদের।
অস্থায়ীভাবে ঘরে ওঠা পল্লীর মালিক মো: হালিম বেপারী বার্তা২৪.কে জানান, শুঁটকি পরীক্ষা-জাতকরণের কোন নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় আমরা সৈকতের পাশেই এবং সৈকতের মোহনাকেন্দ্রিক আমরা মাছ শুকাই। শুঁটকি ব্যবসার পরিধি আমরা বাড়াতে চাই যার জন্য আমাদের দরকার স্থায়ী পল্লীর। তাই সরকারের কাছে স্থায়ী পল্লী নির্মাণসহ সরকারি প্রণোদনার দাবি জানাচ্ছি।
অস্থায়ী এই পল্লীতে কাজে নিয়োজিত শ্রমিক, মোহাম্মদ শামীম পাটোয়ারী বলেন, ‘বাজার থেকে সংগৃহীত মাছ খোলা জায়গায় বাঁশের মাচা বানিয়ে, রোদে শুকিয়ে এবং কোন প্রকার কীটনাশক ছাড়াই তৈরি করা হয় এসব শুঁটকি। শুধু লবণ মেখে সংরক্ষণ করার কারণে এর রয়েছে আলাদা স্বাদ। কিন্তু আমাগো নির্দিষ্ট কোনো পল্লী না থাকার কারণে, বছরের ৬ মাস চলে এ ব্যবসা। ফলে বছরের বাকি সময় আমাগো কর্মহীন থাকতে হয়।’
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক দম্পতি সাফওয়ান ও শাকিরা বলেন, কুয়াকাটা শুঁটকির অনেক সুনাম রয়েছে। এখানে এসে নিজ চোখে আমরা শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করা দেখেছি, তারা কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করেনা, শহরে এলাকার চেয়ে এখানে দাম অনেক কম। কিন্তু তাদের স্থায়ী পল্লী না থাকার কারণে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতার সৃষ্টি হয়, তাদের যদি জায়গার পরিধি বাড়িয়ে স্থায়ী পল্লী নির্মাণ করে দেওয়া হয়, আমরা আশা করি তাদের তৈরিকৃত শুঁটকি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
শ্রমিকদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে উল্লেখ করে কলাপাড়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, সারাদেশে কুয়াকাটার শুঁটকির সুনাম রয়েছে। তাই মানসম্মত শুঁটকি উৎপাদনের জন্য শ্রমিকদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি স্থায়ী শুঁটকি পল্লী নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে এবং এবং এই পেশার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলকে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।
কিউএনবি/আয়শা/১৬ জানুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৩:১৫