মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৮ পূর্বাহ্ন

না পাওয়া বস্তু নিয়ে হতাশা নয়

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১৫৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : তাকদিরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের অন্যতম শর্ত। এই স্পর্শকাতর বিষয়ে আমরা অনেক সময় খেই হারিয়ে ফেলি। নিজের মনের বিপরীত হলে বা একটু ভিন্ন রকম হলেই নানা মন্তব্য শুরু করে দিই। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো বান্দা মুমিন হতে পারবে না—যে পর্যন্ত না সে তাকদির ও তার ভালো-মন্দের ওপর ঈমান আনবে।

এমনকি তার নিশ্চিত বিশ্বাস থাকতে হবে যে যা কিছু ঘটেছে, তা কিছুতেই অঘটিত থাকত না এবং যা কিছু ঘটেনি, তা কখনো তাকে স্পর্শ করবে না।
(জামে তিরমিজি, হাদিস : ২১৪৪)
এখানে আল্লাহর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকা এবং না পাওয়ার বেদনা উপশমের উপায় নিয়ে আলেচনা করব।
না পাওয়া বস্তু হয়তো কল্যাণকর ছিল না
আল্লাহ তাআলা আমার জন্য ওটাই করেছেন যেটা আমার জন্য কল্যাণকর। কিন্তু আমার জ্ঞান স্বল্পতার কারণে আমি তা অনুধাবন করতে পারিনি।
তাই মনে এ বিশ্বাস করা, যা সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটা আমার জন্য কল্যাণকর। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের প্রতি (শত্রুর সঙ্গে) যুদ্ধ ফরজ করা হয়েছে, আর তোমাদের কাছে তা অপ্রিয়। এটা খুবই সম্ভব যে তোমরা একটা জিনিসকে মন্দ মনে করো, অথচ তোমাদের পক্ষে তা মঙ্গলজনক। আর এটাও সম্ভব যে তোমরা একটা জিনিসকে পছন্দ করো, অথচ তোমাদের পক্ষে তা মন্দ।
আর (প্রকৃত বিষয়) আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২১৬)
হয়তো ভালো কিছু অপেক্ষা করছে
আল্লাহ বান্দাকে এর চেয়ে আরো উত্তম নিয়ামত দান করবেন। সে জন্য আল্লাহ তাআলা তাকে সাময়িক কষ্ট দিয়েছেন-এ বিশ্বাস একজন মুমিন তার হৃদয়ে লালন করবে। কারণ বান্দার জন্য ভবিষ্যতে কী অপেক্ষা করছে, তা জানেন একমাত্র রাব্বুল আলামিন। আমার ভাগ্যে থাকা সব সম্ভাব্য অকল্যাণ ও ক্ষতি একমাত্র আল্লাহ তাআলাই দেখতে পান।
উম্মু সালামা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কোনো মুসলিমের ওপর মুসিবত এলে যদি সে বলে, আল্লাহ যা হুকুম করেছেন, অর্থাৎ ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ বলে এবং এ দোয়া পাঠ করে— ‘আল্লাহুম্মা জুরনি ফী মুসিবতি ও আখলিফ লি খয়রাম মিনহা, (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাকে আমার মুসিবতে সওয়াব দান করো এবং এর বিনিময়ে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করো), তাহলে মহান আল্লাহ তাকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করে থাকেন। উম্মে সালামা (রা.) বলেন, এরপর যখন আবু সালামা ইন্তিকাল করেন, আমি মনে মনে ভাবলাম, কোনো মুসলিম আবু সালামা থেকে উত্তম! তিনি সর্বপ্রথম ব্যক্তি, যিনি হিজরত করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে পৌঁছে গেছেন। এতদসত্ত্বেও আমি এ দোয়াগুলো পাঠ করলাম। এরপর মহান আল্লাহ আবু সালামার স্থলে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মতো স্বামী দান করেছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২০১)
আল্লাহর পরিকল্পনা উত্তম
নিজের মনেই এ বিশ্বাস স্থাপন করা যে আমরা যত পরিকল্পনা করি না কেন, এর চেয়ে বেশি উত্তম পরিকল্পনা আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজের বান্দার জন্য করে থাকেন। আল্লাহ তাআলা মুমিনের জন্য যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তাতেই আছে সমূহ কল্যাণ। সাদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আদম-সন্তানের জন্য আল্লাহ যা ফায়সালা করে রেখেছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকাই হলো তার সৌভাগ্য। আর আল্লাহর কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে তার দুর্ভাগ্য এবং আল্লাহ তাআলার ফায়সালার ওপর নাখোশ হওয়াও তার দুর্ভাগ্য।
(জামে তিরমিজি, হাদিস : ২১৫১)
আল্লাহর কাছে প্রতিদানের আশা করা
সওয়াবের প্রত্যাশায় সাময়িক কষ্ট মেনে তাকদিরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা এবং আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করা প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহর কাছে এর বিশেষ প্রতিদান আছে। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো ঈমানদার ব্যক্তির শরীরে একটি মাত্র কাঁটার আঘাত কিংবা তার চেয়েও কোনো নগণ্য আঘাত লাগলে আল্লাহ তাআলা তার একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেন কিংবা তার একটি পাপ মোচন করে দেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৪৫৬)

কিউএনবি/অনিমা/৩১ ডিসেম্বর ২০২৩/বিকাল ৪:৪১

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit