ঝালকাঠি প্রতিনিধি : পারুল বেগম (৫০) দীর্ঘদিন ধরে ঝালকাঠির নলছিটিতে বিভিন্ন দোকানে ও বাসা বাড়িতে পানি সরবরাহ করেন।আর এই পানি সরবরাহ করে যে অর্থ উপার্জন করেছেন তা জমিয়ে বসবাসের জন্য তৈরি করেছেন একটি বিল্ডিং। প্রায় ২০ বছর আগে পারুলের স্বামী মোশাররফ হোসেন হাওলাদার মারা যান। এরপর তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে নলছিটি পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডে বাসাম ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। আর তিনি মানুষের বাসায় ও দোকানে পানি সরবরাহ করে যা আয় করতো তা দিয়ে ছেলে মেয়েকে নিয়ে চলতো সংসার। পারুলের বড় ছেলে রাজ মিস্ত্রির কাজ করেন আর মেঝো ছেলে নদীতে মাছ ধরেন। তারাও বিবাহ করে আলাদা সংসার করেন আর মেয়েকেও বিয়ে দিয়েছেন তিনি। ছোট ছেলে রঙের কাজ করে বর্তমানে তাকে নিয়ে চলে পারুলের সংসার । পারুল বেগম বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে শুরু হয় আমার কষ্টের সংসার। আমি সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন দোকান ও বাসায় পানি দিয়েছি।
বর্তমানে সাপ্লাই হওয়ায় পানি দেওয়ার কাজ কমে গেছে। এখন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পানি দেই। কলস প্রতি কেউ ৫ টাকা কেউ ১০ টাকা দেয়। তারপরও প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা উপার্জন হয়। আমি ছেলেদের কাছ থেকে কোন সময় টাকা পয়সা নিই না বরং তাদের আমি দিই। আর আমি পানি দিয়ে নিজ অর্থে বিল্ডিং করেছি। যাতে ২ লাখের বেশি টাকা খরচ হয়েছে। দোকানদার সুজন বলেন,পারুল চাচী দীর্ঘদিন ধরে আমার দোকানে পানি দেন। আমার কাছে ভালো লাগে যে এই বয়সে মানুষের কাছে হাত না পেতে নিজে উপার্জন করেন। তিনি পানি দিয়ে মোটামুটি ভালোই আয় করেন। নলছিটি পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাজুল ইসলাম দুলাল চৌধুরী বলেন, পারুল বেগম আমার ওয়ার্ডে বসবাস করেন। তিনি পৌরসভা থেকেও সাহায্য সহযোগিতা পান। শুনছি তার কষ্ট অর্জিত টাকা দিয়ে বাড়িতে বিল্ডিং করেছেন। তাকে আমি সাধুবাদ জানাই।
কিউএনবি/অনিমা/২৫ অগাস্ট ২০২৩,/সন্ধ্যা ৭:৩০