মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ফুলের মতো পবিত্র মানুষগুলোই আপনাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে”–কুড়িগ্রামে পথসভায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ কিম বাহিনীর সঙ্গে উত্তেজনা, প্রতিরক্ষা জোরদারের ঘোষণা দক্ষিণ কোরিয়ার মাশরাফি-সাকিবের রেকর্ড ভেঙে রিশাদের ইতিহাস ট্রফি ফিরে পেতে নকভিকে ভারতের চিঠি নোয়াখালীতে বিনা ভোটে বিজয়ী হতে নমিনেশন ফরম ছিঁড়ে প্রার্থীর ভাইকে মারধর পাঁচপুকুরিয়ায় মিঠুন দম্পতির অসামাজিক কার্যকলাপে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী ফুলবাড়ীতে গ্রামপুলিশ কর্তৃক শিক্ষককে মারপিটের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন ফুলবাড়ীতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার যোগদান চৌগাছায় কৃষকের আত্মহত্যা ভূরুঙ্গামারীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ সমাবেশ

আনাচে কানাচে কেমিক্যাল গোডাউন, কেরানীগঞ্জে আতঙ্ক

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৩০ Time View

ডেস্ক নিউজ : ১৩ বছর আগে ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণে ১২৪ জন নিরীহ মানুষ নিহত হওয়ার পরে পুরান ঢাকার সকল কেমিক্যাল গুদাম কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কিন্তু সেই পরিকল্পনা আর আলোর মুখ দেখেনি। এরপরে ২০১৯ সালে চকবাজারে চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পরে প্রশাসন কঠোর ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় পুরান ঢাকার সকল কেমিক্যাল গুদাম কেরানীগঞ্জের নির্দিষ্ট একটি স্থানে স্থানান্তর করে গড়ে তুলা হবে কেমিক্যাল পল্লী। সরকারেরে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলেও চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির পরে পুরান ঢাকার অনেক কেমিক্যাল ব্যবসায়ী তাদের গুদামগুলো কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত ভাবে স্থানান্তর করে। কোন ধরনের নিয়ম নীতি ছাড়া এসব গোডাউন কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তর করায় এখন কেরানীগঞ্জেও কেমিক্যাল গুদামে ঘটছে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। স্থানীয় অনেকেই জানেন না তাদের আশে পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভয়াবহ সব রাসায়নিক কেমিক্যালের গুদাম, এতে করে আতঙ্কে রয়েছে স্থানীয়রা।

জানা যায়, ২০১০ সালে জুন মাসের ৩ তারিখে নিমতলী ট্র্যাজেডিতে ১২৪ জন নির্মমভাবে পুড়ে মারা যাওয়ার পর পরই পুরান ঢাকাবাসী সরকারের কাছে দাবি করে ভয়াবহ সব কেমিক্যালের গুদাম পুরান ঢাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হোক। তাদের এ দাবির প্রেক্ষিতে সে সময় সরকার ঘোষণা দেয় পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদাম গুলো সরিয়ে কেরানীগঞ্জে নির্দিষ্ট একটা স্থানে গড়ে তুলা হবে ক্যামেরার পল্লী। সেই অনুযায়ী কেরানীগঞ্জের সোনাকান্দা মৌজায় ২০ একর জায়গা ও নির্বাচন করা হয়েছিল কেমিক্যাল পল্লী গড়ে তোলার জন্য। এ লক্ষ্যে পরবর্তীতে ২০১৫ সালে ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকার প্রকল্প ও হাতে নেওয়া হয়েছিল তখন। তবে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে তখন আর এ প্রকল্পটি সামনে আগায়নি।

এরপরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ চকবাজারে চুড়িহাট্টা এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউনের আগুনে ৭৮ জন নিহত হবারা পরে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ূন ঘোষণা দিয়েছেন, কেরানীগঞ্জে বিসিক এলাকায় গড়ে তোলা হবে কেমিক্যাল পল্লী। পরিকল্পনা করা হয়েছিল ৫০ একর জায়গায় রাসায়নিক গুদামের জন্য প্রায় ৯০০ টির বেশি প্লট তৈরি করা হবে। শিল্পমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর ওই বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জে কেমিক্যাল পল্লীর জন্য জায়গা পরিদর্শনে আসেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুল হালিম, বিসিক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাক হোসেন, কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। পরিদর্শনে এসে তারা কেরানীগঞ্জের কালন্দি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণকিত্তা মৌজায় ৫০ একর জায়গা প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত করে।

একই বছর ২০১৯ এর ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জে চুনকুটিয়া এলাকায় প্রাইম প্লাস্টিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে আবারও মুখ থুবড়ে পরে কেরানীগঞ্জে কেমিক্যাল পল্লী গড়ে তোলার প্রকল্প। তবে সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলেও পুরান ঢাকার অনেক কেমিক্যাল ব্যবসায়ী কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় কোন নিয়ম নীতি না মেনেই গড়ে তুলে কেমিক্যাল গোডাউন। এতে করে পুরান ঢাকার মতো কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাও রয়েছে মারাত্মক কেমিক্যাল বিস্ফোরণের ঝুঁকিতে।

কেরানীগঞ্জের অনেক ভবন মালিক মোটা অঙ্কের অর্থের লোভে, বেশি টাকা অ্যাডভান্স ও বেশি ভাড়া পেয়ে কোন ধরনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অনেক এলাকায় গোপনে কেমিক্যাল গোডাউন ভাড়া দিয়েছে। এতে করে ঝুঁকিতে রয়েছে কেরানীগঞ্জের স্থানীয়রা। ভয়াবহ দুর্ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবার।

২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের জিনজিরা পূর্ব বন্দ ডাক পাড়া এলাকায় রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আশপাশের পুরো ১ কিলোমিটার কেপে উঠে। কোন ধরনের প্রাণহানি না হলেও ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশপাশের অনেক বাড়ি ঘর। এর পরে গত ১৫ তারিখ রাতে কালিন্দি ইউনিয়নে রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত হয় ৫ জন। এতে করে স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা আরও বেড়েছে।

কালিন্দী ইউনিয়নের গদাবাগে যেখানে বিস্ফোরণ ঘটেছে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. মেহেদী বলেন, নিরাপত্তার খাতিরে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল পল্লী কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়েছে তবে এতে করে কেরানীগঞ্জবাসীর নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। গত পরশু দিনের দুর্ঘটনা তার প্রমাণ। আমরা কেও জানতাম না আমাদের পাশেই এমন ভয়াবহ একটা গুদাম। এমন মতো যদি আবারও দুর্ঘটনা ঘটে এর দায় কে নিবে ? আজকের দুর্ঘটনার দায় ই বা কে নিবে ? প্রশাসনের এসব বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।

মো: আবুল হাসান নামে এক ব্যক্তি বলেন, এভাবে ঘিঞ্জি এলাকায়, আবাসিক এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউন না দিয়ে রোহিতপুর বিসিকে ধলেশ্বরীর পাশে শত শত একর খালি জমি পরে আছে ওই খানে করুক। নদীর পাশে হওয়াতে নিরাপদ ই হবে। আর যে সকল মালিকের টাকার লোভে এলাকাবাসীকে ঝুঁকিতে ফেলছে তাদের কে চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুক উপজেলা প্রশাসন।

কেরানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র ফায়ার স্টেশন অফিসার কাজল মিয়া জানান, কেরানীগঞ্জের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় যাতায়াত ও পানির ব্যবস্থা। কেরানীগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে কেমিক্যাল গোডাউন। এসব গোডাউন বন্ধে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকি। উপজেলা প্রশাসনের এ বিষয়ে কাজ করলে আমরা তাদের পূর্ণ সহযোগিতা করব। কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সল বিন করিম বলেন, আমরা কেমিক্যালে গোডাউন কোথায় কোথায় আছে খোঁজ করছি। অভিযান চালাচ্ছি, নিয়ম নীতির বাইরে যারা আছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৬ অগাস্ট ২০২৩,/বিকাল ৪:৪৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit