বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ২৫ জন নারী হাঁসের খামার না পেয়ে রবিবার সকালে মানববন্ধন করেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রায় দুই বছর আগে তালিকায় নাম উঠিয়ে এবং পরবর্তীতে প্রশিক্ষণে অংশ নিলেও তাদেরকে বাদ দিয়ে বিশেষ বিবেচনায় অন্যদেরকে হাঁসের খামার করে দেওয়া হয়।
এদিকে বঞ্চিত নারীদের মানববন্ধনের বিষয়টি নজরে এলে কথা বলেন নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম। এ সময় তিনি ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, হাওড় অঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নারীদেরকে ১৫টি করে হাঁস, একটি ছোট্ট ঘর ও ৫০ কেজি হাঁসের খাবার দেওয়ার কথা। সে অনুযায়ি বছর দু’য়েক আগে থেকেই মাঠ পর্যায়ে যাচাই করে তালিকা করা হয়।
গত ১৮ জুলাই ২১০ জনের প্রত্যেককে প্রকল্পের আওতায় হাঁস, ঘর ও খাবার দেওয়া হয়। তবে তালিকা নাম থাকার উঠা অনেকে এসে তখন ফিরে যান। দেখতে পান তাদের বদলে অন্যদের নাম উঠিয়ে এসব দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় বঞ্চিতরা রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মানববন্ধন রচনা করেন। এ সময় মরিয়ম বেগম, রহিমা আক্তার নামে উপজেলার রামপুর গ্রামের দুই নারী অভিযোগ করেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করে তাদের নাম উঠানো হয়। চুড়ান্ত তালিকায় তাদের নামও উঠানো হয়।
ট্রেনিংয়ের কথা বলে তাদেরকে উপজেলাতে আনা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত তিন ইউনিয়নের ২৫ জন নারী সরকারি এ সুবিধা পাননি। গত ১৮ জুলাই উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে দেখতে পান তাদের বদলে এলাকার অন্যদেরকে এ সুবিধা দেওয়া হয়। বিশেষ সুবিধা নিয়ে তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যে মুরগীও বিতরণ করা হবে বলে তারা জানতে পেরেছেন। হাঁস যেহেতু তাদেরকে দেওয়া হয়নি সেহেতু তারা এখন মুরগী পাওয়ার দাবি জানান। নামের তালিকা করার সময় মাঠ সহকারি থাকা মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অনেক যাচাই-বাছাই করে তালিকা করি। এর মধ্যে শুনতে পাই যারা পাওয়ার যোগ্য তাদের অনেকের নামই তালিকা থেকে হুট করে বাদ দেওয়া হয়। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাকে বদলি করে দেওয়া হয়।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নূরে আলম বলেন, ‘প্রাথমিক তালিকা করার পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে নাম বাদ পড়েছে। তবে এক্ষেত্রে আমাদের যে বিধি আছে সেটা লংঘন করা হয়নি। এ ধরণের মানববন্ধন করতে হয়তো তাদেরকে কেউ ইন্দন দিয়েছে।’ এদিকে খবর পেয়ে ছুটে আসেন ইউএনও মো. ফখরুল ইসলাম। এ সময় তিনি ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। সাংবাদিকদেরকে ইউএনও বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কিউএনবি/আয়শা/২৩ জুলাই ২০২৩,/রাত ৯:১৫