শহিদ আহমেদ খান সাবের,সিলেট প্রতিনিধি : সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খানের হামলায় এক সেবাগ্রহীতা আহত হয়েছেন। ট্রেড লাইসেন্স প্রদানে অতিরিক্ত টাকা চাওয়ার প্রতিবাদ করায় সেই সেবাগ্রহীতাকে মারধর করে তালাবদ্ধ করে রাখেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খান। পরে স্বজনরা এসে উদ্ধার করে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। গত রোববার (১৬ জুলাই) দুপুর ১২টায় ফুলবাড়ি ইউনিয়ন অফিসে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহত সেবাগ্রহীতা ইউনিয়নের কিসমত মাইজভাগ গুলাগাও গ্রামের কামরুজ্জামান মাসুম। তিনি বিগত নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন।
এদিকে, সেবাগ্রহীতার উপরে হামলার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়লে চারদিক থেকে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ভিডিওতে দেখা যায় কামরুজ্জামান মাসুমকে ঘাড় ধাক্কাতে ধাক্কাতে ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের বাইরে সিলেট জকিগঞ্জ সড়কে নিয়ে আসছেন চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খান। এসময় চেয়ারম্যান ‘বেরহ বেরহ’ বলে উচ্চস্বরে চিকিৎকার করছিলেন। পরে আবার সড়ক থেকে ঘাড় ধাক্কিয়ে কামরুজ্জামান মাসুমকে ইউনিয়ন অফিসের ভিতরে নিয়ে যাচ্ছেন। এঘটনায় স্থানীয়রা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে চেয়ারম্যান কে ইউনিয়ন অফিসের কার্যক্রম থেকে সাময়িক বিরত রাখতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্শন করেন তারা। যদিও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খান মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সে ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে ইউনিয়ন সচিবকে লাঞ্চিত ও মারধর করেছে। তিনি তাকে শুধু সরিয়ে দিয়েছেন। হামলার শিকার কামরুজ্জামান মাসুম জানান, ইউনিয়ন অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স আনতে গেলে ইউনিয়ন অফিসের সচিব তার নিকট লাইসেন্স এর জন্য অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। এসময় তিনি চার্টে প্রদর্শিত নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত ফি নেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে ইউনিয়ন সচিব বলেন চেয়ারম্যান নির্ধারিত ফি না দিলে ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হবে না।
এসময় চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খান বাইরে থেকে এসে তার সাথে তর্ক জুড়ে দেন। এর একপর্যায়ে চেয়ারম্যান তাকে মারধর করে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে সিলেটে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন। মারধরে তার ৬টি দাঁত নড়ে গেছে এবং শীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম হয়েছে বলে জানান তিনি। এঘটনায় তিনি মামলা দায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি মান্নান ঘটনাটি জেনেছেন উল্লেখ করে বলেন, এব্যাপারে আজ সোমবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন জানান, এব্যাপারে তিনি এখনো কোন খবর পাননি। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
কিউএনবি/আয়শা/১৭ জুলাই ২০২৩,/রাত ৮:৫৫