মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন

‘এ পঞ্চায়েতে যিনি কোরবানি দেবেন না তিনিও সমবণ্টনে মাংস পাবেন’

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩
  • ৭২ Time View

ডেস্ক নিউজ : পঞ্চায়েত প্রথা বাংলার ইতিহাসের মতোই প্রাচীন। পঞ্চায়েত বলতে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত পর্ষদকে বোঝায়। প্রাচীনকালে গ্রাম-সংসদ অথবা পঞ্চায়েত রাজা কর্তৃক মনোনীত বা কোনো গ্রামের জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হতো। গ্রাম প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় পঞ্চায়েতগুলিতে সকল শ্রেণি ও বর্ণের লোকদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। কালের পরিক্রমায় এখনো কিছু পঞ্চায়েত বা সেই সব সামাজিক ব্যবস্থা বিদ্যমান। যদিও আগের মতো সেইসব কার্যক্রম এখন তার তাদের মাধ্যমে হয় না। গ্রাম্য পটভূমিতে এখনো পঞ্চায়েতের স্রোতধারা মোটামুটি বহমান।

রাজধানীতেও কয়েকটি পঞ্চায়েত ব্যবস্থা এখনো টিকে রয়েছে, যেগুলো প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে টিকে রয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর লালবাগ, বংশাল, কলতাবাজার, গেন্ডারিয়া এবং যাত্রাবাড়িতে এখনো কয়েকটি পঞ্চায়েত সিস্টেম বা পদ্ধতি রয়েছে। এমনই একটি পঞ্চায়েত রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ির আদর্শ পঞ্চায়েত। বৃহত্তর যাত্রাবাড়িতে মোট ৫টি পঞ্চায়েত রয়েছে এর মধ্যে এই আদর্শ পঞ্চায়েত একটি। সূচনালগ্ন থেকেই এ পঞ্চায়েত বিভিন্ন দাতব্য ও সেবামূলক কর্মকাণ্ড করে আসছে। সবচেয়ে আলোচিত যে উদ্যোগটি গত কয়েক যুগ ধরে তারা করে আসছে তা হল পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কোরবানির মাংস বণ্টন। তাহলে একটু বিস্তারিত বলা যাক।

বর্তমানে এই পঞ্চায়েতের সদস্য বা ‘ঘর’ সংখ্যা হল প্রায় ২৫০। প্রতি কোরবানির ঈদে এদের মধ্যে গড়ে ৮০/৯০টি পরিবার কোরবানি দিয়ে থাকে। আর বাকি দেড়শ পরিবার কোনো না কোনো কারণে কোরবানি দিতে পারে না। ঈদের আনন্দে যেন ভাটা না পড়ে তাই তাদেরকেও পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সমবণ্টন করে কোরবানির মাংস দেয়া হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ পঞ্চায়েতের প্রধান সর্দার নজরুল ইসলাম বলেন, উদাহরণ স্বরুপ ধরেন- এবার পঞ্চায়েতের প্রায় ৬০ বা ৭০টি পরিবার পশু কোরবানি দিবেন। এই সংখ্যা কম বেশিও হতে পারে। ঈদের দিন সকালে তারা তাদের জবাইকৃত পশুর অর্ধেক আমাদের আদর্শ পঞ্চায়েতের মাঠে দিয়ে যাবেন। আর বাকি অর্ধেক রাখবেন তাদের নিজেদের জন্য। এছাড়া সে জবাইকৃত পশুর চামড়াও পঞ্চায়েতে জমা দিবেন। এভাবে ৬০ বা ৭০টি পরিবারের অর্ধাংশ করে মাংস জমা হওয়ার পর নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে তা কেটে ভাগ করা হবে। 

দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী আদর্শ পঞ্চায়েত সর্দারদের একাংশ। (ফাইল ছবি)

অর্থ্যাৎ পঞ্চায়েতে মাংস দেয় ৬০ বা ৭০টি পরিবার। কিন্তু ভাগ হবে পঞ্চায়েতের ২৫০টি পরিবারের মধ্যে। এছাড়া আরেকটি বড় ভাগ দেয়া হবে গরীব ও দুস্থদের মাঝে। অর্থাৎ এ পঞ্চায়েতের বা সমাজের যিনি কোরবানি দিয়েছেন তিনিও মাংস পান এবং যিনি কোরবানি দেননি তিনিও মাংস পান। অর্থাৎ এ পঞ্চায়েতের সব ঘরেই সমপরিমাণ কোরবানির মাংস পৌঁছায়।

অন্যদিকে, পঞ্চায়েতের আরেক সর্দার হাজী মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, জবাইকৃত পশুর চামড়াগুলো মাদ্রাসায় দিয়ে দেওয়া হবে। এর বিনিময়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো রকম মূল্য নেওয়া হবে না।

এছাড়া পঞ্চায়েতের সদস্য হতে কী করতে হয় জানতে চাইলে আরেক সর্দার হাফেজ তাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে দু’টি পদ্ধতিতে আমরা প্রাথমিক বাছাই সম্পন্ন করি। যিনি অত্র এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছেন অথবা বৈবাহিক সূত্রে। পঞ্চয়েতের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করলে প্রাথমিক যাছাই বাছাই শেষে পঞ্চায়েত সর্দাররা সিদ্ধান্ত নেন। তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এ বছর নতুন সদস্য যোগ করা হয়েছে। ঠিক তেমনই সদস্য বাদ দেওয়া হয়েছে।

কিউএনবি/অনিমা/২৫ জুন ২০২৩,/দুপুর ১২:৫৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit