ডেস্ক নিউজ : মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সরেজমিনে হিলি স্থলবন্দর ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। সারা মাস জুড়ে দাম স্বাভাবিক থাকলেও আমদানি কমের অজুহাতে হিলিতে রমজানের শুরুতেই বেড়েছে ছোলাসহ নিত্যপণ্যের দাম। এতে পণ্য কিনতে এসে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও পাইকাররা। বন্দরে প্রতিকেজি ছোলাসহ বিভিন্ন বুট জাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। অথচ রমজান শুরুর একদিন আগেও ছোলা বুট ছিল ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা কেজি। যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা কেজিতে। এছাড়া উন্নতমানের মসুর ডাল কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৪ টাকায়। আর খেসারি ডাল কেজিতে ২ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ টাকা কেজিতে। পাশাপাশি গোখাদ্য তৈরিতে ব্যবহারিত ভুট্টা কেজিতে বেড়েছে ১ টাকা ও ভূষি ৫ টাকা কেজিতে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন আমদানিকারকরা। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন মূলত আমদানি কম হবার কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, রমজানের আগে বন্দরে প্রচুর পণ্য থাকায় দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ছিল। তবে হঠাৎ করেই নিত্যপণ্যের দাম এখন আকাশচুম্বী। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ছোলা বুটের দাম। বন্দরে পর্যাপ্ত ট্রাক থাকার পরও সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম ও ট্রাক ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে। আর হিলি কাস্টমসের তথ্য বলছে, চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত ভারতীয় ৩ হাজার ৬৯ ট্রাকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৭৪২মেট্রিক টন। যার মধ্যে ১ হাজার ৪৯৮ ট্রাকে ছোলা, মসুর, খেসারি ডাল ও গো-খাদ্যের জন্য ভূষি, ভুট্টার আমদানি হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৯৬ মেট্রিক টন।
আগের বছরগুলোতে স্থানীয় অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন পণ্যের মজুত করতো। এতে করে বাড়ত পণ্যের দাম। তবে এ বছর রমজানে সরকার ও প্রশাসনের কড়াকড়িতে ব্যবসায়ীরা পণ্যের মজুত না করলেও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে দেশে হঠাৎ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে বলে অভিযোগ আমদানিকারকদের। পণ্য আমদানিকারক যতিশ চন্দ্র বলেন, বাংলাদেশে পণ্যর চাহিদা বাড়লেই সুযোগ বুঝে বিভিন্ন মৌসুমে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়ায়। এতে দেশীয় ব্যবসায়ীদেরকেও বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর-রশিদ বলেন, রমজানের একদিন আগে ভারত বুট জাতীয় পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। এর প্রভাবে দেশের বাজারে বেড়েছে ছোলা ও অন্যান্য বুটের দাম। রমজান উপলক্ষে প্রচুর এলসি হওয়ায় নতুন করে আর দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পণ্যের দাম না বাড়াতে তাগাদা দেয়া হচ্ছে। এতে নতুন করে দাম না বাড়ার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন তিনি। দাম বাড়ার কারণ ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর এ আলম। তিনি বলেন, কেউ যাতে দাম বাড়াতে না পারে সেজন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া পণ্য মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
কিউএনবি/আয়শা/২৮ মার্চ ২০২৩,/বিকাল ৫:২৪