বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫৩ অপরাহ্ন

রাষ্ট্রপতি পদে রাজনীতিবিদ চায় আ. লীগের বড় অংশ

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১৩১ Time View

ডেস্ক ‍নিউজ : দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দলীয় কোনো নেতাকেই চান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা। দলের তিনজন নেতার নাম রাষ্ট্রপতি পদে আলোচনায় রয়েছে। এ ছাড়া একজন সাবেক সচিবের নামও জোরালো আলোচনায় রয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ওই নেতারা জানান, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এখনো রাষ্ট্রপতি হিসেবে কাকে চান সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তের কথা দলের নেতাদের জানাননি। ফলে এখনো একাধিক নেতার নাম নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে শেষ পর্যন্ত দলীয় কোনো নেতাকেই রাষ্ট্রপতি করার সম্ভাবনা বেশি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সময়ে আমরা প্রতিবারই দলের ভেতর থেকে কাউকে রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দিয়েছি। কোনো রাষ্ট্রদূত বা প্রফেসরকে মনোনয়ন দিইনি। আমাদের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চাওয়া হলো, রাজনীতিবিদদের মধ্য থেকেই রাষ্ট্রপতি আসবেন।’রাষ্ট্রপতি পদে দলের মধ্যে কাদের নিয়ে আলোচনা রয়েছে, জানতে চাইলে কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘আমি স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক আমলা মসিউর রহমানের নাম শুনেছি। শেখ হাসিনা কাকে রাষ্ট্রপতি করবেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’

রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের তিন নেতার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা আছে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে নিয়ে। তিনি বর্তমানে তৃতীয় মেয়াদে সংসদ সদস্য। তাঁর বাবা প্রয়াত রফিকুল্লাহ চৌধুরী ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে তাঁর সচিব ছিলেন। শেখ হাসিনার বিশেষ আস্থাভাজন হিসেবে শিরীন শারমিন চৌধুরীর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে দলের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের একটি অংশ। নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন দেশের প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি।

শিরীন শারমিন পেশায় একজন আইনজীবী ছিলেন। তিনি যুক্তরাজ্য থেকে সাংবিধানিক আইন ও মানবাধিকার বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৩ সালে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে মানবিক বিভাগে সম্মিলিত মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। ১৯৮৫ সালে এইচএসসিতে ঢাকা বোর্ডের সম্মিলিত মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।

সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিরীন শারমিন চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি করার ক্ষেত্রে একটিই দ্বিধা রয়েছে। তা হলো উনার বয়স। বর্তমানে তাঁর বয়স ৫৭ বছর। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণত একটু সিনিয়র নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপতি পদে আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন। তিনি চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। খনিবিদ্যায় প্রকৌশলী এই নেতা ছয়বারের সংসদ সদস্য। ১৯৭০ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচন শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরও তিনি আওয়ামী লীগের মূলধারা থেকে বিচ্যুত হননি।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের একটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি অংশ মোশাররফ হোসেনকে রাষ্ট্রপতি করার পক্ষে জোরালো চেষ্টা করছে। দলের সভাপতির কাছে এ বিষয়ে একাধিক নেতা সুপারিশও করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতিও মোশাররফ হোসেনের দলীয় আনুগত্য ও আদর্শে অবিচল থাকার বিষয়ে নিঃসন্দেহ। কিন্তু তাঁর ৮০ বছর বয়স এবং শারীরিক অবস্থার বিষয়টি নিয়ে খানিকটা দ্বিধায় আছেন শেখ হাসিনা।

জানতে চাইলে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার সঙ্গে এ বিষয়ে কেউ কথা বলেনি। তবে দল বা নেত্রী যদি আমাকে বলেন তাহলে কি ফেলতে পারব?’রাষ্ট্রপতি পদে আলোচনায় থাকা আরেক নেতা হলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি তৃতীয় মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দুর্দিনে দলকে সংগঠিত করতে ওবায়দুল কাদেরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার পর ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, কিছুদিন আগে ওবায়দুল কাদেরের রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে দলের মধ্যে খুব জোরালো আলোচনা ছিল। তবে অজ্ঞাত কারণে এখন অনেকটাই কমে এসেছে। এর পরও তাঁকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

সাবেক আমলাদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে একটি নামই আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে বারবার আলোচিত হচ্ছে। তিনি হলেন সাবেক সচিব মসিউর রহমান। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা মনে করেন, মসিউর রহমানই এবার রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। সিএসপি কর্মকর্তা মসিউর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।

সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মসিউর রহমান রাজনীতিবিদ নন। তিনি একজন আমলা। তার পরও তাঁর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনার কথা আমরা জোরালোভাবেই শুনছি।’

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/সকাল ১১:০৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit