সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন

ঝালকাঠির প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, হয়রানির অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৩৩০ Time View

গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠি শহরের কুমারপট্টি এলাকায় মেসার্স ‘সাবিহা কেমিক্যাল ওয়ার্কস’ নামে একটি কোম্পানির নাম ও লাইসেন্স নম্বর ব্যবহার করে অবৈধভাবে বাড়ির ভেতরে নকল জর্দা কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। এবং সেখানে থাকা শ্রমিকলীগ ঝালকাঠি জেলা কার্যালয়ে তালা মেরে দেওয়া হয়।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ওই কোম্পানির মালিক শামীম আহম্মেদ প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় তার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা ও বহুমুখী চাপ সৃষ্টি করেছে। সেই সাথে কোম্পানিটির মালিকানা নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, অভিযোগ করে শামীম আহম্মেদ। জেলা শহরের এই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন- অবৈধ ভাবে মালামাল বহন করতে বাধা দিলে প্রতিপক্ষরা ঝালকাঠি থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেছে। শামীম আহম্মেদের বড় ভাই শামসুল হক মনুসহ একটি চক্র এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত বলে অভিযোগে বলা হয়।

জানা গেছে, এসব ঘটনায় ব্যবসায়ী শামীম আহম্মেদ ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক, ঝালকাঠি পুলিশ সুপারসহ ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত রহস্যজনক কারণে প্রতিকার পাচ্ছেন না। এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ বা তাকে আইনি সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে না।

অভিযোগে জানা গেছে, ২৯ ডিসেম্বর সাবিহা কেমিক্যাল ওয়ার্কসের নাম ব্যবহার করে শামসুল হক মনু ও তার লোকজন অবৈধভাবে গাড়িযোগে মালামাল মজুত করতে ছিলেন। জাতীয় শ্রমিকলীগ ঝালকাঠি জেলা শাখার অফিসে শামীম আহম্মেদের রাখা মালামাল লুটে নিয়ে যায়। এমন সময় শামীম আহম্মেদ বাধা দিলে এবং তার শ্রমিকলীগ অফিসে কেন তালা লাগানো হয়েছে জানতে চাইলে শামসুল হক মনু পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে একটি ছক সাজিয়ে থানায় অভিযোগ করেন। এবং বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে এই ব্যবসায়ীকে হয়রানি করছে।

শামীম বলেন- ভাই সামসুল হক মনু তার সুপরিচিত কোম্পানির নাম ভাঙিয়ে নিজেই আলাদাভাবে এই নকল জর্দা উৎপাদন ও বাজারজাত করছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভাইয়ের লাইসেন্স নম্বর ও লেভেল ব্যবহার করে এই অবৈধ বাণিজ্য করছেন।এ ঘটনায় কোম্পানির প্রকৃত মালিক মো. শামীম আহমেদ ঝালকাঠির জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ভ্যাট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিতভাবে অবহিত করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে শামসুল হক মনুর বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এর আগে কোম্পানিটির মালিক মো. শামীম আহমেদ তাঁর ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ এনে ঝালকাঠি সদর থানায় গত ৮ মার্চ একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পাশাপাশি তিনি ঝালকাঠির আদালতে মামলাও করেছেন, যা পুলিশে তদন্তধীন রয়েছে।দেশের জর্দা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ঝালকাঠির মেসার্স সাবিহা কেমিক্যাল ওয়ার্কস (ট্রেড লাইসেন্স নম্বর ০৩৫৮০০) একটি শীর্ষ জর্দা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করেন ঝালকাঠির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম সাহাবউদ্দিন মিয়া। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই কোম্পানি শাহী জর্দা, জাফরানী জর্দা ও সুরভী জর্দা উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে। এ কোম্পানির বার্ষিক টার্ণওভার প্রায় শত কোটি টাকা।

অপরদিকে ওয়ারিশসূত্রে এ প্রতিষ্ঠানের মালিক শামসুল হক মনু নগদ টাকা নিয়ে তাদের অংশ শামীম আহম্মেদের বিক্র করেন। ঝালকাঠি নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এই হেবানামা সম্পাদিত ও রেজিস্ট্রি করা হয়। হেবানামায় উল্লেখ করা হয়, মেসার্স সাবিহা কেমিক্যালের পরিচালক, পরিচালনাকারী মো. শামীম আহাম্মেদ। তাই মো. সামসুল হক মনুর নামে থাকা মেসার্স সাবিহা কেমিক্যাল ওয়ার্কসের সকল প্রকার লাইসেন্স কিংবা মেসার্স সাবিহা কেমিক্যালস ওয়ার্কসের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ভ্যাট, সনদপত্র, পরিবেশগত সনদপত্র, কারখানা লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, মার্কেটিং সনদপত্র ও ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য সকল প্রকার ব্যবসায়িক প্রমাণপত্রের সকল কিছু থেকে নাম কর্তন করে মো. শামীম আহমেদের নাম হবে বলে হলফনামা সম্পাদনা করা হয়। এমনকি তিনি হলফনামায় মেসার্স সাবিহা কেমিক্যাল ওয়ার্কসের প্রোপ্রাইটর, মালিকানা, সত্তাধিকারী সামসুল হক মনু মিয়ার স্থলে যাবতীয় কাগজপত্র মো. শামীম আহমেদ হবে, এতে তাঁর কোন আপত্তি নেই বলেও জানান।

যদি ভবিষ্যতে তাঁর কোন ওয়ারিশগণ আপত্তি করে কিংবা কোথাও কোন অভিযোগ করেন তা সর্বত্রই অগ্রাহ্য বলে গণ্য হবে। এই হলফনামায় মৃত সাহাব উদ্দিন মিয়ার তিন ছেলে মো. সামসুল হক মনু ঝালকাঠি জজ আদালতের নোটারী পাবলিক অ্যাডভোকেট মানিক আচার্যের সম্মুখে বসে স্বাক্ষর করেন।এরপর মো. শামীম আহমেদ মেসার্স সাবিহা কেমিক্যাল ওয়ার্কসের পূর্ণ মালিকানা পেয়ে নয়া উদ্যোমে কোম্পানি পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু গত প্রায় এক বছর আগে মো. সামসুল হক মনু কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে তাঁর নিজ বাড়ি শাহী মহলের ভেতরে আবাসিক এলাকায় মেসার্স সাবিহা কেমিক্যালস ওয়ার্কস নামে একটি কারখানা ও অফিস স্থাপন করে শাহী স্পেশাল জাফরানী জর্দা উৎপাদন করে বাজারজাত করতে শুরু করেন। এই অবৈধ কারখানা থেকে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টাকার জর্দা বিক্রি করা হচ্ছে।

দীর্ঘদিন শামীম আহম্মেদ সুনামের সাথে ব্যবসা করলেও শামসুল হক মনু তার অংশ বিক্রি করেও একই নামে অবৈধ ব্যবসা শুরু করে। এমনকি শামীম আহম্মেদকে চাপ প্রয়োগ করে পুনরায় অবৈধ ভাবে কোম্পানির মালিক হওয়ার চেষ্টা চালান।এ নিয়ে দন্ধ চরম আকারে ধারণ করলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আইনি লড়াই চূড়ান্ত না হওয়ার আগেই বিভিন্ন অপকৌশলে শামীম আহম্মেদকে একের পর এক হয়রানি করে আসছেন। শামীম আহম্মেদ প্রশাসনের কাছে তদন্ত করে কাগজপত্র দেখে আইনি সহায়তার দাবি জানান।এ ব্যাপারে শামসুল হক মনুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।’

কিউএনবি/ অনিমা/ ৩০.১২.২০২২/রাত ৮.৪১

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit