শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন

আল কোরআনে ব্লু-ইকোনমি

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৯৪ Time View

ডেস্ক নিউজ : ব্লু-ইকোনমি হলো সাগর ও সাগরকেন্দ্রিক সম্পদকে টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করার নাম। সাগর মহান আল্লাহর অগণিত নিয়ামতের বিশাল ভাণ্ডার। মহান আল্লাহ যার মধ্যে তাঁর বান্দাদের জন্য বিপুল সম্পদ রেখে দিয়েছেন। তা ছাড়া মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহনের জন্যও সমুদ্রপথ প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মহান আল্লাহ তাঁর এই মহানিয়ামতের ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমাদের (প্রকৃত) প্রতিপালক তো তিনিই, যিনি সমুদ্রে তোমাদের জন্য সুস্থিরভাবে নৌযান পরিচালনা করেন, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার, তিনি তোমাদের প্রতি বড়ই দয়ালু। ’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৬৬)

উল্লিখিত আয়াতে মহান আল্লাহ সামুদ্রিক সফরের সাহায্যে যেসব অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ফায়েদা লাভ সম্ভব, সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন। সাগরে জাহাজ চলাচলের সুবিধা ভোগের মাধ্যমে মানুষ যেমন বহু কল্যাণ ভোগ করছে, তেমনি এখানকার মাছ ও অন্যান্য প্রাণী, সুমদ্রে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মূল্যবান মণি-মুক্তা, খনিজসম্পদও বিশ্ব অর্থনীতির চাকা গতিশীল করেছে। ওশান ইকোনমি অ্যান্ড ইনোভেশনের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, বিশ্বের ৯০ ভাগেরও বেশি ব্যবসা-বাণিজ্য সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল। দেড় হাজার বছর আগে মহান আল্লাহ কোরআনের মাধ্যমে মানুষকে জানিয়েছিলেন, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সাগর কতটা গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে, সে নৌকায় যা সমুদ্রে মানুষের জন্য কল্যাণকর বস্তু নিয়ে চলে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৬৪)

এখানেই শেষ নয়, বর্তমান পৃথিবীর প্রযুক্তির অন্যতম চাবি ইন্টারনেট সেবা সাগরের ওপর নির্ভরশীল। যা মানুষের উন্নত জীবনযাত্রায় অভূতপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। গতানুগতিক মহাকাশের স্যাটেলাইট যোগাযোগ পদ্ধতির বিকল্প হিসেবে সাগরতল দিয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশ কিংবা এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে পর্যন্ত যে বিস্তৃত অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে তাকে আমরা সাবমেরিন কেবল বলে থাকি। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ মানুষকে যেমন অসংখ্য নিয়ামত দিয়ে রেখেছেন, এগুলো থেকে উপকৃত হওয়ার বিভিন্ন পন্থাও বাতলে দিয়েছেন। যা অন্য প্রাণীদের দেননি। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তিনিই সাগরকে অধীন করেছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তাজা গোশত আহার করতে পার এবং যাতে তা থেকে আহরণ করতে পার রত্নাবলি, যা তোমরা ভূষণরূপে পরিধান কর; এবং তোমরা দেখতে পাও, ওর বুক চিরে নৌযান চলাচল করে এবং তা এ জন্য যে তোমরা যেন তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং তোমরা যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ’  (সুরা : নাহল, আয়াত : ১৪)

এই আয়াতেও মহান আল্লাহ মানবজাতিকে সাগরকেন্দ্রিক অর্থনীতির ধারণা দিয়েছেন। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের মতে, ব্লু-ইকোনমি হলো, সাগরের সম্পদকে স্থিতিশীলভাবে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, উন্নত জীবন মান এবং স্বাস্থ্য ও সাগরের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করে কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করা। সহজ ভাষায় বললে, ব্লু-ইকোনমি সাগরের ও উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ব্যবহারসংক্রান্ত একটি বিষয়, যার সঙ্গে জ্বালানি, জাহাজ চলাচল, মত্স্য শিকার, খনি থেকে সম্পদ আহরণ এবং পর্যটনকে নির্দেশ করে।

এ ছাড়া মহান আল্লাহ সাগরকে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস বানিয়েছেন। তার উত্তাল ঢেউকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ দেওয়া হয়। পবিত্র কোরআনের সুরা নুরের ৪০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ভিন্ন একটি প্রসঙ্গে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের উপমা দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘অথবা (তাদের আমলসমূহ) গভীর সমুদ্রে ঘনিভূত অন্ধকারের মতো, যাকে আচ্ছন্ন করে ঢেউয়ের ওপরে ঢেউ, তার ওপরে মেঘমালা। অনেক অন্ধকার; এক স্তরের ওপর অপর স্তর। কেউ হাত বের করলে আদৌ তা দেখতে পায় না। আর আল্লাহ যাকে নুর দেন না তার জন্য কোনো নুর নেই। ’ (সুরা নুর, আয়াত : ৪০) এভাবেই মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য পৃথিবীর সর্বত্র অসংখ্য কল্যাণ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রেখেছেন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২১ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ২:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit