বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে দুইদিন ব্যাপি ‘উদ্ভাবনী জয়োল্লাসে স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগানে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা শুরু হয়েছে। শনিবার থেকে জেলা প্রশাসন এই মেলার শুরু হয়। শেষ হবে রোববার। মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো শাহ্গীর আলম। প্রধান আলোচক ছিলেন জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার। বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ,মেয়র নায়ার কবীর। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিয়াউল হক মীর।
জেলা প্রশাসক মো. শাহ্গীর আলম বলেন, তফসিল অফিসেও সকল সেবায় প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। এতে বাড়তি টাকাও দিতে হচ্ছে না। বাড়িতে বসেই স্বল্প সময়ে কাজ করা যায়। যোগদানের গত ১০ মাসে কাগজের ব্যবহার কমেছে। ই-ফাইলের ব্যবহার বেশি হয়। জেলার ৪৫টি কার্যালয় ই-ফাইল ব্যবহার করছে। এর ব্যবহার আরো বাড়বে। শিশুদের মুঠোফোনের প্রতি আসক্তির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, শিশুদের মুঠোফোন দেন কিন্তু সুনির্দিষ্ট সময়ে। পুরো চাপ দেয়া যাবে না। জাতি হিসেবে আমরা প্রযুক্তি নির্ভর হবে, তবে শিশুদের নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রোবোটিক্স থেকে শুরু করে আইসিটি মেলা করার চিন্তা রয়েছে। আইটি উদ্যোক্তা তৈরির জন্য আমরা কাজ করব। আইসিটির মাধ্যমে জ্ঞানের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছা সম্ভব। তবে এর অপব্যবহার রিভলবারের চেয়ে ভয়ানক। প্রযুক্তির সদ্ধ্যব্যবহার করতে হবে।
ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় আশুগঞ্জের সরকারি হাজী আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয় বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল আলম, ইমতিয়াজ খন্দকার, অনিক হোসেন ও আরিফ মিয়া মাইক্রো কন্ট্রোলার ডিভাইস ও সি প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে আধুনিক হুইল চেয়ার নিয়ে হাজির হন। এর সার্কিট ডিজাইন ও প্রোগ্রামিং তারা নিজেরাই করেছে। শিক্ষার্থীরা জানান, পৃথিবীর প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ শারীরিকভাবে অক্ষম। তাদের মধ্যে হীনমন্যতাবোধ কাজ করে। তাই তারা যেন অন্যের সাহায্য হাত-পা ছাড়াই হুইল চেয়ারে বসে নিজেদের কাজ করতে পারেন, এজন্যই এই আধুনিক হুইল চেয়ার আবিস্কার করেছি। প্রাথমিকভাবে ২০হাজার টাকা হলেই এই আধুনিক হুইল চেয়ার প্রস্তুত করা সম্ভব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সারোয়ার হোসাইন,মাহবুবুর রহমান খাদেম, ফুয়াদ মুজিব ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র মো. জুয়েল ডিজিটাল ভিলেজ অর্থাৎ গ্রাম হবে শহর এই উদ্ভাবনী ভাবনা নিয়ে হাজির হন। তাদের সহযোগিতা করছেন কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান, উদ্ভিদ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক মনির হোসেন ও রসায়নের প্রভাষক মেহেদী হাসান। শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের প্রকল্পে মধ্যে রয়েছে আইটি, স্বাস্থ্য, আধুনিক ফার্মিং, ই-ব্যাংকিং, ই-ফিশারিজ। অ্যাপস ও অনলাইনের মাধ্যমে কৃষি পণ্যসহ বিভিন্ন কারুকাজ বিক্রি করা যাবে।
এছাড়া ইট তৈরির কালো ধোঁয়া পাইপের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে তরল কার্বন ডাই অক্সাইড বাজারজাতকরণের উদ্ভাবনী ভাবনা নিয়ে নবীনগর উপজেলার সুফিয়াবাদ শাহ্ সুফি সাইয়্যেদ আজমত উল্লাহ (র) ফাজিল মাদ্রাসা ও ডিজিটাল সিটির ভাবনা নিয়ে আখাউড়ার নাছরীননবী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হাজির হন। মেলায়
প্যাভলিয়ন-১ ও ২ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তর ও প্যাভলিয়ন-৩ বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেন। মোট ৭৫টি স্টল রয়েছে মেলায়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিয়াউল হক মীর বলেন, মেলায় প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারকারীদের পুরস্কৃত করা হবে।
কিউএনবি/আয়শা/১৯ নভেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:৩৩