আন্তর্জাতিক ডেসক্ : ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী সাইরাস মিস্ত্রি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার দুই মাস পর পুলিশ একজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। মামলায় সাইরাসের সহযাত্রী এবং মুম্বাইয়ের শীর্ষস্থানীয় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অনাহিতা পান্ডোলকে অপরাধমূলক হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। দূর্ঘটনার সময় তিনিই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
সাইরাস মিস্ত্রি বিখ্যাত শাপুরজি পালোনজি গ্রুপের বংশধর এবং টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের মহারাষ্ট্রের পালঘরে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। গাড়িটি রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা দিলে তার বন্ধু জাহাঙ্গীর পান্ডোলও মারা যান। এই দূর্ঘটনায় গাড়ির অন্য দুই আরোহী অনাহিতা (৫৫) এবং তার স্বামী দারিয়াস (৬০) গুরুতর আহত হয়েছিলেন। সাইরাসের রূপালী রঙের মার্সিডিজ গাড়িটি ডা. অনাহিতা পান্ডোল চালাচ্ছিলেন এবং দুর্ঘটনার সময় সাইরাস পেছনের সিটে বসে ছিলেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ‘প্রতিবেদন এবং তদন্তের ভিত্তিতে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে দুর্ঘটনাটি বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে হয়েছিল। ‘ তাই ডা. অনাহিতা পান্ডোলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ ঘটনায় অনাহিতার স্বামী দারিয়াস পান্ডোলের জবানবন্দি রেকর্ড করে মামলাটি নথিভুক্ত করেছে পুলিশ। গাড়ি দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া দারিয়াস পান্ডোলকে গত মাসের শেষের দিকে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘দারিয়াস পান্ডোল তার বিবৃতিতে বলেছেন, তারা মুম্বাই যাওয়ার সময় তার স্ত্রী অনাহিতা মার্সিডিজ-বেঞ্জ গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। তাদের গাড়ির সামনে আরেকটি একটি গাড়ি ছিল। সেই গাড়িটি তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় লেনে চলে গিয়েছিল এবং অনাহিতাও একইভাবে তা অনুসরণ করার চেষ্টা করেছিলেন। ‘
অনাহিতা পান্ডোল এখনো সুস্থ না হওয়ায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
২০০৬ সালে টাটা সন্স বোর্ড থেকে সাইরাসের বাবা পালোনজি মিস্ত্রি অবসরের পর তিনি টাটা বোর্ডে যোগ দেন। ছবছর পর ২০১২ সালে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান পদ থেকে রতন টাটা সরে গেলে দায়িত্ব পান সাইরাস। ২০১৬ পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে ছিলেন সাইরাস। ওই বছরেই টাটা সন্স বোর্ড তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে নটরাজন চন্দ্রশেখরনকে সেই দায়িত্ব দেয়।
সাইরাস মিস্ত্রির স্ত্রী রোহিকা চাগলা। তার দুই ছেলে রয়েছে। একজন হলেন ফিরোজ মিস্ত্রি ও অপরজন জাহান মিস্ত্রি। অনেকেই অবাক হতে পারেন যে, সাইরাস প্রকৃতপক্ষে একজন আইরিশ নাগরিক। কারণ, তার বাবা পালোনজি আইরিশ নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন। তবে ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে সাইরাসের বিশেষ অনুমতি রয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি
কিউএনবি/আয়শা/০৫ নভেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/রাত ৯:১৮