আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিতে ব্রিটিশ তরুণ-তরুণীদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। এই সপ্তাহে ‘এ লেভেল’ পরীক্ষার ফলাফল বের হওয়ার পর এমনই বলছেন অনেকে। ১৪ আগস্ট বিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ডেইলি মেইল বলছে, সর্বোচ্চ মর্যাদার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়- অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজে প্রথমবারের মত প্রতি দশজনের মধ্যে চারজন ব্রিটিশ আবেদনকারী বাদ পড়ছে।
এদিকে দ্যা সানডে টাইমস উচ্চশিক্ষা বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বলছে, কিছু প্রতিষ্ঠান চীন ও ভারতীয় শিক্ষার্থীদের দেওয়া চড়া টিউশন ফি’র দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এই বিদেশিরা বছরে প্রায় চব্বিশ হাজার পাউন্ড টিউশিন ফি দিয়ে থাকে- যা ব্রিটিশ শিক্ষার্থীদের তুলনায় প্রায় তিনগুণ। যুক্তরাজ্যে রাসেল গ্রুপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখা গেছে স্নাতক পর্যায়ে প্রতি চারজন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন বিদেশি।
ইউনিভার্সিটিস অ্যান্ড কলেজেস অ্যাডমিশনস সার্ভিস (ইউসিএএস) এর তথ্য বিভাগের প্রাক্তন প্রধান মার্ক কর্ভার বলেন, বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে কঠিন প্রতিযোগিতা হলো একটি ডিগ্রী গ্রহণ করা, বিশেষ করে যদি তা হয় যুক্তরাজ্যের প্রথম সাড়ির কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
তিনি আরও যোগ করেন, বাঁছাই করা কিছু বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীদের থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তিতে বেশি আগ্রহি। কারণ ব্রিটিশ ছাত্রছাত্রীরা বিদেশিদের মত চড়া টিউশিন ফি প্রদান করে না। দেশি এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের বছর প্রতি টিউশন ফির ব্যবধান প্রায় পনেরো হাজার পাউন্ড। সে হিসাবে একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী থেকে তিন বছরের কোর্সে প্রায় পঞ্চাশ হাজার পাউন্ড বেশি আয় করা সম্ভব। আবার যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীদের খরচ মেটাতে যেয়ে তারা ফিও বাড়াতে পারছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাধ্য হয়েই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দিকে ঝুঁকছে।
এদিকে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিকস -এর এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় মোট শিক্ষার্থীর সত্তর শতাংশই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী যেখানে এডিনবার্গ এবং কিংস কলেজ লন্ডনেই রয়েছে চল্লিশ শতাংশ। এছাড়া ম্যানচেস্টার মেট্রপলিটন সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছে।
অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, ধীরে ধীরে করোনা প্রাদুর্ভাবের আগের নিয়মে পরীক্ষা শুরু করার পর যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ হতে শুরু করেছে। গত জুন মাসে ইউসিএএস এর প্রধান নির্বাহী ক্লেয়ার মার্চেন্ট সতর্ক করে বলেছিলেন, সামনের বছর পরিস্থিতি আরও প্রতিযোগিতামূলক হবে। উনপঞ্চাশ শতাংশ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী নন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশনের একজন মুখপাত্র বলেন, প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ পেতে সবসময়ই প্রতিযোগিতা ছিল, এ বছরও ব্যতিক্রম কিছু নয়। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ থাকে যেগুলোও কম মর্যাদাপূর্ণ নয়।
সূত্র: ডেইলি মেইল
কিউএনবি/আয়শা/১৫ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:২৪