বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন

লোডশেডিং চলতে পারে কত দিন, জানালেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২
  • ২৫০ Time View

ডেস্ক নিউজ : ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে রাজধানীসহ সারা দেশ। একইসঙ্গে গ্যাসের সংকটও দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সারা দেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাস পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভাও হয়েছে। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, চলমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট কাটিয়ে উঠতে কমানো হতে পারে সরকারি অফিস–আদালতের সময়। করোনা মহামারির সময়ের মতো আবার চালু হতে পারে হোম অফিস। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। সারা দেশে বন্ধ করা হবে আলোকসজ্জা। এখন দেশজুড়ে যে লোডশেডিং চলছে, তা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে।

করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের সময়কার অফিসসূচিতে ফেরার সুপারিশ করা হয়েছে ওই সভায়। এর আগে গত ৫ জুলাই এক অনুষ্ঠানে লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক সময় নির্ধারণ করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি চান, কখন কোথায় লোডশেডিং হবে- সেই সময় নির্ধারণ করার। আজ প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, লোডশেডিং স্বাভাবিক হতে আরও আড়াই মাস সময় লাগবে। সেপ্টেম্বর নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। ওই সময় বেশ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে। কোথায় কত ঘণ্টা লোডশেডিং করা হবে, সেটি আগাম জানানোর যে দাবি উঠেছে- তা বাস্তবায়ন কঠিন বলে জানিয়েছেন এই উপদেষ্টা।

সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, কোন এলাকায় কত ঘণ্টা লোডশেডিং হবে- তা আগাম জানানো যাবে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘কোন এলাকায় কত ঘণ্টা লোডশেডিং করা হবে, তার জন্য ডিপিডিসি একটি অ্যাপ তৈরি করছে। এটা এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত হবে। অ্যাপসটি হয়ে গেলে কর্মকর্তারা সেখানে ঢুকে জানতে পারবেন। তবে সাধারণ মানুষকে তাৎক্ষণিক এ তথ্য জানানো কঠিন হবে।’

সেপ্টেম্বরের মধ্যে কীভাবে জ্বালানি সংকট কমে আসবে- তার ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ওই সময়ের মধ্যে আমদানি থেকে কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট এবং পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তখন লোডশেডিং কমে আসবে।

সভার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে ব্রিফিংয়ে তৌফিক–ই–এলাহী চৌধুরী বলেন, ‘জ্বালানি সাশ্রয়ে আজকের বৈঠকে বেশ কিছু পরামর্শ উঠে এসেছে। এসব পরামর্শ আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি অফিসের সময় সকাল নয়টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত করা, বিয়ের অনুষ্ঠান সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে শেষ করা। এসির (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার ওপরে ওপরে রাখা। আলোকসজ্জা করা যাবে না। রাত আটটার মধ্যে শপিংমল বন্ধ করা। ঘরে বসে কাজ করা যায় কি না, সে বিষয়টিও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। মসজিদ–মন্দিরে বিদ্যুৎ ও এসি ব্যবহার কমিয়ে আনা। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে বিদ্যুতের চাহিদা ৫০০ মেগাওয়াট কমে আসবে। বিদ্যুত ও জ্বালানি সাশ্রয় হবে। লোডশেডিং হবে না।’

জ্বালানি খাতে সরকারের আমদানিনির্ভরতার কারণেই চলমান সংকট কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা এ কথা বলছেন, তারা ঠিক বলছেন না। কারণ স্থানীয়ভাবে গ্যাস উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসে, তখন গ্যাসের দৈনিক উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৮০০ এমএমসি। সেটি ১ হাজার ৬৪৪ এমএমসি বেড়েছে। গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে আরও নতুন কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে। পেট্রোবাংলা গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে।

‘জাপানের মতো দেশে লোডশেডিং হচ্ছে। যুক্তরাজ্য, জার্মানি অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর সব উন্নত দেশে জ্বালানি সংকটের অভিঘাত পড়েছে। তাদের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশ বেশ ভালো অবস্থানে আছে। তবু আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে গ্যাস-সংযোগ ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার অনেকের বকেয়া বিল পড়ে আছে। অবৈধ গ্যাস-সংযোগের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে যাচ্ছে সরকার। যাদের বিল বকেয়া আছে, সে টাকা আদায়ে কঠোর হবে সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান। 

আর সভায় ছিলেন- পেট্রোবাংলা, বাপেক্স, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৭ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৬:২৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit