এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর) যশোরের চৌগাছায় হাকিমপুর ইউনিয়নের এবিসিডি (আরাজীসুলতানপুর, বকসিপুর, চাকলা ও দেবিপুর) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজাহান কবীরের দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। ৫ জুলাই মঙ্গলবার থেকে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক গঠিত কমিটি তার দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্ত কমিটি প্রধান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ¯œাতক পাশের আগেই নিজের স্ত্রীকে ভুয়া নিয়োগ দেখানো। পরে রেজুলেশন জালিয়াতি করে ফের স্ত্রীকে নিয়োগ দেয়া, অন্য একজন শিক্ষককে নিয়োগ দিয়ে এমপিও করানোসহ নানা অভিযোগ উঠে আসে। এ ব্যাপারে ১২ জুন ২০২২ ইং বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি এক জরুরি সভা করেন। সভায় একই ইউনিয়নের যাত্রাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুল আলম তুহিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করেন। একই সাথে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত ও অবৈধভাবে নিয়োগ দেখানো দুই শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করার জন্য আবেদন শিক্ষা অধিদফতরে প্রেরণ করেন। এ সংবাদটি বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
তবে কমিটির প্রধান আরিফুল আলম তুহিন তদন্ত করতে অপারগতা প্রকাশ করায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি পূনর্গঠন করা হয়। মঙ্গলবার এই তদন্ত কমিটি বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। এছাড়া মাঠচাকলা গ্রামের বাসিন্দা মামুন কবীর শিক্ষা অধিদফতর, যশোরের জেলা প্রশাসক, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে তার দুর্নীতির প্রমাণপত্রসহ একটি লিখিত আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে যশোর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম আজম চৌগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম রফিকুজ্জামানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। সেই কমিটি ৬ জুলাই বুধবার সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবেন। এছাড়া যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানাকে একটি তদন্ত কমিটি করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেই প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু করায় দৌড় ঝাপ শুরু করেছেন প্রধান শিক্ষক শাহাজাহান কবীর। তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। এমনকি গত ২ জুলাই গভীর রাতে তিনি ও তার অভিযুক্ত স্ত্রী অভিযোগকারী মামুন কবীরের বাড়িতে গিয়ে তার অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। অভিযোগ প্রত্যাহার বিনিময়ে অভিযোগকারীকে ২০ লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তাবও দেন বলে জানান মামুন কবীর। বিষয়টি তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও অবহিত করেছেন। চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/০৫ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:৫৩