সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন

কোরবানির ঈদে লালমনিরহাটে ক্রেতাদের টার্গেট গৃহস্থদের পোষা দেশীয় গরু 

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • Update Time : শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২
  • ১৩০ Time View
জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাট প্রতিনিধি : অন্যান্য বছরের মতো এবারে লালমনিরহাটে স্থানীয় ভাবে গড়ে ওঠা খামারের সংখ্যা অনেক কম। তাই আগের বছরগুলোতে ভারতীয় গরুর সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে ভালো দাম না পেয়ে অনেকেই হতাশ হয়েছিলেন। এতে তারা আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। যে কারণে ক্ষতিগ্রস্তরা এবারে আর তেমন খামার গড়ে তোলেননি। তবে বিভিন্ন গ্রামের গৃহস্থদের বাড়িতে বাড়িতে ৩-৪টি করে দেশীয় গরু পালন করেছেন অনেকে। আর এ সব গরুই এবারের কোরবানির ঈদে ক্রেতাদের হবে প্রধান টার্গেট।

দিন যতই ঘনিয়ে আসছে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার কোরবানির পশুরহাট গুলো ততই জমে উঠেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে ভারতীয় পশুর আমদানী তেমন একটা নেই বললেই চলে। তাই পশুর দাম একটু বেশি বলে ক্রেতাদের ধারনা করছেন। হাটগুলোতে প্রাধান্য পাচ্ছে স্থানীয় খামারের পালিত গরু। তবে ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ভারতীয় গরুর আমদানি ততই বাড়তে পারে বলেেও স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।পবিত্র ঈদ উল আযহা আসতে এখনও ৯/১০ দিন বাকি থাকলেও এখনই জমে উঠেছে কোরবানির গরুর হাট। লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি পশুর হাটের মধ্যে দুড়াকুটিহাট, নবাবেরহাট (বিডিআরহাট), সাপটানা (নয়ারহাট), বড়বাড়ীহাট অন্যতম।

এছাড়াও এ এলাকার সর্ববৃহৎ হাটগুলোর মধ্যে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার রসুলগঞ্জহাট, হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতাহাট, দইখাওয়াহাট, কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনাহাট, চাপারহাট, আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ীহাট বসে। এ হাটগুলোতে বেশির ভাগ গরু ভারত থেকে আনা হয়। এসব হাটের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাটগুলোতে আগাম কোরবানির পশু আসা শুরু করেছে। তবে বিক্রেতারা দাম আকাশ ছোঁয়া চাওয়ায় পশু তেমন বিক্রি হচ্ছে না।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার দুড়াকুটি হাটে কোরবানির পশু উঠেছে ব‍্যাপক। কিন্তু বিক্রেতারা দাম বেশি চাওয়ায় ক্রেতারা পশু তেমন কিনছেন না।ক্রেতারা বলছেন, এবারে পশুর দাম যেভাবে চাওয়া হচ্ছে তাতে পশু কিনায় মুশকিল। তাদের মতে, পবিত্র ঈদ উল আহার আরো কয়েকদিন বাকি, তাই আগাম বেশি দামে পশু কিনতে তারা নারাজ।তবে ক্রেতা আর বিক্রেতারা উভয়েই বলছেন, আগামী দু’একদিন পরে হাটে গরুর আমদানি বেড়ে যাবে। আর তখন ক্রেতারা পশু কেনা শুরু করবেন। যদিও পশুর হাট গুোতে ক্রেতাদের ভির লক্ষ করা গেলেও তেমন একটা বিক্রি নেই।

হাটগুলোতে এখন পর্যন্ত ভারতীয় গরুর আমদানি অনেক কম বলে জানান, গরু ব্যবসায়ীরা। তবে পবিত্র ঈদ উল আযহা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ভারতীয় গরুর আমদানি বেশি হলেও স্থানীয় খামারের বা বাড়িতে পোষা গরুই বেশি প্রাধান্য পাবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।পশুর আমদানির উপর দামের নির্ভর করলেও এ বছর সকল ধরনের পশুর দাম তুলনামূলক অনেক বেশি হবে বলে মনে করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। পশুর হাটের ইজারাদাররা বলছেন, হাটে এখন পর্যন্ত ভারতীয় গরু-মহিষের আমদানি কম। সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু এখন তেমন আসছে না। তাই এবারের কোরবানিতে দেশীয় গরুর কদর বেশি থাকবে।তারা আরও বলেন, এবারের কুরবানীর ঈদে বিভিন্ন এলাকার খামার ও গৃহস্থদের বাড়ির গরুই তাদের হাটে প্রধান্য পাবে।

সরেজমিনে জেলার দুরাকুটি, বড়বাড়ি ও নয়ারহাট প্রধান ৩টি পশুর হাট ঘুরে জানা গেছে, পশু আমদানী কম, দাম বেশি হলেও ক্রেতাদের ভীড়ে জমে উঠেছে পশুর হাট। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে ভারতীয় পশুর আমদানী নেই। উপজেলার সর্বত্র হাটে দেশি পশু (গরু, ছাগল) আমদানী হচ্ছে। চোঁখে পরেনি কোন ভারতীয় গরু। ক্রেতাদের ধারনা হাতীবান্ধা উপজেলার কোন সীমান্ত দিয়ে এবারে ভারতীয় গরু চোরাচালনে আসছে না, তাই গরুর দাম একটু বেশি।গরু খামারি তছির উদ্দিন বলেন, গত বছর সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু পাচার হয়ে আশায় আমরা গরু খামারীরা লাখ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এবারে গরুর দাম একটু বেশি হওয়ার কারনে গত বছরের ক্ষতি এবারে পুষিয়ে নিতে পারবো বলে আশা করছি। 

লালমনিরহাটের দুরাকুটি হাটে ক্রেতা মকবুল হোসেন ও ছালামত আলীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারে শুধুমাত্র দেশী পশু আমদানী হচ্ছে। এজন্য ক্রেতাদের অনেকেরই পছন্দ মতো পশু মিলছে না এবং গত বছরের তুলনায় দামেও বেশি। অপর দিকে এখনও সময় আছে কোরবানীর পশু কেনার তাই ক্রেতারা শুধু পছন্দমত পশুর খোঁজ খবর রাখছে।এ সময় গরু ব্যবসায়ী সামছুদ্দিন পাটোয়ারী ও জহুরু ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছরে দেশী বিদেশী পশু আমদানী হওয়ায় ক্রেতাগণ নিজেদের পছন্দনীয় পশু ক্রয়ে কোন রুপ অনিহা প্রকাশ করেনি। কিন্তু এবার ভিন্ন, দেশীয় পশু পরিমাপে ছোট এবং দামেও বেশী এ কারনে ক্রেতাদের ভীড় জমে উঠলেও ক্রয়-বিক্রয় খুবই কম হচ্ছে। কোরবানী করার ইচ্ছা সামর্থ থাকলেও অনেকেই পশু দেখে মুখ ফিরে নিচ্ছে। তাদের ধারনা এখনও পশু কেনার সময় আছে। আমদানী বাড়লে এলাকার ৭০ ভাগ মানুষ কোরবানী করতে পারে বলে আশা করছি।

খামারিরা বলছেন, ভারতীয় গরু না আসলে এ বছর তারা ভালো দাম পাবেন তারা। তবে ঈদকে ঘিরে গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। দাম কিছুটা বেশি হলেও দেশি গরু কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তদারকি থাকায় এবার পুষ্টিমান সম্পন্ন পশু পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের।
কিউএনবি/অনিমা/০১ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৩৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit