প্রিয় মা
———-
অনেক দিন পর তোমাকে লিখছি। মনে আছে, কানাডা চলে আসার পর পর অনেক লিখতাম! এক মাস লাগতো একটা চিঠি হাতে পেতে আর তোমার কাছে পৌঁছতে। কত মধুর ছিল সেই দিন গুলো! দৌড়ে দৌড়ে চিঠির বাক্স দেখতাম, এই বুঝি তোমার চিঠি এলো!
তোমাকে অনেক মনে পড়ছে আজ! আমাকে একদম একা করে চলে গেছো না ফেরার দেশে। আমার অনেক অভিমান তোমার উপর! কেনইবা এতো তাড়া ছিল তোমার চলে যাওয়ার! হয়তো সবাই তোমার চলে যাওয়ার কষ্টটা ভুলে গেছে, বা মেনে নিয়েছে। আমি আজও মানতে পারিনি, পারিনা, কষ্ট বেড়ে চলেছে দিন দিন।
তুমিতো জানো, আমার একমাত্র প্রিয় বন্ধু শুধু তুমিই ছিলে। আমার ছুটির দিন গুলো কাটতো তোমার সাথে ফোন এ কথা বলে বলে। রাজ্যের কথা জমা হয়ে থাকতো, সেগুলো বলতে বলতে কখন যে ঘরের সব কাজ শেষ হয়ে যেত, নিজেও বুঝতাম না! ঘর গুছানো থেকে শুরু করে রান্না পর্যন্ত সব, সব কাজ শেষ হয়ে যেতো।
মা, আমার প্রিয় মা, আমার চার দিন ছুটি আছে, কিভাবে পার করবো দিন গুলো জানি না। বুক শুধু থেকে থেকে ফুলে ফেঁপে উঠে। ছুটির দিন গুলো আমাকে দৈত্য দানবের মত গ্রাস করে, হৃদয়টা কুরে কুরে খায় ওই পিচাশ শকুনের মত।
যদি আরো একটিবার তোমাকে কাছে পেতাম! রেখে দিতাম তোমায় আমার বুকের মাঝে। স্বার্থপর এর মত তোমার ভাগ কাউকে দিতাম না। ইদানিং তুমি স্বপ্নে আশাও ছেড়ে দিয়েছো। একবারও কি মনে পড়েনা তোমার এই তিন নাম্বার ছানার কথা!
ইতি
তোমার আদুরি।
“রাব্বির হাম-হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি ছাগিরা।”
মা গো, তুমি কি রাগ করেছো?
এখন তুমি স্বপ্নে আসাও ছেড়ে দিয়েছ!
অভিমানী তুমি,
না বলে চলে গেছ না ফেরার দেশে,
এখন মা গো কেউ নেই আমার –
যে মাথায় হাত বুলাবে ভালোবেসে!
তোমায় পাইনা কোথাও –
বাস্তবে বা স্বপনে।
যেনেও তোমায় খুঁজে ফিরি আমি
জনে জনে সবখানে।
লেখিকাঃ রুপা মোজাম্মেল। কানাডা প্রবাসী। দেশে লেখাপড়া শেষ করে কানাডায় বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কোর্স শেষ করেছেন। সেখানেই তাঁর কর্ম জীবন। লেখালেখি করেন নিয়মিত। জীবনের খন্ডচিত্র আঁকতে পারদর্শিনী রুপা মোজাম্মেল।
কিউএনবি/রাখি/ ২৭.০৬.২০২২/ রাত ১১.৫৫