বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন

বাসযোগ্যতার সূচকে উন্নতি করতে কাজ করছে ডিএসসিসি

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২
  • ১০৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : নগরীর বাসযোগ্যতার সূচকে উন্নতি করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কাজ করে চলেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন রেগুলেটর/আউটলেট স্ট্রাকচারসমূহ ডিএসসিসির কাছে হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত সমঝোতা স্মারক (Memorandum of Understanding) অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।

ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বাসযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকা চার ধাপ এগিয়েছে। আমরা সিরিয়া, করাচির নিচে ছিলাম। ত্রিপোলিরও নিচে ছিলাম। ২০২১ সালে এই সূচক যখন প্রকাশিত হলো তখন আমরা বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছি। যদিও বা আগাগোড়া ঢাকা শহর দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থানে ছিল। কিন্তু ঢাকাবাসীর প্রত্যাশা, জনগণের প্রত্যাশা, মেয়র মহোদয়রা দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে সব কিছু পরিবর্তন হয়ে যাবে! আজকে অত্যন্ত আনন্দের সাথে, দৃঢ়তার সাথে এ বিষয়ে বলতে চাই যে, আমরা বদলে দিয়েছি। নগর বাসযোগ্যতার সূচকে উন্নতি করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কাজ করছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনা বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘

এ সময় সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টাট শেখ তাপস বলেন, ‘বাসযোগ্যতার সামষ্টিক সূচকে ২০২১ সালে ঢাকা শহরের অর্জিত পয়েন্ট ছিল ৩৩.৫ নম্বর। এ বছর আমরা ৩৯.২ নম্বর পেয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা চার ধাপ উন্নতি করেছি। আমরা আগে ছিলাম সর্বনিম্ন থেকে তিন নম্বরে, এখন আমরা সাত নম্বরে উন্নীত হয়েছি। ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড হতে হস্তান্তরিত হতে যাওয়া অচল স্লুইস গেটগুলো সচল করার আশাবাদ ব্যক্ত করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘ওয়াসা থেকে আমরা যখন খালগুলো পেয়েছি তখনই আমরা এই স্লুইস গেটগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য বলেছিলাম। আজকে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। এগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

আমরা এরই মাঝে এই স্লুইচ গেটগুলো মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আজকে হস্তান্তরের সাথে সাথেই এগুলো যথারীতি মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ আমরা আগামীকাল থেকেই শুরু করব। প্রত্যেকটা স্লুইস গেট অচল রয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেছেন, এগুলো পুরাতন নিয়মে করা। কিন্তু আমরা সেগুলো মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের যে কার্যক্রম নিয়েছি, ইনশাআল্লাহ আমরা সেগুলো  কার্যকর করতে পারব। ‘অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ঢাকার চারপাশে নদ-নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজ ভেঙে নৌযান চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকার চারপাশে নদ-নদীর ওপর যে সেতুগুলো রয়েছে সেগুলো নৌযান চলাচলের উপযোগী নয়। ইতিমধ্যে সেসব সেতু চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেগুলো ভেঙে নৌযান চলাচল উপযোগী করে নির্মাণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নৌ রুট চালু করতে পারলে ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক অনেকটাই কমে আসবে। ‘বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, ‘ঢাকায় বৃষ্টির পানি সরে যাওয়ার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। আগে বৃষ্টির পানি খাল দিয়ে নদীতে চলে যেত; কিন্তু এখন এসব খাল ও নদী প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। এমতবস্থায় সিটি করপোরেশন রাজধানীর খালগুলো সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে, তা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। সিটি কপোরেশনের কার্যকলাপ আমাদেরকে আমার আলো দেখাচ্ছে। ‘

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ‍্য নেতৃত্বে বর্তমানে দেশে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা চলছে। ঢাকা সিটির দুই মেয়র সমন্বয়ের মাধ‍্যমে ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনসহ অনেক ক্ষেত্রেই সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমি আশাবাদী যে, খুব শীঘ্রই ঢাকা একটি বাসযোগ‍্য ও আধুনিক শহরে রূপান্তরিত হবে। ‘বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওয়াসা থেকে খালগুলো সিটি করপোরেশনে নিকট হস্তান্তরের ফলে আমরা নগরবাসীকে এর সুফল দিতে পেরেছি। খাল উদ্ধার করে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে খাল খনন ও বর্জ্য অপসারণ করে চলেছি। এর ফলে ঢাকার জলাবদ্ধতার সমস্যা অনেকাংশে সমাধান হয়েছে। আমরা জনগণের ভোটে দায়িত্ব নিয়ে এসেছি, আমরা বসে নেই। নগরবাসীর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পয়োবর্জ্যের লাইন খালে পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যানজট নিরসনে খালগুলোকে রক্ষা করে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করে আমাদেরকে ন্যাচার বেইসড সলিউশন করতে হবে। ‘

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘আজকের এই হস্তান্তরের মাধ্যমে আমি শুধু এটুকুই বলব―এটা সঠিক হাতেই পড়েছে। সিটি করপোরেশনের হাতে থাকলেই এগুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা হবে বলে আমি মনে করি। এই ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে যেকোনো কাজেই আমরা আপনাদের সাথে আছি। ‘বক্তব্য পর্ব শেষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও হস্তান্তর করা হয়। সমঝোতা স্মারকে দক্ষিণ সিটির পক্ষে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে সংস্থার মহাপরিচালক প্রকৌশলী ফজলুর রশিদ স্বাক্ষর করেন।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন এসব রেগুলেটর ও ড্রেনেজ আউটলেটসমূহের ভূমিকা উল্লেখ করে তা করপোরেশনের নিকট হস্তান্তরের অনুরোধ করে আসছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলো।   

এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন ঢাকা সমন্বিত বন্যা প্রতিরোধ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৩৭টি রেগুলেটর/ড্রেনেজ আউটলেট স্ট্রাকচার এবং বুড়িগঙ্গা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত ১৮টি ড্রেনেজ আউটলেট ট্রাকচার অর্থাৎ সর্বমোট ৫৫টি রেগুলেটর/ড্রেনেজ আউটলেট স্ট্রাকচার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বরাবর হস্তান্তর করা হলো। এর ফলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এসব রেগুলেটর/ ড্রেনেজ আউটলেটসমূহের মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত হলো।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৬.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৬:৪৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit