সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০২:২৭ পূর্বাহ্ন

অব্যাহত ভারি বর্ষনে লালমনিরহাটে বাড়ছে সব নদ-নদীর পানি

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • Update Time : শনিবার, ১১ জুন, ২০২২
  • ১৪৮ Time View
জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাট প্রতিনিধি : কয়েকদিনের অব্যাহত ভারি বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের ১৩টি নদীর পানি বেড়েই চলেছে। নদীর উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলগুলোও ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চলের আবাদি সব জমি। অপরদিকে পানি বাড়ার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। গত ৭২ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা, ভেটেশ্বর, রত্নাই নদীর ভাঙনে ৬৩টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।গত চার দিন থেকে হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। পানি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাউবো কর্তৃপক্ষ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে। তিস্তায় অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। 

শনিবার (১১ জুন) বিকেলে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সে. মি.) বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।পাউবো জানায়, অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় সেখানে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় তিস্তা অববাহিকায় বাড়ছে পানি। যদিও এখনো জেলার তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে। তবে জেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া পানি জমেছে জেলা শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায়। এসব পানি তিস্তা ও ধরলা নদীতে চলে আসায় পানি অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও ভারত থেকে পানি বাংলাদেশে তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে ছেড়ে দেয়াতে পানি বৃদ্ধি হয়। ব্যারেজের গেট দিয়ে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে দাবি করেছেন ডালিয়া ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তার পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,পলাশী ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এতে তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে।হাতীবান্ধা সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদে সাবেক ইউপি সদস্য মফিজার রহমান বলেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিন্দুর্না সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর সিন্দুর্না কমিনিউটি ক্লিনিকটি হুমকির মুখে রয়েছে সে কোনো মুহূতে বড় ধরনের বন্যা দেখা দিলে নদীতে বিলিন হবে।

স্থানীয়রা জানান, শুকিয়ে যাওয়া মৃত প্রায় তিস্তা আবারো ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে। পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে।লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। ব্যারাজ রক্ষার্থে ইতিমধ্যে সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিবছর জুন মাসে একটি বন্যা দেখা দেয়। তাই তিস্তা পাড়ের মানুষদের সর্তক থাকতে বলা হয়েছে, এছাড়া পানি বাড়ার সাথে সাথে নদী ভাঙন তীব্র হয়েছে বলেও তিনি জানান।

কিউএনবি/অনিমা/১১.০৬.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ৯:৩২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit