ডেস্ক নিউজ : কোরআন গবেষকরা অর্থের স্পষ্টতার বিচারে কোরআনের আয়াতকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। ১. যার অর্থ এত স্পষ্ট যে ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে না, ২. যার অর্থ ও মর্ম আল্লাহ বান্দার অগোচরে রেখেছেন। ফলে তার ব্যাখ্যা জানা বান্দার পক্ষে সম্ভব নয়, ৩. যেসব আয়াতে ব্যাখ্যার অবকাশ আছে। প্রথম দুই প্রকার আয়াতের ব্যাখ্যায় পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “তিনিই তোমার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন যার কতক আয়াত ‘মুহকাম’ (সুস্পষ্ট অর্থবিশিষ্ট) এইগুলো কিতাবের মূল; আর অন্যগুলো ‘মুতাশাবিহ’ (অর্থ স্পষ্ট নয়), যাদের অন্তরে সত্য লঙ্ঘনের প্রবণতা আছে শুধু তারাই ফিতনা ও ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে।
আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে, আমরা এটা বিশ্বাস করি, সমস্তই আমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আগত। আর বোধশক্তিসম্পন্নরা ছাড়া অন্য কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না। ” (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৭) আর তৃতীয় প্রকার আয়াত সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘এক কল্যাণময় কিতাব, এটা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ তার আয়াতগুলো অনুধাবন করে এবং বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা গ্রহণ করে উপদেশ। ’ (সুরা : সাদ, আয়াত : ২৯)
উল্লিখিত তিন প্রকার আয়াতের ওপর ঈমান স্থাপন করা আবশ্যক। বিশেষত দ্বিতীয় প্রকার আয়াত, যার ব্যাপারে বলা হয়েছে—‘যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে, আমরা এটা বিশ্বাস করি, সমস্তই আমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আগত’ এবং তৃতীয় প্রকার আয়াত—চাই ব্যক্তি এর ব্যাখ্যা অবগত হোক বা না হোক। যেসব আয়াত ব্যাখ্যার অবকাশ আছে সেসব আয়াতের কোনো ব্যাখ্যার ব্যাপারে যদি সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ি, তাবে-তাবেয়ি ও মুজতাহিদ আলেমরা একমত পোষণ করেন, তবে পরবর্তীদের জন্য নতুন ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর অবকাশ নেই। আর যদি পূর্বসূরিদের থেকে একাধিক ব্যাখ্যা বিবৃত হয়, তবে যে ব্যাখ্যাটি অধিক সঠিক মনে হয় সেটিই গ্রহণ করবে। তবে কোনো ব্যাখ্যাকে চূড়ান্ত মনে করবে না।
পবিত্র কোরআনের কোনো আয়াতের অর্থ ও মর্ম যদি বুঝে না আসে, তবে নিজের জ্ঞানের স্বল্পতা ও মেধাশক্তির সীমাবদ্ধতাকে দায়ী মনে করবে। কেননা আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁর প্রতি অবতীর্ণ কিতাবকে উম্মতের প্রতি যথাযথভাবে পৌঁছে দিয়েছেন এবং তাদের সামনে তা যথাযথভাবে ব্যাখ্যাও করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ করেছি, মানুষকে সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছিল। যাতে তারা চিন্তা করে। ’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৪)। আর এই দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞাসা করেছিলেন, শোন! আমি কি তোমাদের কাছে পৌঁছেছি? তখন সাহাবায়ে কেরাম (রা.) বলেন, হ্যাঁ। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭০৭৮)
কিউএনবি/আয়শা/১১ই মে, ২০২২/২৮ বৈশাখ, ১৪২৯/বিকাল ৪:৪৩