রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন

রমজানে অমুসলিমদের জন্য মসজিদ উন্মুক্ত রাখা হয় আর্জেন্টিনায়

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২২
  • ৭৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : পিউ রিসার্জের আর্জেন্টিনার পাঁচ কোটি জনগণের প্রায় ২.৫ শতাংশ মুসলিম। জনসংখ্যার বিচারে মুসলিমরা দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় জনগোষ্ঠী। বর্তমানে আর্জেন্টিনায় প্রায় ১০ লাখ মুসলিম বসবাস করে, যাদের এক-পঞ্চমাংশই বাস করে রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে। আর্জেন্টিনায় সর্বপ্রথম ইসলামের আগমন হয় স্পেনের নির্বাসিত মুসলিমদের মাধ্যমে।

যারা দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। বিশ শতকের শুরুতেও বহু আরব মুসলিম আর্জেন্টিনায় পাড়ি জমিয়েছেন। যাদের বেশির ভাগ সিরিয়া ও লেবাননের অধিবাসী। তবে বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম অভিবাসীদের সংখ্যা আরব অভিবাসীদের ছাড়িয়ে গেছে। আর্জেন্টিনার মুসলিমরা রমজানকে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে স্বাগত জানায়। তাদের কাছে জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক সাধনার মাস রমজান। তারা জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক সাধনার জন্য মসজিদে সমবেত হয়। রমজানে মসজিদে দ্বিনি শিক্ষার বিশেষ আয়োজন করা হয়। বিশেষ ইফতারির পূর্ব থেকে তারাবির পর পর্যন্ত তারা মসজিদে অবস্থান করার চেষ্টা করে। রাজধানীর প্রধান প্রধান মসজিদে দিনের বেলায়ও দীর্ঘ সময় ইসলামী বিধানবলি শিক্ষা দেওয়া হয়।

পর্যাপ্ত ইসলামী শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকা আর্জেন্টিনার মুসলিমদের প্রধান সমস্যা। তারা নতুন প্রজন্মকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারছে না। প্রথমত, তারা স্থানীয় সমাজব্যবস্থার সঙ্গে মিশে যেতেই বেশি পছন্দ করছে। দ্বিতীয়ত, ইসলামী শিক্ষা উপকরণের অভাব। নতুন প্রজন্ম স্প্যানিশ ভাষা ছাড়া অন্য ভাষা জানে না। আর স্প্যানিশ ভাষায় ইসলামী জ্ঞানোপকরণ খুবই কম। তাই রমজানকে আর্জেন্টিনার মুসলিমরা ইসলামী শিক্ষা গ্রহণের সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখে। এ সময় আরব ও অনারব দেশ থেকে আগত মুসলিম স্কলারদের কাছ থেকে ধর্মীয় বিধি-বিধান শেখার চেষ্টা করে। তারাবির পর মুসলিমরা পরস্পরের সঙ্গে দেখা করে এবং উপহার দেয়।

রমজানের আগমনে সবচেয়ে বেশি খুশি হয় আর্জেন্টিনার আফ্রিকান মুসলিমরা। যারা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের তাড়নায় আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই দেশে পাড়ি জমিয়েছে। কেননা রমজানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের সাহায্য-সহযোগিতায় ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসে। রমজানের সহযোগিতা প্রধানত মুসলিমরা পেয়ে থাকলেও অনেক অমুসলিম ব্যক্তিকেও তা দেওয়া হয়। দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় ইসলামিক সেন্টার ‘বাদশাহ ফাহাদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টার’ আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে অবস্থিত। ১৯৯২ সালে খাদেমুল হারামাইনের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অধীনে আছে একটি মসজিদ, একটি পাঠাগার, দুটি ধর্মীয় স্কুল ও একটি পার্ক। সেন্টারটি ইসলাম প্রচার, ধর্মীয় শিক্ষা দান, ফতোয়া প্রদান, ইসলামিক ম্যাগাজিন প্রকাশ ও মুসলমানের মাঝে বিয়ে দেওয়ার কাজ করে থাকে।

রমজানে বাদশাহ ফাহাদ ইসলামিক সেন্টার বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। যেমন ইফতার ও সাহরির আয়োজন করা, মুসলিম ও অমুসলিম সব ধর্মাবলম্বীর জন্য তা উন্মুক্ত রাখা, কোরআনের পাঠদান, হিফজুল কোরআন, কিরাত ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা। আর্জেন্টাইন মুসলিমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে রোজা রাখে। রমজানে তারা ধর্মীয় জীবনযাপনের চেষ্টা করে। যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে পরস্পরকে ধর্মীয় কাজে উদ্বুদ্ধ করে। তারা ইফতার ও তারাবির নামাজে মসজিদে একত্র হয়। তারাবির পর থেকে ফজর পর্যন্ত মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারগুলো মুসল্লিদের জন্য খোলা থাকে। কোথাও কোথাও ইফতারের সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিদের জন্য সাহরিরও ব্যবস্থা থাকে।

ইফতার ও সাহরিতে আরব সংস্কৃতির প্রাধান্য দেখা যায়। যেমন ইফতার আয়োজনে মিষ্টান্নের প্রাধান্য, খেজুর, দুধ ও সিমের উপস্থিতি ইত্যাদি। তবে অন্য অঞ্চলের অধিবাসীরাও রমজানে আপন সংস্কৃতি চর্চায় মনোযোগ দেন। বিশেষত, একই অঞ্চলের অভিবাসীরা একত্রে থাকলে তারা দেশীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী রমজান উদযাপন করেন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৯শে এপ্রিল, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:২০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit