
স্পোর্টস ডেস্ক : আগে ব্যাট করতে নেমে স্কোর হয়েছে অল্প। এই পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জিততে হলে যে বোলিং আর ফিল্ডিং দরকার, তার কিছুই পারেনি বাংলাদেশ। বিশেষ করে প্রথম ওভার থেকেই শুরু হয় ক্যাচ মিস। সেই ধারা ম্যাচব্যাপী অব্যাহত থাকে। এমন সুযোগে বড় জুটি গড়েন হজরতুল্লাহ জাজাই আর উসমান গনি। আফগানিস্তান হেসেখেলে ১৪ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয় ছিনিয়ে নেয়। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬১ রানে। তাই দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো মাহমুদউল্লাহ বাহিনীকে। ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা আজমতুল্লাহ ওমরজাই।
রান তাড়ায় নেমে আফগানিস্তান প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই উইকেট হারাতে পারত। কিন্তু নিজের বলে নিজেই হজরতুল্লাহ জাজাইয়ের দেওয়া অতি সহজ ক্যাচ ছাড়েন নাসুম আহমেদ। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই মেহেদির আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান রহমানুল্লাহ। এক বল পরেই মাহমুদউল্লাহর অসাধারণ ক্যাচে ০ রানে ফেরেন এই ওপেনার। আফগানদের ওপেনিং জুটি ভাঙে ৪ রানে। পঞ্চম ওভারে নাসুমকে একটি করে চার-ছক্কা মেরে লেগ বিফোরের মুখে পড়েছিলেন উসমান গনি। বাংলাদেশ রিভিউ নিলেও তিনি আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যান। পাওয়ারপ্লেতে আফগানরা তোলে ৩৪ রান।
জীবন পেয়ে হজরতুল্লাহ জাজাইকে নিয়ে জুটি গড়েন গনি। এই জুটিতেই জয়ের দিকে এগিয়ে যায় আফগানরা। ৮২ বলে ৯৯ রানের এই জুটি যখন ভাঙে, আফগানরা তখন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। দলীয় ১০৩ রানে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর বলে ৪৮ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৪৭ করা উসমান গনি লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হলে জুটির অবসান হয়। এর আগেই অবশ্য ৩৭ বলে ৩ চার এবং ৪ ছক্কায় ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন হজরতুল্লাহ জাজাই। ১৭.৪ ওভারেই ৮ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহিদ আর মাহমুদউল্লাহ। সাকিব ৩ ওভারে ৩২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। দুটি ক্যাচ ফেলা নাসুম ৩.৪ ওভারে দিয়েছেন ২৯ রান।
এর আগে আজ শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় তথা শেষ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১১৫ রান তোলে বাংলাদেশ। দলীয় ৭ রানেই মোহাম্মদ নবির বলে মুনিম শাহরিয়ারের (৪) বিদায়ে ওপেনিং জুটি ভাঙে। তৃতীয় ওভারে ফজলহক ফারুকীকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে দর্শনীয় পুল শটে ৬৯ মিটারের ছক্কা মেরে হাত খোলেন লিটন দাস। দারুণ ফর্মে থাকা লিটন আজ ১০ বলে ১৩ রান করে আজমতউল্লাহর করা পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ভুল টাইমিংয়ে শরাফউদ্দিনের তালুবন্দি হন। রশিদ খানের বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া নাঈম সেই রশিদের বলেই রান-আউট হন ১৯ বলে ১৩ রান করে। এরপর ব্যক্তিগত জীবনে ভায়রা-ভাই মুশফিক আর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে এগোতে থাকে বাংলাদেশের স্কোর। দুজনেই উইকেটে সেট হয়ে দারুন খেলছিলেন। এই জুটি ভাঙতেই ফের বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
পঞ্চম উইকেটে ৩১ বলে ৪৩ রানের জুটির অবসান হয় মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে। রশিদ খানের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরেন ১৪ বলে ৩ চারে ২১ রান করা বাংলাদেশ অধিনায়ক। অন্যদিকে দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যাট করছিলেন মুশফিক। ফারুকীর করা ১৭তম ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ নবির তালুবন্দি হয়ে শেষ হয় তার ২৫ বলে ৪ চারে ৩০ রানের ইনিংস। ৯৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ওই ওভারেই তিন অংক ছাড়ায় বাংলাদেশের স্কোর। তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন মেহেদি। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে আজমতউল্লাহকে অযথা স্কুপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন আফিফ (৭)। ফারুকির তৃতীয় শিকার শরীফুল ইসলাম (০)। শেষ উইকেট জুটিতে মুস্তাফিজ-নাসুম আরও ১০ রান যোগ করলে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৫ রান তোলে বাংলাদেশ। মাত্র ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন ফারুকি। ২২ রানে ৩টি নিয়েছেন আজমতুল্লাহ।
কিউএনবি/আয়শা/৫ই মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:০৯