আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এবার শীতে কাবু আফগানিস্তান। তালেবান সমস্যার মাঝে খরা, দারিদ্র্য; পাশাপাশি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে তীব্র শীত। প্রবল শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটির জনজীবন। সবচেয়ে বেশি শীত জেঁকে বসেছে বামিয়ান প্রদেশে।
এ যেন আফগানদের আদিযুগে ফিরে যাওয়া। তীব্র শীতে কাবু হয়ে পাহাড়ের গুহায় বাস করছে একদল মানুষ। এসব গুহা এককালে মহামণি বুদ্ধ অনুসারীদের প্রার্থনা কেন্দ্র ছিল, যা পরবর্তীতে তালেবানরা গুঁড়িয়ে দেয়। যুদ্ধ কেড়ে নেয় মহিলা ও শিশুদের স্বাভাবিক জীবন।
পুরুষদের কাজ না থাকায়, মহিলা ও শিশুরা আছে বেশি বিপদে। প্রতিদিন কাজের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। খরা ও তীব্র শীতে কাজের অভাবে পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য জোগাড় করতে পারছেন না তারা। দৈনিক আয় দাঁড়িয়েছে আধা ডলারেরও কম।
এক আফগান নারী বলেন, আমার স্বামীর কোনো কাজ নেই। ধারকর্জ করে চাল ও আটা জোগাড় করছেন তিনি। শীত বরাবরই কষ্টের। কিন্তু এখানে তীব্র শীতে কাজকর্ম না থাকায় খুব খারাপ অবস্থা আমাদের।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা। তার ওপর এসেছে খরা। এখন তীব্র শীতে কাজের অভাবে বিপর্যস্ত আফগান জনপদ।
যুক্তরাষ্ট্রের এক পরিসংখ্যান বলছে, ২ কোটি ৩০ লাখ আফগান খাদ্য সংকটের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশ। আর শীতের কারণে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে নারীদের বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে তালেবান
আরেক আফগান নাগরিক বলেন, শীতকালে সাধারণত আমরা ধারকর্জ করে প্রয়োজনীয় খাদ্য সংগ্রহ করি যা দুই/তিন মাস পর কাজ পেলে ধার শোধ করে দিই। কিন্তু তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে গেছে আর বহু মানুষ দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে।
দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে আফগানিস্তান। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, পরিবারগুলো খাদ্যের অভাবে তাদের শিশু সন্তানদের বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
বুদ্ধদের ধর্মীয় স্থাপনার জন্য বিখ্যাত আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশ। এখানে শীত বরাবরই কষ্টের। কিন্তু এবারের শীত যেন আরো কষ্ট নিয়ে এসেছে তাদের জীবনে। তাপমাত্রা নেমে গেছে হিমাঙ্কের নিচে।
কিউএনবি/রেশমা/২রা জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১:৫৬