বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর প্রকাশ খালেদা জিয়া : একজন মহীয়সীর মহাপ্রয়াণ সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বামীর ‘বীর প্রতীক’ খেতাব বাতিল নওগাঁ ছয়টি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ মোট ৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল  নিস্তব্ধ এভারকেয়ার, অশ্রুসিক্ত চোখে ‘আপসহীন’ নেত্রীর জন্য প্রার্থনা আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল ইয়েমেনের রাঙামাটিতে ৬৫০ লিটার চোলাই মদভর্তি গাড়িসহ আটক-১ ঋণের আশ্বাসে ধর্ষণ,ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল! রাঙামাটিতে ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা নেত্রকোণায় নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ সভা অনুষ্ঠিত চৌগাছায় রাগীব আহসান নিহাল আইডিয়াল স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ

নাগরিকদের প্রেম-ডেটিং-বিয়ের জন্য বিপুল অর্থ দিচ্ছে যে দেশ!

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৫৭ Time View

ডেস্ক নিউজ : পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে কমছে জনসংখ্যা। এসব দেশে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিয়ে না করার এবং সন্তানের জন্ম না দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধির ফলে গড় জন্মহারে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। কয়েক দশক ধরে নবজাতকের সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে যেসব দেশের, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ কোরিয়া।

গত কয়েক বছর ধরেই দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে হাঁটছে দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু সে দেশে জনগণের, বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং পরিবার শুরুর প্রতি অনীহা লক্ষ করা গেছে। ফলে অস্বাভাবিক জনসংখ্যাগত বৈপরীত্যের মুখোমুখি হচ্ছে দেশটি।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, দীর্ঘ সময় কর্মক্ষেত্রে কাটানো, তীব্র পেশাদার চাপ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণেই প্রেম, ডেটিং, বিয়ে বা সন্তানের জন্ম দেওয়া থেকে মুখ ফিরিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার যুবসমাজ। ফলে সে দেশের জন্মহার অত্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ এমনও দাবি করেন, দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যার পরিমাণ এতই কমে গেছে যে, কোনও যুদ্ধবিগ্রহ বা পড়শি দেশের বোমার প্রয়োজন পড়বে না। জন্মহার হ্রাসের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে একদিন পৃথিবীর মানচিত্র থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার অস্তিত্বই মুছে যাবে বলে আশঙ্কা তাদের।

বিশ্বব্যাপী উন্নত দেশগুলোতে জন্মের হার কমতে দেখা গেছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো চরম সঙ্কটের মুখোমুখি তেমন কেউই নয়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, দেশটির জন্মহার এতটাই নেমে গেছে যে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে শতাব্দীর শেষ নাগাদ দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যা বর্তমানের তুলনায় এক তৃতীয়াংশে সঙ্কুচিত হয়ে যেতে পারে।

সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ানে’র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জনসংখ্যা কমতে শুরু করে ২০২০ সালে। ২০২৪ সালের একটি সমীক্ষাতেও উঠে এসেছে একটি বিস্ফোরক তথ্য। সেখানে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার এক-তৃতীয়াংশ নারী বিয়েই করতে চান না। কারণ, বিবাহে অনিচ্ছুক নারীদের ৯৩ শতাংশই চান না তাদের ঘাড়ে গৃহকর্মের বোঝা এসে পড়ুক। সন্তান লালনপালনের দায়িত্ব তরুণ-তরুণীদের বিয়ে না করার অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত হয়েছে।

জনসংখ্যা হ্রাসের এই সমস্যার মূলে রয়েছে দেশের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণও। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের তরুণীরা পরিবার পরিকল্পনার চেয়ে নিজের পেশাকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করেছেন। ২০২৩ সালের একটি সরকারি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সন্তান লালনপালনকে কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছেন চাকরিজীবী নারীরা।

দক্ষিণ কোরিয়ায় লিঙ্গ বিভাজনও জনসংখ্যা-সঙ্কটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ। লিঙ্গবৈষম্যের কারণে সেখানকার অল্পবয়সি পুরুষদের মধ্যে নারীবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পারিবারিক কাজ ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রেও পুরুষ ও নারীদের মধ্যে বিশাল ফারাক লক্ষ করা গেছে।

২০২৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার মোট প্রজননের হার (একজন নারীর প্রজনন বয়সে গড় সন্তানের সংখ্যা) দাঁড়িয়েছে ০.৭২। ২০২২ সালে এই গড় ছিল ০.৮১। দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মহার ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৮ শতাংশ কমে গেছে। একটি দেশের সুস্থ ও স্থিতিশীল জনসংখ্যা বজায় রাখার জন্য এই গড়ের প্রয়োজনীয় মান হল ২.১। সেই মানের তুলনায় বর্তমান হার অনেকটাই নীচে।

৭০-এর দশকের শুরুতে দেশটিতে নারীদের গড়ে চারটি সন্তান থাকত। ১৯৬০ সালে এই হার ছিল ৬। সেই সময় দেশের অর্থনীতির হাল ধরতে সরকার জন্মনিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা শুরু করে। ১৯৮২ সাল নাগাদ অর্থনীতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে প্রজননহার ২.৪-এ স্থির হয়ে যায়।

চলতি বছরের শুরুতে একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, যে হারে দক্ষিণ কোরিয়ার জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে তা খুবই উদ্বেগের। এর ফলে ২১০০ সাল নাগাদ দেশের জনসংখ্যা ৫ কোটি ২ লাখ থেকে কমে কোটি ৭০ লাখে এসে দাঁড়াবে।

একইভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় বেড়েছে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা। গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে প্রবীণ নাগরিকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, সন্তানধারণে অনিচ্ছার কারণে কমছে পরিবারের সংখ্যাও।

এমন চলতে থাকলে দেশে সামাজিক কাঠামোই নষ্ট হয়ে যাবে, ভেঙে পড়বে অর্থনীতি। এমনটাই আশঙ্কা সে দেশের সরকারের। তাই বিয়ে ও সন্তানধারণের প্রতি যুব সমাজকে আকৃষ্ট করতে একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার।

সরকারি এই প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য, যুবসমাজকে সম্পর্ক তৈরি, বিয়ে এবং সন্তানধারণের জন্য উৎসাহিত করা। এই উদ্যোগের অধীনে কোনও পুরুষ বা নারী যদি বিপরীত লিঙ্গের কারও সঙ্গে ডেটে যেতে চান, তাহলে তার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে সরকার।

সরকারের দেওয়া সেই অর্থ বাইরে ঘুরতে যেতে, রেস্তরাঁয় খাবার খেতে, সিনেমা দেখতে বা একান্তে সময় কাটাতে ব্যবহার করতে পারেন যুগলেরা। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র ডেটে যাওয়ার জন্য যুগলদের প্রায় ৩৫০ ডলার পর্যন্ত সাহায্য করছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার।

সরকারি সহায়তা শুধুমাত্র যুগলদের প্রেম বা ডেটে যাওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তাতে থেমে নেই। মজার বিষয় হল, এই প্রক্রিয়া চলাকালীন যদি যুগলের মা-বাবারা দেখা করেন, তবে সেই খরচও আলাদাভাবে বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার।

জানা গেছে, দক্ষিণ কোরীয় কোনও যুগল যদি বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাহলেও মোটা অঙ্কের আর্থিক সাহায্য দিতে রাজি সরকার। জানা গেছে, বিবাহে ইচ্ছুক যুগলেরা বিয়ে করার জন্য সে দেশের সরকারের কাছ থেকে ১৩ হাজার ডলার পর্যন্ত সহায়তা পেতে পারেন।

সন্তানধারণের জন্যও দম্পতিদের অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করা হয়। সরকারের দাবি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতি তীব্র আকার ধারণ করায়, কোনও দম্পতি যেন সন্তান ধারণ থেকে বিরত না থাকেন, সে কারণেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

কিউএনবি /অনিমা/ ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫,/সকাল ১১:৫৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit