বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর প্রকাশ খালেদা জিয়া : একজন মহীয়সীর মহাপ্রয়াণ সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বামীর ‘বীর প্রতীক’ খেতাব বাতিল নওগাঁ ছয়টি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ মোট ৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল  নিস্তব্ধ এভারকেয়ার, অশ্রুসিক্ত চোখে ‘আপসহীন’ নেত্রীর জন্য প্রার্থনা আমিরাতের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল ইয়েমেনের রাঙামাটিতে ৬৫০ লিটার চোলাই মদভর্তি গাড়িসহ আটক-১ ঋণের আশ্বাসে ধর্ষণ,ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল! রাঙামাটিতে ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা নেত্রকোণায় নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে অ্যাডভোকেসি ডায়ালগ সভা অনুষ্ঠিত চৌগাছায় রাগীব আহসান নিহাল আইডিয়াল স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ

গৃহযুদ্ধের মধ্যেই কাল মিয়ানমারে ভোট

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৪০ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সামরিক অভ্যুত্থানের মুখে ২০২১ সালে অং সান সুচি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর পাঁচ বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে মিয়ানমারে ভোটের মাঠে জান্তা সরকার। আগামীকাল রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) শুরু হতে যাওয়া তিন ধাপের সাধারণ নির্বাচন ঘিরে এরইমধ্যে ব্যাপক সমালোচনার মুখে মিন অং হ্লাইং প্রশাসন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এরই মধ্যে বলাবলি করছে, দেশটির জান্তা সরকারের অধীনে আরেকটি পাতানো নির্বাচন দেখতে যাচ্ছে বিশ্ববাসী। নির্বাচনের আগে নতুন আইনে ব্যাপক গ্রেফতার অভিযান চালানো হয়। যদিও স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) নির্বাচনকে সামনে রেখে ইয়াঙ্গুন শহরে দীর্ঘদিন ধরে চলা কারফিউ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির সামরিক জান্তা সরকার।

মিয়ানমারের ৩৩০টি প্রশাসনিক এলাকার মধ্যে তিন ধাপের ২৬৫টি প্রশাসনিক অঞ্চলে নির্বাচনের আয়োজন করে সমালোচনার মুখে জান্তা সরকার। ভোটের প্রথম দুই ধাপ হবে ২৮ ডিসেম্বর ও ১১ জানুয়ারি। এই দুই ধাপে মোট ৩৩০টি প্রশাসনিক এলাকার মধ্যে ২০২টিতে ভোটগ্রহণ হবে। আর আগামী বছর ২৫ জানুয়ারি তৃতীয় ও শেষ ধাপের ভোটগ্রহণের পর ফল ঘোষণা করা হবে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক ঘোষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ভোট আয়োজনের মধ্যেও সামরিক অভিযান জোরদারের ঘোষণা দিয়ে আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ মিন অং লাইং প্রশাসন। এ অবস্থায় নির্বাচনকে কমেডি শো বলে মন্তব্য করছেন পালিয়ে রক্ষা পাওয়া মিয়ানমারের তরুণরা।

এছাড়াও ভোটের আগে জান্তা বিরোধী ও বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোয় স্থল ও নৌপথে অভিযান জোরদারের ঘোষণায় আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হলো মিন অং লাইংয়ের নির্বাচন আয়োজন। দেশটির বেশিরভাগ মানুষই জান্তা সরকারের নির্বাচন আয়োজন নিয়ে শঙ্কিত। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য বৈধতা দিতে জান্তা সরকার পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। 

সামরিক বাহিনীর একটি ঘাঁটি থেকে জান্তা-প্রধান মিন অং হ্লাইং জনসাধারণকে ২৮ ডিসেম্বর শুরু হওয়া নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। সতর্ক করে এ–ও বলেন, মানুষ যেন এমন প্রার্থীদের বেছে নেয়, যারা তাতমাদো বা মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।

তবে বিশ্লেষক ও কূটনীতিকেরা বলছেন, গৃহযুদ্ধ আরও ভয়াবহ হতে থাকা দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে নির্বাচনের মাধ্যমে জান্তা যে স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করছে, তা একপ্রকার দুঃসাধ্য। 

দেশটির রাষ্ট্রীয় পত্রিকা গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তৃতীয় ধাপে ৬৩টি টাউনশিপে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। মিয়ানমার জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং আগেই স্বীকার করেছেন, সারা দেশে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পায় মিয়ানমার। তখন থেকেই দেশটিতে বেশির ভাগ সময় শাসন করেছেন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাদের তালিকায় নাম লেখান মিন অং হ্লাইং। সেসময় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে মিয়ানমারে নোবেলজয়ী অং সান সু চির গণতান্ত্রিক সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।

সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি ২০১৫ ও ২০২০ সালে নির্বাচনে জয় পেয়েছিল। দলটিকে ভেঙে দিয়েছে মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন। এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না তারা। 

জান্তাবিরোধী অন্য দলগুলোও অংশ নিচ্ছে না। নির্বাচন করছে ছয়টি দল। এর মধ্যে সামরিক বাহিনী সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (ইউএসডিপি) জেতার সম্ভাবনা বেশি।

ইউএসডিপি জিতলে মিন অং হ্লাইং শক্তিশালী অবস্থানে থেকে যাবেন, এটা বলাই যায়। তবে অতীতে কিছু ভিন্ন উদাহরণ রয়েছে। যেমন ২০১০ সালের নির্বাচনের পর সাবেক জেনারেল থেইন সেইনকে বেসামরিক সরকারের প্রধান হিসেবে বসিয়েছিল সামরিক বাহিনী। তবে তিনি কিন্তু উল্টো উদারপন্থী নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এর জেরেই ক্ষমতায় আসতে পেরেছিলেন গণতান্ত্রিক সু চি।

এটাও ঠিক যে সেই সময়ের চেয়ে বর্তমান চিত্র একেবারে ভিন্ন। গৃহযুদ্ধে মিয়ানমারের ঐক্য একেবারে ছিন্নভিন্ন। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সাউথইস্ট এশিয়া পিস ইনস্টিটিউটের গবেষক ইয়ে মিও হেইন বলেন, সামরিক বাহিনীর আয়োজিত এই নির্বাচনের জেরে দেশে সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে টেকসই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব হবে না।

এমনকি অং সান সু চিসহ অনন্যা নেতাদের কারাবন্দি রেখে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টিকে নির্বাচন করার সুযোগ না দেয়ায়ও জান্তা সরকারের ভোট আয়োজন প্রশ্নের মুখোমুখি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর মিয়ানমারে বেশির ভাগ সময় শাসন করে আসছে সামরিক বাহিনী।

দেশটির সামরিক সরকারের দাবি, এই নির্বাচন বেসামরিক শাসনে প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম করবে। তবে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বলছে, ক্ষমতায় থাকার পথ আরও সুগম করতে জান্তা সরকার এই সাজানো নির্বাচন করছে। তারা এরই মধ্যে নির্বাচন বয়কয়টের ঘোষণা দিয়েছে। 

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং স্বাধীন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোও একই কথা জানিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, একটি স্থিতিশীল প্রশাসন গঠনের লক্ষ্যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সামরিক সরকারের এই উদ্যোগ সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে জান্তা সরকারের দাবি, এই নির্বাচন জনগণের সমর্থন পাচ্ছে।

কিউএনবি /অনিমা/ ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫,/দুপুর ২:২৯

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit