সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০০ অপরাহ্ন

বর্ণবাদের শিকার হচ্ছেন উসমান খাজার মেয়েরা, প্রতিবাদ করলেন স্ত্রী

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৫৩ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক : বন্ডাই বিচে সংঘটিত মর্মান্তিক হামলার পর অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার উসমান খাজার পরিবার চরম ইসলামবিদ্বেষী আক্রমণের শিকার হয়েছে। খাজার স্ত্রী র‍্যাচেল খাজা জানান, মুসলিম পরিচয়ের কারণে তাদের দুই কন্যা অনলাইন ঘৃণ্য ট্রোলিংয়ের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ওই ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমবিদ্বেষ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গণমাধ্যমে হামলাকারী বাবা–ছেলে সাজিদ ও নাভিদ আকরামের সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর জেরে সাধারণ মুসলিম পরিবারগুলোকেও বিদ্বেষের মুখে পড়তে হচ্ছে। উসমান খাজা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা প্রথম মুসলিম ক্রিকেটার। পুরো ক্যারিয়ারজুড়েই তিনি নিজের ইসলামি বিশ্বাস এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে জন্ম নেওয়া খাজা পাঁচ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান এবং সিডনিতেই তার বেড়ে ওঠা ও ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু।

এর আগেও ইসলামোফোবিয়া নিয়ে তিনি সরব ছিলেন, বিশেষ করে মুসলিম ক্রীড়াবিদদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ এবং খেলাধুলায় অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। এবার সেই বিদ্বেষ সরাসরি আঘাত হেনেছে তার পরিবারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে র‍্যাচেল খাজা তাদের মেয়ে আইশা ও আইলার উদ্দেশে করা কিছু ভয়ংকর মন্তব্য প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, সম্প্রতি পাওয়া এসব মন্তব্য আগের চেয়ে অনেক বেশি ঘৃণ্য এবং দুঃখজনকভাবে এমন বার্তা তাদের জন্য নতুন নয়। ট্রোলাররা শিশুদের ‘ভবিষ্যতের স্কুল হামলাকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছে, এমনকি তাদের রক্তে ‘সন্ত্রাসীদের উত্তরাধিকার’ আছে বলেও কটাক্ষ করেছে। কেউ কেউ পরিবারটিকে পাকিস্তানে ফিরে যেতে বলেছে।

র‍্যাচেল বন্ডাই হামলা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক নেতাদের মন্তব্য এবং অস্ট্রেলিয়ান জিউইশ কাউন্সিলের একটি বিবৃতিও শেয়ার করেন। ওই বিবৃতিতে ইহুদিবিদ্বেষ, ইসলামোফোবিয়া ও সব ধরনের বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন সমাজের সবাইকে একসঙ্গে দাঁড়ানো। কোনো ধরনের ঘৃণাকেই গ্রহণযোগ্য মনে করা উচিত নয়। হামলার পর উসমান খাজাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিকবার প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বন্ডাই ও ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, এই ধরনের অর্থহীন সহিংসতা পরিবার ও পুরো কমিউনিটিকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তিনি শোক ও প্রার্থনা জানান।

এছাড়া তিনি অস্ট্রেলিয়ান জিউইশ কাউন্সিলের একটি পোস্ট শেয়ার করেন, যেখানে চানুকাহ উদযাপনের সময় সংঘটিত হামলায় নিহত ও আহতদের কথা উল্লেখ করা হয়। পরে আরেকটি পোস্টে তিনি জানান, ভোরে ঘুম থেকে উঠে তিনি পুরো বন্ডাই ও ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য প্রার্থনা করেছেন এবং ঘৃণাজনিত অপরাধের নিন্দা জানান। মানবাধিকার ইস্যুতে খাজা এর আগেও অবস্থান নিয়েছেন। ২০২৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তার জুতায় ‘সব জীবন সমান’ ও ‘স্বাধীনতা মানবাধিকার’—এমন বার্তা লেখার উদ্যোগ আলোচনার জন্ম দেয়। তবে আইসিসি এটিকে তাদের নিয়মের পরিপন্থী বলে জানিয়ে বার্তাগুলো সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেয়।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানায়, তারা আইসিসির নিয়মকে সমর্থন করে এবং খাজার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। একই সঙ্গে মাঠের বাইরে ব্যক্তিগত মত প্রকাশের অধিকারকেও তারা সম্মান করে বলে জানানো হয়।

 

কিউএনবি/আয়শা/২২ ডিসেম্বর ২০২৫,/রাত ৯:১২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit