সবুজে ঘেরা ১০৮ হেক্টর জমির ওপর নির্মিত স্মৃতিসৌধে সৌন্দর্যবর্ধনে পুরো চত্বরে ফুল দিয়ে সাজানো, রং–তুলির কাজ, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, আলোকসজ্জা, লেক সংস্কারসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বেদিসংলগ্ন সিঁড়িগুলো। এই কাজে গণপূর্ত বিভাগের শতাধিক কর্মী প্রায় এক মাস ধরে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে নতুন রূপে সাজিয়ে তুলেছেন। এদিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদন নির্বিঘ্ন করতে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা।
বুধবার দুপুরে স্মৃতিসৌধে ঘুরে দেখা যায়, প্রধান ফটক ও দ্বিতীয় ফটকের সামনে সড়কের ডিভাইডারের রং করা শেষ। স্মৃতিসৌধের ভেতরে বিভিন্ন রং এর আলোকসজ্জা বাতি লাগানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।ল্যাম্পপোস্টের লাইট গুলোটেস্ট করার জন্য জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। এছাড়াও ফুল গাছসহ শোভাবর্ধক গাছের নতুন টপ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে সৌধ প্রাঙ্গন। আরও দেখা যায়, স্মৃতিসৌধের ৮৪ একর জায়গার বিভিন্ন স্থাপনায় পাইপের পানি দিয়ে পরিষ্কার ও সৌধ এলাকার চারপাশে কয়েকশত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনে কাজ সম্পূর্ণ করেছেন টেকনিশিয়ানরা। এছাড়াও ইতিমধ্যেই স্মৃতিসৌধ এলাকার সামনের মহাসড়কের বেশিরভাগ ফুটপাতগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে।
রংমিস্ত্রী কন্ট্রাকটর জলিল বলেন, আমরা ১০/১৫ জন রংমিস্ত্রি মাসের শুরু থেকে কাজ শুরু করেছি। এখন কাজ শেষ। রাজমিস্ত্রি কালু মিয়া বলেন, আমরা ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই কন্টাকটারের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন বিভিন্ন স্থাপনার রিপিয়ারিং এর কাজ করেছি। এছাড়াও মাটিকাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেকশনে প্রায় দেড়শো থেকে দুইশত লোক কাজ করেছে নিয়মিত। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সরব উপস্থিত দেখা গেছে।
গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার খান আনু বলেন, বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে এ মাসের শুরু থেকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করে পরিপাটি রাখা হয়েছে। ফুল দিয়ে সাজানো, লেক সংস্কার, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সব কাজ শেষ। এখন শুধু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। এছাড়াও এখন থেকেই বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছেন।
ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন,“মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষ আসবেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। আমিনবাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মহাসড়কে নির্বিঘ্ন যান চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে চার হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য দায়িত্বে থাকবেন। নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন এবং ফ্যাস্টিটরা যেন স্মৃতিসৌধে আসতে না পারেন সে ব্যাপারে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এমুহূর্তে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোন শঙ্কা নেই।”