আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহর প্রভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক বন্যা ও ভূমিধসে দেড় শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৯১ জন। দেশব্যাপী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, ৭৮ হাজারের বেশি মানুষকে প্রায় ৮০০টি ত্রাণকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বন্যায় ২০ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ, নৌবাহিনী ও সেনা সদস্যরা খাবার বিতরণ করছেন। ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা চলাচলের উপযোগী করে আটকে পড়া পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে।
ডিএমসির মুখপাত্র প্রদীপ কডিপিল্লি বলেছেন, বন্যায় সাময়িকভাবে বাস্তুচ্যুত হওয়া আরও ৭ লাখ ৯৮ হাজার মানুষের সাহায্য প্রয়োজন। বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহ গত বুধবার স্থলভাগে আঘাত হানলে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়। শনিবার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। কর্তৃপক্ষ রাজধানী কলম্বোর মধ্য দিয়ে ভারত মহাসাগরে প্রবাহিত কেলানি নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করে।
আশ্রয়কেন্দ্রে আসা এক নারী মল্লিকা কুমারী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তিনি ও তার ৫৫৪ জন প্রতিবেশী কলম্বো থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মালওয়ানায় কেলানি নদীর তীরে বাস করেন। গত শুক্রবার তার বাড়িতে খুব দ্রুত পানি ছাদ পর্যন্ত উঠে যায়। তিনি তার তিন সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে রাস্তার পাশে রাত কাটিয়েছেন।
মল্লিকা বলেন, ‘আমি প্রথম টিভিতে বন্যার সতর্কতার কথা শুনেছিলাম, কিন্তু ভাবতে পারিনি এতো দ্রুত নদীর পানি ফুলে ফেঁপে উঠবে। বাড়ি থেকে আমরা কোনোকিছু না নিয়েই ছুটে বেরিয়ে এসেছি।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন জানান, তার পরিবার পানির মধ্যে আটকে পড়েছিলেন। পরে নৌবাহিনী সদস্যরা রশি ব্যবহার করে বন্যার পানি পার করিয়ে একটি বাড়ির ছাদে উঠতে সাহায্য করেছিলেন।
এদিকে, দেশটির আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহেই আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে, যা ইতোমধ্যেই ডুবে যাওয়া অঞ্চলে আরও বন্যার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
সূত্র: রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান
কিউএনবি/অনিমা/৩০ নভেম্বর ২০২৫,/দুপুর ১২:৪৪