বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন

জাপান থেকে যা নিয়ে গেলেন ট্রাম্প

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির প্রবর্তক ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাপান সফরেও এই নীতিই ছিল মূল প্রাধান্যে। এই সফরে জাপান কী পেল তার চেয়ে বেশি আলোচনার বিষয় হলো—জাপান ট্রাম্পকে কতটুকু দিয়ে শান্ত করল।

জাপান–আমেরিকা সম্পর্ক ঐতিহাসিক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকান বোমার আঘাতে জাপান ক্ষতবিক্ষত হলেও যুদ্ধোত্তর সময়ে দেশটি অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমেরিকার সর্বোচ্চ সমর্থন পেয়েছে। জাপানের নিজস্ব সামরিক বাহিনী নেই; তাই দেশটির মানুষ, মাটি, জল, আকাশ ও প্রযুক্তি রক্ষায় তারা পুরোপুরি আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল। ফলে জাপান–আমেরিকা সম্পর্ককে কেবল শুল্ক বা বাণিজ্য দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় না। যে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর জাপানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়ে থাকে। তবে ট্রাম্পের এই সফরকে কেন্দ্র করে জাপানকে ছিল কিছুটা বেশি সতর্ক। কারণ, ‘পাগলাটে’ স্বভাবের ট্রাম্প দর কষাকষিতে বিশ্বাসী নন—নিজের দাবি আদায়ে কখন কী বলেন বা করেন, তা অনুমান করা কঠিন।

জাপানের নবনির্বাচিত নারী প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি সানায়ে ট্রাম্পকে কীভাবে মোকাবিলা করবেন, তা নিয়ে জাপানিদের মধ্যে ছিল ব্যাপক কৌতূহল। দুই নেতার মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের জানার সুযোগ নেই। তবে বৈঠক শেষে দুজনকেই প্রফুল্ল দেখা গেছে, আর ট্রাম্প তার পূর্বনির্ধারিত সূচিতেও কিছু পরিবর্তন আনেন। যেমন—উত্তর কোরিয়া কর্তৃক অপহৃত জাপানি নাগরিকদের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার কথা না থাকলেও শেষ পর্যন্ত দুই নেতা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যা জাপানি গণমাধ্যম তাকাইচির সাফল্য হিসেবে দেখছে।

ট্রাম্পকে খুশি করতে দুপুরের খাবারের মেনুতেও রাখা হয়েছিল জাপানি স্টাইলে প্রস্তুতকৃত আমেরিকান বিফ। বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই ছিলেন সন্তুষ্ট। ট্রাম্প প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে তার বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে তাকাইচিকে আবের যোগ্য উত্তরসূরি বলে প্রশংসা করেন।

ট্রাম্প জাপান থেকে যা নিয়ে গেলেন

১. ৫৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। টয়োটা ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে তারা আমেরিকায় তৈরি টয়োটার গাড়ি জাপানের বাজারে বাজারজাত করার চিন্তা করছে। অন্যান্য বিনিয়োগকারীরাও হিসাব কষছে—কোন খাতে আমেরিকায় বিনিয়োগ করলে জাপানের অর্থনীতিতে কম প্রভাব পড়বে।

২. আগামী বছরের মার্চ থেকে জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়, যার পুরোটাই যাবে আমেরিকার পকেটে।

এই সফর থেকে জাপান কতটুকু লাভবান হলো তার চেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—জাপানি পণ্যের ওপর আমেরিকার বাড়তি শুল্ক কতটা কমানো সম্ভব হলো।

তবে এসব মারপ্যাঁচ বা টেনশন জাপানি নাগরিকদের মধ্যে নেই। তারা বিশ্বাস করে—যাদের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা জাপানের স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। আর নাগরিকেরা ব্যস্ত নিজেদের কাজ নিয়ে।

সারাদিন অফিসে অনেকের সঙ্গে কথা হলেও কাউকেই ট্রাম্পের জাপান সফর নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়নি। দিনশেষে প্রতিটি জাপানি জানে—জাপান–আমেরিকা সম্পর্ক অনেক দৃঢ় এবং এই বন্ধন অটুট রাখতে হবে যে কোনো মূল্যে।

এশিয়ায় আমেরিকার প্রভাব বজায় রাখতে যেমন জাপান অপরিহার্য, তেমনি জাপানের সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে আমেরিকার প্রয়োজনও অনস্বীকার্য।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৯ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১২:১৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit