ডেস্ক নিউজ : ব্যাংকে টাকা রাখলেই এখন আর সবাইকে আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, হিসাবের স্থিতি তিন লাখ টাকার বেশি হলে তবেই শুল্ক কাটা হবে। আগে এই সীমা ছিল এক লাখ টাকা। অর্থাৎ, এবার কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন সাধারণ ব্যাংক গ্রাহকরা। গত জুনে চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় এই পরিবর্তন আনা হয়।
আবগারি শুল্ক কী
আবগারি শুল্ক হলো একধরনের পরোক্ষ কর। যা সরকার নির্দিষ্ট কিছু পণ্য, সেবা বা আর্থিক কার্যক্রমের ওপর ধার্য করে। যেমন ব্যাংকে টাকা রাখা, মুঠোফোনে কথা বলা, সিগারেট কেনা ইত্যাদি। এ ধরনের শুল্ক কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আয় ও মুনাফার ওপর বসে না। কোনো কার্যকলাপ বা সুবিধা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বসে।
কোনো গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে বছরে একবার হলেও তিন লাখ টাকা থাকলে আবগারি শুল্ক দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, এই আবগারি শুল্ক বসে হিসাবের স্থিতির ওপর।
কত টাকা থাকলে কত শুল্ক
আপনার হিসাবে যদি বছরের যে কোনো সময় তিন লাখ টাকা পর্যন্ত থাকে। তাহলে কোনো আবগারি শুল্ক কাটা হবে না। তিন লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা; ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা; ১০ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৩ হাজার টাকা; ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ৫ হাজার টাকা; এক কোটি টাকা ১ টাকা থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা; ২ কোটি ১ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি ৫০ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হবে।
কীভাবে কাটে
প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কোনো ব্যাংক হিসাবে আমানত বা স্থিতির পরিমাণ যদি একবার তিন লাখ টাকা বা তার ওপরের স্তরগুলোর সীমা অন্তত একবার স্পর্শ করে, তাহলে নির্দিষ্ট হারে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। একাধিকবার স্পর্শ করলেও একবারই আবগারি শুল্ক কাটা হয়।
একজন গ্রাহকের একাধিক ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক আরোপ হয়, এমন স্থিতি থাকলেও প্রতিটি হিসাব থেকে আবগারি শুল্ক কাটা হবে। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, আপনার যদি ৪ লাখ টাকা থাকে, তা যদি আপনার ৩ ব্যাংক হিসাবে লেনদেন হয়। তবে তিনটি ব্যাংক হিসাব থেকেই ১৫০ টাকা করে ৪৫০ টাকা কাটা হবে। সাধারণত ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এই অর্থ টাকা হয়। কোনো ক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেও কাটা হয়।
কোন হিসাব থেকে কাটা হয়
মোটাদাগে সব ধরনের হিসাব থেকেই আবগারি শুল্ক কাটা হয়। যেমন সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, এফডিআর, ডিপোজিট পেনশন স্কিম (ডিপিএস), বেতনভিত্তিক হিসাব ইত্যাদি।
কেন আবগারি শুল্ক
আবগারি শুল্ক বসানোর বেশ কিছু কারণ আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই আবগারি শুল্ক আদায় করে। তবে এনবিআরের পক্ষে ব্যাংকগুলো হিসাব থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবগারি শুল্ক কেটে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। আবগারি শুল্ক কাটার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো রাজস্ব সংগ্রহের উৎস, উচ্চ আয়ের করদাতাদের করজালে আনা; ব্যাংক হিসাবে স্বচ্ছতা; আর্থিক শৃঙ্খলা; প্রশাসনিক সুবিধা বা করদাতার সুবিধা।
কিউএনবি/আয়শা/২৩ অক্টোবর ২০২৫,/বিকাল ৩:৩০