জসীম উদ্দিন জয়নাল,পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি : খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালায় মারমা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জ্বালাও-পোড়াও, সংঘাত, সহিংসতা, সরকারী কাজে বাঁধা প্রদান ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, গুইমারা হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ বাদী মামলা দায়ের করে।
খাগড়াছড়ির গুইমারার রামসু বাজার সহিংসতায় হত্যাকান্ড ও সরকারী কাজে বাঁধা প্রদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুইমারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, মামলা অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ভাঙচুর, দাঙ্গা সৃষ্টি ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বুধবার দুপুরে ৬-৭শ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা।
গুইমারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, গুইমারার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনো ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল অব্যাহত রয়েছে।
আট দফা দাবি পূরণের আশ্বাস ও দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত অবরোধ স্থগিতের ঘোষণা করে জুম্ম ছাত্র-জনতা। অপরদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত হলে ধাপে ধাপে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।
২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায় মারমা জাতিগোষ্ঠীর এক কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর থেকেই বিক্ষোভ ও উত্তেজনা চলছিল পার্বত্য এ জেলায়। যদিও পরবর্তী মেডিকেল পরীক্ষায় কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের আলামত পায়নি তিন সদস্যের চিকিৎসক দল।
সেনাবাহিনীর সহায়তায় এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু বাকিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে জেলায় আধাবেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’।
অবরোধে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এমন উত্তেজনার মধ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর গুইমারায় ১৪৪ ধারা ভেঙে সহিংসতা হয়, সেখানে গুলিতে নিহত হন অন্তত তিনজন। গুইমারায় সংঘটিত ঘটনার তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে।
কিউএনবি/আয়শা/০২ অক্টোবর ২০২৫,/বিকাল ৫:২৮