আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আল জাজিরা’র তথ্যানুসারে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে এখন পর্যন্ত স্বীকৃতি দিয়েছে ১৫০টিরও বেশি দেশ। অধিকৃত পশ্চিম তীরের হেবরন এবং এর আশপাশের কয়েকজন ফিলিস্তিনির সঙ্গে সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছে সংবাদমাধ্যমটি এবং তাদের কাছে জানতে চেয়েছে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীকে কীভাবে দেখছেন তারা।
হেবরনের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত দুরার পাহাড়ে আল জাজিরার সাথে কথা বলেছেন ইসরাইল ও ইহুদিবাদ বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক ৫৯ বছর বয়সি আদেল শাদিদ।
শাদিদের মতে, এই স্বীকৃতি কেবল ফিলিস্তিনি জনগণের রাষ্ট্রের অধিকারের প্রতি দেশগুলোর দৃঢ় বিশ্বাসকেই প্রতিফলিত করে না বরং ইসরাইল সম্পর্কে পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে নেতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়টিও সামনে এনেছে। তবে ইসরাইল বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনা ধ্বংস করার জন্য কাজ করে আসছে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকেও ভাঙার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,
যদি সমগ্র বিশ্ব ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়, তবুও তাদের নিজ দেশ, ভূমি এবং ভৌগলিক অবস্থান না থাকলে রাষ্ট্রটি কেবল কাগজ-কলমেই থেকে যাবে। এই কারণেই ফিলিস্তিনিদের জমি দখল এবং অবৈধ বসতি নির্মাণের মতো কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে ইসরাইল।
শাদিদ তার আলোচনার শেষ পর্যায়ে বলেন, সাম্প্রতিক স্বীকৃতির ফলাফল ফিলিস্তিনি জনগণ শিগগিরই দেখতে পাবে না কারণ ইসরাইল ভূমি দখল, হত্যা এবং নিপীড়নমূলক নীতি অব্যাহত রেখেছে এবং ফিলিস্তিনিদের কাছে একটি বার্তা পাঠাচ্ছে: ‘এই স্বীকৃতি তোমাদের কী এনে দিয়েছে?’যদিও, ক্ষমতার সীমা আছে এবং ইসরাইল যা করছে তা বেশি দিন স্থায়ী হবে না বলেই বিশ্বাস এই বিশেষজ্ঞের।
হেবরনের একটি বাজারে সারাদিন কফি বিক্রি করেন এবং মানুষের সাথে কথা বলেন ৫০ বছর বয়সি রায়েদ আল-সাইদ। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, মাহমুদ আব্বাসের প্রচেষ্টার কারণে আরও অনেক দেশ জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সাঈদ মনে করেন, ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ পদক্ষেপ হবে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে এবং তারা সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করছে।
রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতিতে অসংখ্য সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছেন সাংবিধানিক এবং আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ৩১ বছর বয়সি মারাম নাসার। তার বিশ্বাস, সাম্প্রতিক এসব স্বীকৃতি কোনো তাড়াহুড়ো করে নেয়া সিদ্ধান্ত নয় বরং গাজা যে বিপর্যয় এবং দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হচ্ছে তার আলোকে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফলাফল।
আর কূটনৈতিকভাবে, এই স্বীকৃতির ফলে ফিলিস্তিন আরও দূতাবাস স্থাপন এবং তাদের কূটনৈতিক যোগাযোগ আরও প্রসারিত করতে পারবে বলে জানান মারাম নাসার।
কিউএনবি/আয়শা/২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /রাত ১১:৩৮