বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৪১ Time View

ডেস্ক নিউজ : দ্রোহ, প্রেম ও সাম্যের কালজয়ী কণ্ঠস্বর—জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বিদ্রোহী কবি হিসেবে খ্যাত নজরুল ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক। মৃত্যুর এতো বছর পরেও শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিবাদী কন্ঠস্বর হয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন কবি নজরুল।

১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট (১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) বাংলা সাহিত্য ও সংগীতের এই মহাপ্রতিভা ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে।

১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া নজরুল ছিলেন বাঙালির চিরন্তন ‘দুখু মিয়া’। শৈশব থেকেই দারিদ্র্য আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠা এই প্রতিভা মাত্র ২৩ বছরের সাহিত্যজীবনে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য অমর সৃষ্টি। তার কবিতা, গান ও গদ্যে দোল খেয়েছে স্বাধীনতার স্পর্ধা, প্রেমের আবেগ ও সাম্যের আহ্বান।

তিনি লিখেছিলেন—
“মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী, আর হাতে রণতূর্য।”
এই পঙ্‌ক্তিই যেন ধারণ করে তার সৃজন ও চিন্তার বিস্তার।

নজরুল সবসময়ই শোষিতের পক্ষে, যুগে যুগে নতুন প্রজন্মের মাঝে জ্বালিয়ে রেখেছেন বিদ্রোহের স্ফুলিঙ্গ।

কবি নজরুল ইনিস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, রণাঙ্গনে কবির গান শুনে মুক্তিযোদ্ধারা এতোটাই অনুপ্রাণিত হতেন যে রেডিওতে যখন গান বাজতো, সেই মুহূর্তে রেডিওর সামনে দাঁড়িয়ে স্যালুট করতেন। এরপর ২৪’এর গণঅভ্যুত্থানে নজরুল যেন নতুন রূপে ফিরে এলেন।

যদিও জাতীয় কবির সরকারি গেজেট প্রকাশে লেগে গেল ৫৪টি বছর, তবুও নজরুলকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে কবি নজরুল ইনিস্টিটিউট। খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে নজরুলের হারিয়ে যাওয়া গানের খাতা।

লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, কুইটিসেন্স অব নজরুল- কবির পুরো সাহিত্য সমগ্র থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে একটি বই তৈরি করা হয়েছে। বইটি এক হাজার পৃষ্ঠার বেশি। বইটি বের হলে বিশ্বের অন্যান্য ভাষায় নজরুলকে অনুবাদ করা যাবে বলে আশা করছি।

নজরুল তার সৃষ্টিতেই উজ্জ্বল মহাতারকা, তবুও তাকে চর্চায় ও লালনে উৎসাহিত করতে সরকারি উদ্যোগের বিকল্প নেই।

১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং ২১ ফেব্রুয়ারিতে একুশে পদক দেওয়া হয়।

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেশজুড়ে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আয়োজন করেছে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী নজরুল’ শীর্ষক আলোচনা সভা, হামদ-নাত ও দোয়া মাহফিল।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি। বুধবার বিকেল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করবেন বাংলা একাডেমির সচিব ড. মো. সেলিম রেজা।

নজরুলের মৌলচেতনা অদ্বৈতবাদী সমন্বয়ের শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক। এতে আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন- নজরুল গবেষক ড. সৈয়দা মোতাহেরা বানু এবং কবি ও প্রাবন্ধিক কাজী নাসির মামুন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করবেন আবৃত্তিশিল্পী টিটো মুন্সী। নজরুল গীতি পরিবেশন করবেন শিল্পী ফেরদৌস আরা, শহীদ কবির পলাশ ও তানভীর আলম সজীব।

বাংলার চেতনায় চিরজাগরুক এই কবিকে স্মরণ করে বাঙালি আজও উচ্চারণ করে—
“যতদিন রবে পদ্মা, যমুনা, গৌরী, মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার, কাজী নজরুল ইসলাম!”

কিউএনবি/অনিমা/২৭ আগস্ট ২০২৫/সকাল ১১:০০

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit