আলমগীর মানিক,রাঙামাটি : আদিবাসী স্বীকৃতির দাবির অন্তরালে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে পার্বত্য রাঙামাটি শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র নেতাকর্মীরা। রোববার (১০ আগষ্ট) দুপুরে রাঙামাটি শহরের বনরুপা সিএনজি স্টেশন চত্বরে এই কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। পিসিসিপি রাঙামাটি পৌর সভাপতি পারভেজ মোশাররফ হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক হাবীব আল মাহমুদ।কর্মসূচীতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পিসিসিপি ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী রিয়াজুল হাসান, বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শাখাওয়াত হোসেন, পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা যুগ্ন সম্পাদক রবিউল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী, পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
কর্মসূচীতে বক্তারা বলেন, আদিবাসী স্বীকৃতি নিতে উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা এত মরিয়া হয়ে ওঠার কারণ কি? এর কারণ হলো, পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/উপজাতিরা আদিবাসী নয়, তারা বহিরাগত দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়া আশ্রিত জাতি। ঐতিহাসিক তথ্য মতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/উপজাতিরা বার্মা, ভারতের তিব্বত, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মঙ্গোলীয় এবং চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ১৭৩০ সাল নাগাদ যুদ্ধে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশের ভূখন্ডে অস্থায়ীভাবে আগমণ করে।অনেক চাকমা ও মারমা পন্ডিত, লেখকগণ তাদের লেখা বিভিন্ন বইতে উল্লেখ করেছে, তারা আদিবাসী নয়, তারা পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে বিতাড়িত হয়ে এদেশে বসতি স্থাপন করেছে। তাদের অধিকাংশের আদি নিবাস বার্মা ও বার্মার চম্পকনগরে।” তারা যে এদেশের আদি বাসিন্দা নয়, এটা তারা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও অকপটে স্বীকার করেছে। বান্দরবানে (বোমাং রাজার সংলাপ)। তাছাড়াও বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই, তারা ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী/উপজাতি হিসেবে স্বীকৃত।
বক্তারা আরো বলেন, কাক যেমন ময়ূরের পেখম লাগালে ময়ূর হয়না, তেমনি এদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তথা উপজাতিরা কখনো আদিবাসী হয়না। আদিবাসী হতে হলে ভূমি সন্তান হতে হয়, এবং হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করতে হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, মায়ানমার ও চীন হতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অভিবাসী হিসেবে এসে বসতিস্থাপন করলে ভূমি সন্তান হওয়া যায় না। আর উপজাতি কোটায় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে প্যান্ট ট্রাই পড়ে নিজেদের আদিবাসী দাবি করা হাস্যকরও বটে। মূলত: আদিবাসী স্বীকৃতির নামে আলাদা রাষ্ট্র “জুম্মলেন্ড” প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কতিপয় উপজাতীয় ও দেশীয় কুচক্রী মহল গুলো।পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সি: যুগ্ন সম্পাদক হাবীব আল মাহমুদ বলেন, অনেকেই না বুঝে উপজাতিদের আদিবাসী বলেন, কিন্তু উপজাতি/পাহাড়ি/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আদিবাসী হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিলে দেশের সার্বভৌমত্বের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়বে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি বা উপজাতিরা নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালিরাই পার্বত্য চট্টগ্রামের আদি বাসিন্দা। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি কর্তৃক আদিবাসী হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক রাষ্ট্রে পরিণত করার সূদর প্রসারী ষড়যন্ত্র বলেও মন্তব্য করেছেন বক্তারা।
কিউএনবি/অনিমা/১০ আগস্ট ২০২৫/বিকাল ৪:৩০