আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বন্ধুত্ব এখন অতীত। শুল্ক আর ভূরাজনীতি—এটাই বর্তমান। একসময় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করতেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সম্পর্ক আজ কেবল কূটনৈতিক ইতিহাস। আর এই স্মৃতির সঙ্গে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফর।
চলতি সপ্তাহেই ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন মুনির। সফরে মার্কিন সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে একাধিক বৈঠক ও কৌশলগত আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। ইসলামাবাদ বলছে, এটি নিছক ‘সৌজন্য সফর’, তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ভূরাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক গভীর।
জুলাইয়ের শেষদিকে পাকিস্তানে সফর করেছিলেন সেন্টকম প্রধান জেনারেল কুরিলা। তাকে দেওয়া হয়েছিল ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’—দেশটির মর্যাদাপূর্ণ সামরিক সম্মান। আর এবার তার জবাব দিতে যেন আসছেন মুনির। এর আগে জুনে যুক্তরাষ্ট্রে এসে হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিয়েছিলেন তিনি, যেখানে তাঁকে স্বাগত জানান স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প। একজন সেনাপ্রধানের এমন সম্মানকে ‘অভূতপূর্ব’ বলছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল।
সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান, চীন এবং ভারতকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশলে পাকিস্তানকে ব্যবহার করতেই এই পুনঃসদ্বীপ সম্পর্ক—এমনটাই বিশ্লেষকদের মত। সেন্টকমের ভাষায়, পাকিস্তান এখনো ‘সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে অমূল্য মিত্র’।
এদিকে দিল্লির অস্বস্তি বাড়ছে বৈ কমছে না। ট্রাম্পের ঘোষণায় ভারতের পণ্যে শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। বন্ধুত্বের সুর মুছে এখন বাণিজ্য ও নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি পাকিস্তানের দিকে—এই বার্তা বেশ স্পষ্ট।
অন্যদিকে পাকিস্তানে গুঞ্জন, মুনির নাকি প্রেসিডেন্ট হতে পারেন! যদিও সেনাবাহিনী সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে, তবুও সেনাপ্রধানের একের পর এক আন্তর্জাতিক সফর এবং সম্মানজনক উপস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা আরও বড় হতে চলেছে।
সব মিলিয়ে, আসিম মুনিরের এই সফর শুধু ‘সৌজন্য’ নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্যে বড় রদবদলের পূর্বাভাস। ভারতের জন্য যা হতে পারে নতুন উদ্বেগের কারণ।
কিউএনবি/অনিমা/০৭ অগাস্ট ২০২৫/বিকাল ৩:০২