নাহিদ বলেন, ‘গত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের মানুষকে নানাভাবে বিভাজিত করে রাখা হয়েছিল, যার বড় শিকার হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। পার্বত্য চট্টগ্রামে নানা অশান্তি নানা বিভাজন জিইয়ে রেখে অন্য একটি পক্ষ বারবার সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে, আমরা আর এই তৃতীয় পক্ষকে সুবিধা নিতে দিব না।আমাদের মধ্যে, সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে যদি কোন সমস্যা থাকে, আমরা নিজেরাই সমাধান করব, অন্যকোন পক্ষকে সুযোগ নিতে দিব না, এজন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২০ জুলাই) রাঙামাটিতে পদযাত্রা শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।দুপুরে একটার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীরা রাঙামাটি পৌঁছে শিল্পকলা একাডেমি থেকে পদযাত্রা শুরু করে বনরূপা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সামান্তা শারমীন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ্। এসময় উপস্থিত ছিলেন নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারি, রূপাইয়া শ্রেষ্ঠা তংচঙ্গ্যাসহ নাগরিক পার্টি বিভিন্নস্তরের নেতা-কর্মীরা।সমাবেশে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আপনা আপনাদের সহযোদ্ধা। আমরা যদি কোন ভুল করি তাহলে সেই ভুল সংশোধনের মানসিকতা আমাদের সবসময় আছে। কিছুদিন পূর্বে আমারও বান্দরবান নিয়ে অনিচ্ছাকৃত কথা বলেছিলাম। পরক্ষণে আমার মনে হয়েছিল এই কথাটি আমার বলা উচিত হয়নি। আমি এই বিষয়ে আপনাদের সামনে দুঃখ প্রকাশ করতে চাই।
রাষ্ট্রকাঠোমা ও আলমাতন্ত্রে কেউ অপরাধ করলে তাকেই উত্তরবঙ্গে না পার্বত্য এলাকায় বদলী করা হয়। এই সব অঞ্চলের মানুষ তো ভিন্ন না তাহলে কেন ওই দুর্নীতিবাজদের পানিশমেন্ট পোস্টিং দেয়া হয়। এইসব পানিশমেন্ট পোস্টিঙয়ের মাধ্যমে কোন একজন অসৎ অফিসারের সাজা হতে পারে না।তিনি বলেন, আমাদের যদি কোন ভুল করি তাহলে সেই ভুল সংশোধন করে নিবো। রাজনীতিতে কথার সঙ্গে কথার লড়াই হতে পারে। তবে কথার প্রতিবাদে মঞ্চে আগুন দেয়া, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা রাজনৈতিক চরিত্র হতে পারে না। এটি ফ্যাসিবাদী চরিত্র। প্রবীণ রাজনীতিবিদরা কথায় কথায় আমাদের সাগরে ভাসিয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে আমাদের শেখার কিছুই নেই। আগামীর বাংলাদেশে আমরা সম্প্রতির রাজনীতি চাই। আমরা
সমাবেশ শেষে দ্রুতই সভাস্থল ত্যাগ করেন নাগরিক কমিটির নেতারা।এনসিপি নেতা নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারির রাঙামাটি আগমনের কারণে জেলা ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে যাওয়ার সময় কাঠালতলী মোড়ে পুলিশ আটকে দেয়। এসময় সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে নেতা-কর্মীরা। তারা এনসিপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।অন্যদিকে শহরের বনরুপায় এনসিপির সমাবেশ শুরু আগেই শহরের সকল যানবাহন বন্ধ করা হয়। এসময় এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে গাড়ি চলাচল না করায় ভোগান্তিতে পড়ে। শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকায় পুলিশ তাদের দ্রুত সমাবেশ স্থল থেকে সরিয়ে দেয়।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. সাব্বির আহম্মেদ বলেন, এভাবে সমাবেশর জন্য সড়ক বন্ধ করে রাখার কারো অধিকার নেই। সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থী এবং পরীক্ষার্থীরা চলাচল করতে পারছে না। তিনি আরও বলেন, এনসিপি নেতা নাসিরউদ্দিনকে তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরের প্রতিটি মোড়ে বড়তি পুলিশ বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।