শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০১:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
ঢাবি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে সংস্কারকৃত মসজিদ ও ডিজিটাল সাইকেল গ্যারেজ উদ্বোধন ধনশ্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন চাহাল নরসিংদীতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল উদ্ধার বাফুফের অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ক্যাম্পে প্রবাসী ফুটবলার একজন মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহীদের সতর্ক করলো হাইকমিশন মুখের দুর্গন্ধ এড়াতে যা করবেন ভারতের চেয়ে কম শুল্ক আরোপ, রপ্তানিতে সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ ৫ আগস্টের মধ্যে শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে: জোনায়েদ সাকি ইনস্টাতে সালমানের রহস্যময় পোস্ট ঘিরে নতুন জল্পনা দাপুটে জয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনালে যুবারা

কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫
  • ৪১ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের ১২টিরও বেশি দেশে মার্কিন সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি ওই অঞ্চলের জলসীমায়ও যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ মোতায়েন করা আছে।

বর্তমানে এসব ঘাঁটিতে সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ আছেন। তাছাড়া রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান এবং যুদ্ধজাহাজ। এদিকে, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালানোর পর এসব সামরিক ঘাঁটিগুলি তাদের (ইরানের) সম্ভাব্য ‘টার্গেট’ (লক্ষ্যবস্তু) হয়ে দাঁড়ায়। ইরান আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল যে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য তারা ‘সমস্ত বিকল্প খোলা রাখছে।’

ইরান ইতোমধ্যে কাতারের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি কোনো নতুন বিষয় নয়। ইরাকে যুদ্ধের সময় ওই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময়েও মার্কিন সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

গত বছর ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে ইয়েমেনের হুথিদের ক্রমাগত হামলার পর প্রতিক্রিয়া স্বরূপ, ওই অঞ্চলে মার্কিন সেনা উপস্থিতি জোরদার করা হয়। তবে সম্প্রতি তেহরানের পক্ষ থেকে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় মার্কিন কর্মীদের সুরক্ষার জন্য আঞ্চলিক ঘাঁটিগুলো থেকে সামরিক বাহিনীকে স্বেচ্ছায় প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র।

সামগ্রিকভাবে, এই অঞ্চলে কমপক্ষে ১৯টি স্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটিকে বহু আঞ্চলিক বিশেষজ্ঞই স্থায়ী ঘাঁটি বলে মনে করেন। সেগুলো সৌদি আরব, বাহরাইন, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, ইসরাইল, জর্ডান, কুয়েত, কাতার এবং সিরিয়ায় অবস্থিত।

স্বতন্ত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস’-এর মতে, মার্কিন সামরিক বাহিনী জিবুতি এবং তুরস্কের বড় ঘাঁটিগুলোও ব্যবহার করে, যা অন্যান্য আঞ্চলিক কমান্ডের অংশ হলেও প্রায়শই মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন অভিযানের সময় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

এই প্রতিবেদনে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান প্রধান মার্কিন ঘাঁটিগুলোর বিষয়ে উল্লেখযোগ্য তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই সমস্ত ঘাঁটিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)’ বা মার্কিন সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডের অধীনে।

কাতার

কাতারের আল উদেইদ ঘাঁটি পুরো অঞ্চলের বৃহত্তম মার্কিন ঘাঁটি। এখানে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এবং এর বিমান বাহিনীর ফরওয়ার্ড হেডকোয়ার্টার রয়েছে। ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অতীত অভিযানের সময় আল উদেইদ কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে।

মার্কিন বিমান বাহিনীর ৩৭৯তম এয়ার এক্সপিডিশনারি উইং-ও এই ঘাঁটিতে মোতায়েন রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মে মাসে মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় এই ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।

স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী, সম্প্রতি ওয়াশিংটন আল উদেইদের রানওয়ে থেকে কয়েক ডজন বিমান প্রত্যাহার করে নিয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে মার্কিন হস্তক্ষেপের পর পালটা প্রতিক্রিয়া হিসাবে ইরানের সম্ভাব্য হামলা থেকে রক্ষা করার জন্যই সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

গত ৫ জুন ‘প্ল্যানেট ল্যাবস’-এর প্রকাশিত ছবিতে ‘সি-১৩০ হারকিউলিস ট্রান্সপোর্ট’ (একটি বিশেষ সামরিক পরিবহন বিমান) এবং ‘রেকোনাইসেন্স প্লেন’ (বিশেষ সামরিক বিমান যা আকাশপথে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা হয়)-সহ ৪০টি বিমান দেখা গিয়েছিল।

এর ঠিক দুই সপ্তাহ পরে সেখানে মাত্র তিনটি বিমান দেখা গিয়েছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

প্রসঙ্গত, কাতারে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।

বাহরাইন

বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর রয়েছে, যা পারস্য উপসাগর, লোহিত সাগর, আরব সাগর এবং কেনিয়ার দক্ষিণে পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে মার্কিন নৌবাহিনীর দায়িত্বে রয়েছে।

এই ফ্যাসিলিটি ‘নাভাল সাপোর্ট অ্যাক্টিভিটি বাহরাইন’ নামে পরিচিত। এখানে মার্কিন নৌবাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডের সদর দপ্তরও রয়েছে। প্রায় ৯ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে এই ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রে।

মার্কিন নৌবাহিনীর বেশ কয়েকটি জাহাজ বাহরাইনে রয়েছে। এই অঞ্চলের গভীর জলে ‘ইউএসএস কার্ল ভিনসন’-এর মতো ‘সুপারক্যারিয়ার’ জাহাজ এবং অন্যান্য বিমানবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারে। এর মধ্যে চারটি ‘মাইন ক্লিয়ারেন্স ভেসেল’ (মাইন বিধ্বংসী জাহাজ) এবং দু’টি লজিস্টিক সাপোর্ট জাহাজও রয়েছে।

বাহরাইনে মার্কিন কোস্টগার্ডের ছয়টি ‘র্যাপিড রেসপন্স বোট’সহ একাধিক জলযান রয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

কুয়েত

মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, তার মধ্যে কুয়েত অন্যতম।

এর মধ্যে রয়েছে ক্যাম্প আরিফজান, যেখানে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের হেডকোয়ার্টার রয়েছে। এটি মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর ‘অপারেশনাল’ এবং ‘লজিস্টিকাল হাব’ হিসাবে কাজ করে। বিভিন্ন অভিযানের সময় সরঞ্জাম সরবরাহ করার জন্য প্রচুর পরিমাণে উপাদান মজুদ রয়েছে এই ‘হা’-এ।

কুয়েতের আলী আল-সালেম বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮৬তম ‘এয়ার এক্সপিডিশনারি উইং’ রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি এই ঘাঁটিকে ‘ওই অঞ্চলে যৌথ ও জোট বাহিনীকে যুদ্ধ শক্তি মোতায়েনের কেন্দ্রীয় বিমান ঘাঁটি এবং প্রবেশদ্বার’ হিসাবে উল্লেখ করেছে।

এছাড়া কুয়েতে ‘এমকিউ-৯ রিপার’সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনও রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ক্যাম্প আরিফজান ও আলী আল সালেম বিমান ঘাঁটি মিলিয়েই মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত

সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) আল ধাফরা বিমান ঘাঁটিতে একটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে। এটি একটি কৌশলগত ঘাঁটি যা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং কম্ব্যাট এয়ার অপারেশন (যুদ্ধ বিমান অভিযানে) সাহায্য করে।

এই ঘাঁটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮০ তম এয়ার এক্সপিডিশনারি উইং রয়েছে। এটি দশটি বিমান স্কোয়াড্রন নিয়ে গঠিত এমন এক বাহিনী যেখানে ‘এমকিউ -৯ রিপার্স’-এর মতো ড্রোনও আছে।

ইরাক

সাদ্দাম হোসেনের পতনের সময় ইরাকের ৫০০টিরও বেশি ঘাঁটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন ছিল।

তবে বর্তমানে দেশটিতে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে এবং ওয়াশিংটন তাদের ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করার জন্য বাগদাদ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

এটি ‘ইসলামিক স্টেট’ নামক গোষ্ঠীকে রুখতে আন্তর্জাতিক জোটের অংশ। এখানে মার্কিন সামরিক বাহিনী মূলত কুর্দিস্তানের দুটি বিমান ঘাঁটি- আল আসাদ এবং এরবিল থেকে নিজেদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এই ঘাঁটিগুলো এবং ওই দেশের অন্যান্য ছোটখাটো ঘাঁটিগুলো ইরানের-মিত্র গোষ্ঠীগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।

সিরিয়া

সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। এর সূত্রপাত হয়েছিল ২০১১ সালে ওই দেশে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধের সময় থেকে। পরবর্তীতে সিরিয়া ও ইরাকের উল্লেখযোগ্য অঞ্চল দখল করে ফেলে ওই গোষ্ঠী।

সিরিয়াজুড়ে বিভিন্ন ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর প্রায় দুই হাজার সদস্য রয়েছে যারা এই গোষ্ঠীটির পুনরুত্থান ঠেকাতে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে।

গত জুন মাসে ওয়াশিংটন ঘোষণা করে যে, ওই দেশে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত সামরিক ঘাঁটির সংখ্যা আট থেকে কমিয়ে একটিতে নামিয়ে আনবে এবং সিরিয়ার বিষয়ে তাদের নীতিতে পরিবর্তন আনবে ‘কারণ এগুলোর কোনোটিই কাজ করেনি।’

ট্রাম্প অপ্রত্যাশিতভাবে গত মে মাসে সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তার সরকার সিরিয়ার নতুন ‘ডি ফ্যাক্টো’ নেতা আহমেদ শারার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার বিষয়ে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। আহমেদ শারার নেতৃত্বে ২০২৪ সালের শেষের দিকে বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৪ জুন ২০২৫, /রাত ৮:৩৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit